দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৫ মে: বাংলাদেশে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সমন্বয়কারী আমিনুল ইসলাম (৫০) ও তার বিশ্বস্ত সহযোগী সাকিব বিন কামালকে (৩২) তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি। সোমবার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান শুনানি শেষে প্রত্যেককে তিন দিনের ওই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় এদিন তাদেরকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
বাংলাদেশে ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য তারা কাজ করছেন। আইএস প্রধান আবু বকর আল বাগদাদীকে খলিফা মেনে সারা বিশ্বে একটি অখন্ড ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠাই তাদের স্বপ্ন।বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ- জেএমবির পরীক্ষিত সদস্যদের সমন্বয় করে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএসের জন্য কর্মী সংগ্রহ করে পাঠানোই তাদের এই মুহূর্তের মিশন।
এছাড়াও বাংলাদেশে ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আইএসের উপযোগী ভূমি তৈরি করাও তাদের কাজ। এজন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের টার্গেট করে হত্যা এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সদস্য সন্দেহে রাজধানীতে আটক দুই ব্যক্তিকে নিয়ে সোমবার মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য দেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম। রোববার সকালে দুই আইএস কর্মী আটকের পর আজ বেলা সাড়ে ১১টায় এ ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।
ব্রিফিংয়ে মনিরুল ইসলাম জানান, আমিনুল ইসলাম উচ্চশিক্ষিত। মালয়েশিয়া থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে বাংলাদেশের একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে আইটি প্রধান হিসেব কাজ করছেন। তার সহযোগী সাকিব দেশের একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে এখন একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে শিক্ষকতা করছেন।এর মধ্যে তারা আইএসের জন্য ২০জন কর্মী সংগ্রহ করেছেন। এদের মধ্যে ১ জনকে গোয়েন্দা পুলিশ আটক করেছে। বাকি ১৯ জনকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মনিরুল ইসলাম জানান, আটক যুবকদের কাছ থেকে দু’টি মোবাইল ফোন সেট, ল্যাপটপ, মাওলানা কাশেম ওমরের লিখিত অনুবাদ ‘আদনাউ ও তাওহিদী ও গণতন্ত্র নামে একটি বই এবং সরকারকে উৎখাত করে খিলাফত প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত লিফলেট জব্দ করা হয়।তিনি আরো জানান, যারা আইএসে যুক্ত হচ্ছেন তারা প্রত্যেকেই স্বচ্ছল পরিবার থেকে আসা। প্রত্যেকেই আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত।মনিরুল ইসলাম বলেন, এদের সমন্বয়ক আমিনুল মূলত অনলাইনের মাধ্যমে আইএসের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইহুদি-নাসারাদের কব্জায় যাওয়া ইসলামি রাষ্ট্রগুলোকে পুনরুদ্ধার করে আইএস প্রধান আবু বকর আল বাগদাদীর নেতৃত্বে বিশ্বে একটি অখণ্ড খেলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তারা কাজ করছেন।’
ব্লগার হত্যা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের হুমকির পেছনে তাদের হাত আছে কি না জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে তারা কোনো কথা বলেননি। তবে আমরা খতিয়ে দেখছি ব্লগার হত্যাসহ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের হুমকির ঘটনায় তাদের সংশ্লিষ্টতা আছে কি না।তবে তাদের কাছ থেকে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে তাতে বেরিয়ে এসেছে বাংলাদেশে খিলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য অর্থ ও কর্মী সংগ্রহের পাশাপাশি বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের টার্গেট করে হত্যা করা এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা করা তাদের পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে।