লক্ষ্মীপুর ও মিরসরাইয়ে ঘূর্ণিঝড়ে দুই শতাধিক ঘরবাড়ী বিধ্বস্ত

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৪ মে:  লক্ষ্মীপুরে রবিবার ভোরে জেলার বিভিন্ন স্থানে ঘূর্ণিঝড়ে দুই শতাধিক ঘরবাড়ী বিধ্বস্থ হয়েছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বেশ কয়েকটি গ্রামের বিদ্যুত সংযোগ। এলাকাবাসী জানান, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চরশাহী ইউনিয়নের রামপুর, তিতারকান্দি, সৈয়দপুর পূর্ব সৈয়দপুর, ঝালিয়াকান্দি, ইটখোলা ও গোবিন্দপুরে হঠাৎ ঘুর্ণিঝড়ে দেড় শতাধিক কাঁচা ঘর বাড়ী তছনছ হয়ে যায়। এসময় বড় বড় গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে এবং ভেঙ্গে পড়ে এসব এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

ঝড়ের সময়ে কেউ চৌকির নিচে ঢুকে আবার কেউবা দৌড়ে গিয়ে জীবন রক্ষা করে। একইভাবে একই উপজেলার দত্তপাড়া, বাঁঙ্গাখা ইউনিয়নসহ জেলার বিভিন্নস্থানে আরো অন্তত ৫০ টি ঘর বাড়ী তছনছ হয়ে গেছে বলে স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে। চরশাহী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলজার মোহাম্মদ জানান, ঘুর্ণিঝড়ে আমার ইউনিয়নের ৬টি গ্রামে দেড় শতাধিক ঘরবাড়ী বিধ্বস্থ হয়েছে। গাছপালা বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে এসব গ্রামে বর্তমানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে এসব সাধারণ মানুষ। তিনি এসব পরিবারের জন্য সরকারি সহযোগিতার দাবী জানান।লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক এ কে এম টিপু সুলতান জানান, ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরীর কাজ চলছে, সরকারি ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে, মিরসরাই উপজেলায় টর্ণেডোয় বসতঘর বিধ্বস্ত হয়ে আহত ২। রবিবার (২৪ মে) ভোররাতে উপজেলার ১৩ নম্বর মায়ানী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব মায়ানী গ্রামের নেপাল চন্দ্র দাশের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। আহতরা হলো নেপাল চন্দ্র দাশ ও তার স্ত্রী অঞ্জলী বালা দাশ। ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেন মায়ানী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম গোলাম সরওয়ার। তিনি জানান, ‘৪ বছর পূর্বে নেপাল চন্দ্র দাশ পূর্ব মায়ানী গ্রামে ৩ কক্ষবিশিষ্ট বসতঘরসহ নতুন বাড়ি নির্মাণ এবং বাড়ির আশেপাশে বিভিন্ন প্রজাতির কাঠও ফলজ গাছ রোপন করেন। রোববার ভোররাতে আকস্মিক টর্ণেডোতে তার নবনির্মিত বসতঘর উড়ে গিয়ে পাশ্ববর্তী পুকুরে পড়ে যায় এবং ১৫ টি গাছ ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়। এসময় নেপালও তার স্ত্রী অঞ্জলী আহত হয়। তাদেরকে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।আহত নেপাল চন্দ্র দাশ জানান, ‘রোববার ভোররাতে কোনকিছু বুঝে উঠার পূর্বে হঠাৎ টর্ণেডোর ছোবলে ৩ কক্ষবিশিষ্ট বসতঘরটি এবং সস্ত্রীক বাড়ির পুকুরে গিয়ে পড়ি। এতে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আমরা মারাতœক আঘাত পাই এবং বসতঘরও বাড়িতে লাগানো ১৫ টি গাছ ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়। নবনির্মিত বসতঘর বিধ্বস্ত হয়ে প্রায় আড়াই লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।মায়ানী ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাহফুজ মিয়া মনা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।