full_1834735418_1431586352

দৈনিকবার্তা-গাজীপুর, ২৪ মে: এবার ট্রাকে এক নারীকে নেশাযুক্ত কোমল পানীয় (ফানটা) খাইয়ে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। চিকিৎসক দেখিয়ে বাসায় ফেরার পথে শনিবার রাতে ট্রাক চালক তাকে শারিরীক নির্যাতন ও ধর্ষন করেছে বলে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই নারী দাবি করছেন। তবে ওই হাসপাতালের চিকিৎসকরা প্রাথমিকভাবে শারিরীক নির্যাতনের আলামত পেলেও ধর্ষণের কোন আলামত পাননি বলে জানিয়েছেন। একইসাথে নেশাযুক্ত কোমল পানীয় (ফানটা) খেয়ে অসুস্থ্য স্বামীও একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ওই নারী জানান, ঢাকার খিলগাঁও এলাকায় ডাক্তার দেখিয়ে শনিবার রাতে তিনি বাসায় ফেরার উদ্দেশ্যে স্বামীকে নিয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু বাসে উঠতে না পেরে রাস্তার পাশেই দীর্ঘক্ষণ বসে ছিলেন। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে এক ট্রাক ড্রাইভার এসে তাদের সামনে দাঁড়ায় এবং তাদের গন্তব্যে পৌঁছে দেয়ার প্রস্তাব দিলে স্বামী-স্ত্রী ওই ট্রাকে উঠে চালকের পাশেই বসেন। পরে গরমের মধ্যে পথে ট্রাকের চালক আমাদের ‘ফানটা’ এনে খাওয়ায়। এর কিছু সময় পরই আমাদের ঘুম ঘুম (নেশা অবস্থা) ভাব দেখা দেয়। এসময় চালকের কথা মতো আমার স্বামী চালকের পেছনে উপরের সিটে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। পরে ট্রাক চালক গাড়ি থামিয়ে অস্ত্রের মুখে মারধর করে ও গলায় কাপড় পেঁচিয়ে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষন করে এবং মোবাইল ও টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেয় বলে দাবি করেন তিনি। এঘটনার পর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের তেলিপাড়া এলাকায় চালক স্বামী-স্ত্রী দু’জনকেই ট্রাক থেকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় সেখান থেকে উদ্ধার হয়ে তারা রবিবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে গাজীপুরের ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়। এসময়ও তাদের মধ্যে নেশার ভাব কাটেনি।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক আব্দুস সালাম সরকার জানান, রবিবার দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই দম্পতির নেশাভাব লক্ষ্য করা গেছে। তারা একেকবার একেক কথা বলছেন। তাদের কথার মধ্যে অসংলগ্নতা দেখা গেছে। ওই নারী নিজে ধর্ষনের শিকার বলে দাবি করলেও প্রাথমিকভাবে তার আলামত পাওয়া যায়নি। তবে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে শারীরিক নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। ধর্ষনের ঘটনা নিশ্চিত হওয়ার জন্য হাসপাতালের গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. জোবায়দা আক্তার লাকির সহায়তায় ওই নারীর গোপনাঙ্গ থেকে যৌণরস (ভেজাইনা সোয়াড) নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। তবে এরআগে ধর্ষণের ব্যাপারে কোন মন্তব্য করা যাচ্ছে না। তিনি আরো জানান, ওই নারীর স্বামীর পকেট থেকে ২০০৭সালে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ইস্যূ করা একটি রিকশা/ভ্যান চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও একই নামে ইস্যূ করা ঢাকার মিরপুর ১৪নং সেকশনের ভিশন এ্যাপারেলস প্রাইভেট লিমিটেড নামের পোশাক কারখানায় ‘আয়রন ম্যান’র পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে। তাদের গ্রামের বাড়ি জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ থানার চিকাজানি এলাকায় বলে জানান তারা।

জয়দেবপুর থানার ওসি খন্দকার রেজাউল হাসান রেজা জানান, ঘটনা সম্পর্কে শুনেছি। তবে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের জন্য তদন্ত করা হচ্ছে।