Rep

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৩ মে: রাজধানীর কুড়িল এলাকায় চলন্ত মাইক্রোবাসে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে আদিবাসী গারো সম্প্রদায়ের এক তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনায় এক ধর্ষণকারীর নাম পাওয়া গেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই তার পরিচয় প্রকাশ করছে না পুলিশ।ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গুলশান জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি)খন্দকার লুৎফুল কবির শনিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।রাজধানীতে চলন্ত মাইক্রোবাসে দেড় ঘণ্টা ধরে দলবদ্ধ পাশবিকতার শিকার গারো তরুণীর স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পেয়েছেন চিকিৎসকরা।কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে ধর্ষিত ওই তরুণীকে শনিবার সকালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে নেয় পুলিশ।

পরীক্ষা শেষে দুপুরে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান মো.হাবিব উজ জামান চৌধুরী বলেন, মেয়েটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছি। প্রাথমিক রিপোর্টে ধর্ষণের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এক সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।ভাটারা থানার পরিদর্শক মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, শনিবার সকাল ১১টার দিকে ভাটারা থানার তত্ত্বাবধানে তেঁজগাওয়ের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার থেকে ওই তরুণীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।স্বাস্থ্য পরীক্ষাশেষে ওই তরুণীকে পরিবারের হেফাজতে দেওয়া হবে।বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় বাসের জন্য অপেক্ষারত ওই গারো মেয়েটিকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে পাঁচ ব্যক্তি দেড়ঘণ্টা ধরে তাকে ধর্ষণ করে। পরে তারা মেয়েটিকে উত্তরার জসিম উদ্দিন রোডে ফেলে রেখে যায়।এ ঘটনার পর শুক্রবার ভাটারা থানায় মামলা করে ধর্ষণের শিকার মেয়েটির পরিবার।২১ বছর বয়সী ওই তরুণী যমুনা ফিউচার পার্কের একটি পোশাকের দোকানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করেন। বড় বোনের সঙ্গে উত্তরায় থাকেন খালার বাসায়। তাদের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়ায় ।ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গুলশান জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) খন্দকার লুৎফুল কবির শনিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, এই ঘটনার তদন্ত এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ঘটনাটি তদন্ত করছে। একজনের নাম পাওয়া গেলেও তদন্তের স্বার্থে নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না।শনিবার পৌনে দুইটায় দিকে গুলশানে নিজ কার্যালয়ে এ কথা জানান তিনি।খন্দকার লুৎফুল কবির বলেন,গাড়িতে তোলার পর ধর্ষণকারীদের মুঠোফোনে একটি কল আসে বলে পুলিশকে জানায় ভুক্তভোগী ওই তরুণী। ওই সময় ধর্ষকদের আলাপে তিনি একজনের নাম শুনতে পান বলে আমরা জানতে পারি।

তিনি আরও বলেন, মার্কেটের যে দোকানে ওই তরুণী কাজ করতেন সেখানে কোনো সিসি ক্যামেরা ছিলো না। আর রাস্তায় যেখান থেকে তাকে গাড়িতে তোলা হয় সেখানেও কোনো সিসি ক্যামেরা ছিল না। তবে ওই মার্কেটের সকল সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহের কাজ চলছে।তদন্ত কাজ এগিয়ে নিতে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশসহ বেশ কয়েকটি টিম কাজ শুরু করছে বলেও জানান তিনি।

তিনি জানান, ভুক্তভোগীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশ তদন্ত করছে। ওই তরুণীকে গাড়িতে উঠানোর পর কোন কোন রাস্তায় গাড়িটি চলেছে সে স্থানগুলোকেও তদন্তের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে।এই ধরণের ঘটনা সাধারণত একজন পরিদর্শক স্তরের কর্মকর্তা তদন্ত করে থাকেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক্ষেত্রেও সেটা মানা হয়েছে। খুব শীঘ্রই ধর্ষণকারীদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে রাজধানীর কুড়িলের একটি মার্কেটের সামনে থেকে অস্ত্রের মুখে মাইক্রোবাসে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে ধর্ষকরা। এরপর উত্তরার জসিমউদ্দিন রোডে তাকে ফেলে রেখে যায় তারা। এ ঘটনায় ভাটারা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং ২৬। এদিকে মামলার পর শনিবার ওই তরুণীকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে পরীক্ষা শেষে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, প্রাথমিক পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। সাত দিন পর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।