এফবিসিসিআই-এর_লোগো.svg

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৩ মে: ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির(এফবিসিসিআই) ২০১৫-১৭ সালের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনে ৯৫% ভোট পড়েছে। শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে।শনিনবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে এফবিসিসিআই নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান এম আলী আশরাফ এমপি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।স্থান সংকুলান না হওয়ায় অনেকেই ভোট দিতে পারেন নাই এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, জায়গা আরও বড় পরিসরে হলে ভাল হতো। আমরা বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে ভোট নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা পাওয়া যায়নি।তবে বুথ সংশ্লিষ্টদের তথ্য মতে ভোট পড়েছে ৮৮.৬০ ভাগ। চেম্বার গ্র“প থেকে মোট ৪৩৬ ভোটারের মধ্যে ৪১৮ জন এবং অ্যাসোসিয়েশন গ্র“পের ১৭৬৬ ভোটারের মধ্যে ১৫৩৩জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।এর আগে সকাল ৯টায় ফেডারেশন ভবনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। বিকাল ৫টা ১০ পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলে। রাতেই ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা হতে পারে।

এফবিসিসিআই পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনে অ্যাসোসিয়েশন ও চেম্বার থেকে ১৬ জন করে মোট ৩২ জন পরিচালক নির্বাচিত হবেন। এর বাইরে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন থেকে আরও ২০ জন মনোনীত পরিচালকসহ ৫২ জন নিয়ে এফবিসিসিআই বোর্ড গঠিত হবে।পরিচালক নির্বাচন শেষে আগামী ২৫ মে সভাপতি, প্রথম সহ-সভাপতি এবং একজন সহ-সভাপতি নির্বাচিত হবেন। সংগঠনের সভাপতি ও সহ সভাপতি নির্বাচিত হবেন চেম্বার গ্র“প থেকে। আর প্রথম সহ সভাপতি নির্বাচিত হবেন অ্যাসোসিয়েশন গ্র“প থেকে।

শনিবার সকালে মতিঝিল অঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, সকাল ৯টার আগেই পর্যাপ্ত সংখ্যক ভোটার ও প্রার্থীর সমর্থকরা এফবিসিসিআই কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। এফবিসিসিআই’র কার্যালয়ের সামনে তাবু পেতে ছাউনি তৈিির করা হয়েছে। সকাল ১০টার দিকে ভোটার ও প্রার্থীর সমর্থকদের স্লোগান মুখর হয়ে উঠে পুরো মতিঝিল অঞ্চল।এ বারের পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনে ৩২ পরিচালক পদের বিপরীতে ৬৩ প্রার্থী লড়াই করেন। এর মধ্যে চেম্বার গ্র“প থেকে ৩০ জন এবং অ্যাসোসিয়েশন গ্র“প থেকে ৩৩জন প্রার্থী রয়েছেন। মোট ২ হাজার ২০৬ ভোটারের মধ্যে অ্যাসোসিয়েশন গ্র“পর ১ হাজার ৭৭৪ ও চেম্বার গ্র“পের ৪৩২ ভোটার রয়েছেন।নির্বাচনে ৩টি প্যানেল অংশ নিয়েছে। তবে সভাপতি পদে প্রার্থী রয়েছে দুটি প্যানেল থেকে। এর মধ্যে উন্নয়ন পরিষদ প্যানেলের নেতৃত্বে আছেন নিটল-টাটা গ্র“পের চেয়ারম্যান আবদুল মাতলুব আহমাদ। তিনি রাজশাহী চেম্বারের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচন করছেন।অপর প্যানেলে স্বাধীনতা পরিষদ প্যানেলের নেতৃত্বে আছেন এফবিসিসিআইর বর্তমান প্রথম সহসভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলী। তিনি চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বারের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

এ ছাড়া অ্যাসোসিয়েশন গ্র“প থেকে আলাদাভাবে ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ নামে আর একটি প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। এ প্যানেলে বাংলাদেশ ইনডেন্টিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসাইন, বাংলাদেশ কংক্রিট প্রোডাক্ট অ্যান্ড ব্লক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি ড. কাজী এরতেজা হাসান ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং প্রতিনিধি মো. শাফকাত হায়দার নেতৃত্বে আছেন।এদিকে, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই নির্বাচনে ( ২০১৫-২০১৭) দুই গ্র“পের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।শনিবার সকাল ৯টায় ভোটগ্রহণ শুরুর প্রায় দেড় ঘণ্টা পর এ সংঘর্ষ বাঁধে। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার সকাল ১০টার দিকে ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ও রব্বানী জব্বারের সমর্থকদের মধ্যে হঠাৎ সংঘর্ষ বেঁধে যায়। পরে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে ধাওয়া করে। এসময় হাতাহাতিও হয়। ভোটারদের স্বাগত জানানো নিয়েই দুই পক্ষের কর্মীদের মধ্যে এই ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং ঘটনাস্থল থেকে ১০ জনকে আটক করে।তবে এ ঘটনায় কেউ গুরুতর আহত হয়নি বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে নির্বাচনী বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী আশরাফ বলেন, কোনো প্রার্থী নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট কিংবা আচরণ বিধি ভঙ্গ করলে তার প্রার্থীতা বাতিল করা হবে।এ প্রসঙ্গে ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি সালমান এফ রহমান বলেন, এ নির্বাচন দেশের ব্যবসায়ীদের প্রাণের নির্বাচন। এফবিসিসিআই দেশ ও দেশের ব্যবসায়ীদের স্বার্থে কাজ করে। জয় পরাজয় কোনো বিষয় নয়। সকলে এক সঙ্গে ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করবেন বলে আশা করি। ফেডারেশন ভবনের সামনে দুই প্রার্থীর কর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শুধু ব্যবসায়ীদের এ নির্বাচনই নয়, কোন নির্বাচনেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কাম্য নয়।