দৈনিকবার্তা-রাজশাহী , ২৩ মে : রাজশাহীর আমের সুখ্যাতি দেশজুড়ে। মধুর মত মিষ্টি স্বাদ, গন্ধ ও আকারে রাজশাহীর আমই সেরা। তাই বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা হলেও আমের রাজধানী বলা হয় রাজশাহীকেই। মওসুমী এ ফলের নাম-যশ রাজশাহীর ইতিহাস-ঐতিহ্যে মিশে আছে। ‘আম’ দেখলে অনেকের মনে রাজশাহীর নামই ভেসে ওঠে। ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে তাই নগরের প্রবেশ মুখ নওদাপাড়ায় স্থাপন করা হয় ‘আম চত্বর’। এখন আম চত্বর আছে; কিন্তু সেই চত্বরের আমগুলো ঝরে পড়েছে।
রাজশাহীর ওপর দিয়ে চলতি মওসুমের প্রথম কালবৈশাখী বয়ে যায় গত ৪ এপ্রিল। প্রথম কালবৈশাখীতেই লন্ডভন্ড হয়ে যায় রাজশাহী। সেই দিনের ঝড়ে নগরের নওদাপাড়া আম চত্বরের তিনটি জট বাঁধা আমও প্লেটের ওপর কাত হয়ে পড়ে যায়। এর পর দেড় মাসেরও বেশি সময় চলে গেছে। কিন্তু ঝড়ে পড়ে যাওয়া সৌন্দর্য বর্ধনকারী আমগুলো এখনও আগের অবস্থায় তোলা হয়নি। এ ক’দিনের অযতেœ অবহেলায় সবুজ ও হলুদ রঙের ইট-সিমেন্টের আমগুলো বিবর্ণ হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত এর পরিচর্যায় কেউ এগিয়ে আসেনি। তিনটি আম দিয়ে তৈরি করা ভাস্কর্যটির এমন অবস্থা নওদাপাড়া গোলচত্বরের মোহময় অপরূপ সৌন্দর্যকে একেবারেই ম্লান করে দিয়েছে।
রাজশাহী শহরে ঢুকতেই চার রাস্তার মোড়ে আমের এ হাল চোখে পড়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে পবার নওহাটা এলাকার নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘আমের এই ভাস্কর্যটি দেখলেই বুঝি শহরে প্রবেশ করছি। আর যারা জেলার বাইরে থেকে আসেন তারা রাজশাহীতে আসার বিষয়টি অনুভব করেন। কিন্তু যাত্রাপথে শ্রীভ্রষ্ট আমগুলো দেখে মনে মনে আফসোস করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না।’ রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক বলেন, সড়কটি সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের অধীনে। এর আগে, ২০০৪ সালে গ্রামীণফোনের উদ্যোগে নওদাপাড়া গোলচত্বরে তিনটি আমের ভাস্কর্যটি তৈরি করা হয়। পরে নগর সৌন্দর্য বর্ধনের আওতায় রাসিক সেখানে ফুলগাছ লাগায় এবং রঙের কাজও করে দেয়। আশরাফুল হক বলেন, নিয়মানুযায়ী ওই সড়কের সবকিছু দেখভালের দায়িত্ব সওজ’র। তবে গ্রামীণফোন আমচত্বর নির্মাণ করে দেওয়ায় সেই রক্ষণাবেক্ষণ তাদেরই দায়িত্ব। তাই ১০-১২ দিন আগে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য করপোরেশনের পক্ষ থেকে গ্রামীণফোনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
তারা ব্যবস্থা নিলে চত্বরের আমগুলো আবারও আগের অবস্থা ফিরে পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।