agun_2

দৈনিকবার্তা-লামা, ২২ মে: বান্দরবানের লামা উপজেলায় এক ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ২১টি কাঁচা ও আধা পাঁকা দোকান সম্পূর্ণ ছাই হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি গজালিয়া বাজারে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ব্যবসায়ীদের নগদ টাকাসহ প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষতিসাধিত হয়। একটি চা দোকানের বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে।

আগুন নিভাতে গিয়ে স্থানীয় দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়। খবর পেয়ে শুক্রবার সকালে উপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াইনু অং চৌধুরী, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য মো. জহিরুল ইসলাম ও ফাতেমা পারুল, ইউপি চেয়ারম্যান বাথোয়াইচিং মার্মা ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে তাৎক্ষনিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মাঝে নগদ অর্থ, চাউল ও কম্বল বিতরন করেন। এ সময় লামা পৌরসভার কাউন্সিলর শ্যামলী বিশ্বাস, ইউপি সদস্য মংক্যচিং মার্মা, বাজার চৌধুরী মংরে মার্মা, মহিলা ইউপি সদস্য জটিলা রানী শীল, রনজিদা বেগম, প্রিতমা ত্রিপুরা, আওয়ামীলীগ নেতা বিজয় আইচ ও গজালিয়া পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ মো. নুরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, গজালিয়া বাজারের শহিদুল ইসলামের চা দোকানে বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ১১টার দিকে আগুন জ্বলে উঠে। মুহুর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা আশপাশের দোকানগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় স্থানীয় পুলিশ সদস্য, জনসাধারন ও ব্যবসায়ীরা এক ঘন্টা আপ্রাণ চেষ্ঠা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ততক্ষণে আবুল হোসেন, শাহাব উদ্দিন, ওসমান, শহীদ, রহমান ও রনজিতের মুদি দোকান, আবুল খায়ের ও শহিদুল ইসলামের চা দোকান, আবু সুফিয়ান, নুুরুল আলম ও রনজিত চক্রবর্তীর কম্পিউটার দোকান, মনছুর আলমের মোবাইল দোকান, গনজিতের সেলুন, নয়ন ও ফরিদের মেশিনারী দোকান, উএথোয়াই ও গোপালের ঔষধের দোকান, হ্লক্যথোয়াই মার্মা ও কাঞ্চন ধরের টেইলার্সের দোকান, কাজল ধরের কাপড়ের দোকান এবং সোহরাব হোসেনের সিগারেটের দোকান আগুনে সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

এতে ব্যবসায়ীদের দোকানে রক্ষিত অর্ধ কোটি টাকাসহ প্রায় ২ কোটি টাকার মালামাল পুড়ে ক্ষতি সাধিত হয়। আগুন নিভাতে গিয়ে গজালিয়া পুলিশ ক্যাম্পের নায়েক আবদুল কাদের ও কনস্টেবল ইসহাক আহত হন। এদিকে, উপজেলা সদর থেকে গজালিয়া বাজারের দূরত্ব মাত্র ১৩ কিলোমিটার হলেও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেন পৌনে এক ঘন্টা পর। তাই ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের অবহেলাকে দায়ী করেন স্থানীয়রা। তারা মনে করেন, ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আরো দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছালে এত বেশি ক্ষতি হত না। এ বিষয়ে লামা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ইনচার্জ সৌমিত্র পাল বলেন, দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় ঘটনাস্থলে পৌঁছতে সামান্য বিলম্ব হয়েছে। এতে আমাদের বিন্দু মাত্র অবহেলা ছিলনা। অপর দিকে, রাতেই খবর পেয়ে লামা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আল মাহমুদ হাসান ও থানা অফিসার ইনচার্জ মো. সিরাজুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ক্ষতিগ্রস্ত গজালিয়া বাজারের মুদি ব্যবসায়ী আবুল হোসেন জানান, দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ায় দোকানের যাবতীয় মালামাল রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। এতে তার ৪০ লাখসহ অন্য সব ব্যবসায়ীদের প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। অগ্নিকান্ডের সত্যতা নিশ্চিত করে গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বাথোয়াইচিং মার্মা বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত প্রতি ব্যবসায়ীকে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ৩ হাজার ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত ফান্ড থেকে ১ হাজার করে নগদ টাকা এবং ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ১ হাজার করে নগদ টাকা, ২০ কেজি চাউল ও একটি করে কম্বল প্রদান করা হয়েছে।