দৈনিকবার্তা-লন্ডন, ২২ মে : দশ নাগরিককে হত্যার হুমকিদাতাদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী আশা দিয়েও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমামসহ ১০ নাগরিককে হত্যার হুমকিদাতাদের এখনো ধরতে পারেননি৷ উগ্রবাদীরা নতুন প্রযুক্তিতে অনেক শক্তিশালী৷ এ ব্যাপারে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে৷ শুধু নিষিদ্ধ করলে হবে না৷ গ্রেফতার করতে হবে৷ এ সরকার যখন সার্থকতার সঙ্গে সকল বিষয় সমাধান করেছে৷ এটিও করবে৷ দেশে মুক্তবুদ্ধির চিন্তা আজ হুমকির মুখে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত৷ এ ব্যাপারে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ারও আহবান জানান তিনি৷
শুক্রবার সকাল ১১টায় রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি) ভবনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহবান জানান সুরঞ্জিত৷চলমান রাজনীতি প্রসঙ্গে নৌকা সমর্থক গোষ্ঠী এ আলোচনা সভার আয়োজন করে৷সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, দেশে মুক্তবুদ্ধির চিন্তা আজ হুমকির মুখে৷ মুক্তবুদ্ধির চিন্তার মানুষরা একে একে উগ্রবাদীদের নগ্ন থাবার শিকার হচ্ছে৷ এটা মেনে নেওয়া যায় না৷ তাদের রক্ষা করতে হলে এসব উগ্রবাদীদের বিরুদ্ধে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে৷তিনি আরও বলেন, আল-কায়েদা, আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের মতো উগ্রবাদী জঙ্গিসংগঠনগুলোর কর্মীরা আধুনিক প্রযুক্তিতে পারদর্শী৷ তাই তাদের ধরতে হলে সরকারি বাহিনীর সদস্যদেরও বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হতে হবে৷
অনন্ত, অভিজিত্, রাজীবসহ অন্যন্যা ব্লগারদের হত্যাকারীরা এখনও বিচারের কাঠগোড়ায় না দাঁড়ানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, হত্যার তালিকা দিন দিন লম্বা হচ্ছে৷ কিন্তু সরকার কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছে না৷ তাই সরকারকে বলবো এসব উগ্রবাদী সংগঠনগুলোকে শুধু নিষিদ্ধ করলেই চলবে না৷ এদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে৷ যাতে এদের মূলোত্পাটন করা যায়৷উগ্রবাদী জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদা, আনসারুল্লাহ বাংলাটিম-১৩ কর্তৃক দেশের বিশিষ্ট দশ ব্যক্তিকে হত্যার হুমকি দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি এটিকে বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা মনে করি না৷ এটা ব্লগারদের হত্যার ধারাবাহিকতারই অংশ৷বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দল পুর্নগঠনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দল পুর্নগঠনের আগে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক আদর্শ পরিবর্তন করা উচিত্৷ কেননা গণতন্ত্রে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও সামপ্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই৷ তাই খালেদা জিয়াকে এসব থেকে সরে এসে সাংবিধানিক পদ্ধতিতে রাজনীতি করতে হবে৷ তাকে জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে৷
২০ দলীয় জোটের ৯২ দিনের কর্মসূচির মূল্যায়ন করে সুরঞ্জিত বলেন, এতে করে খালেদা জিয়া নিজে এবং তার দল (বিএনপি) সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে কথা বলা, স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতি করা ও জাতির জনকের বিরুদ্ধে কথা বলার অধিকার গণতন্ত্র দিতে পারে না৷ এই অধিকার বিশ্বের কোনো দেশের গণতন্ত্রই দেয়নি৷ তাই আপনাকে (খালেদা জিয়া) নিয়মতান্ত্রিকভাবেই রাজনীতি করতে হবে৷
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আজকের পৃথিবীতে নতুন মডেল আখ্যায়িত করে সুরঞ্জিত বলেন, অনেকে বলে শেখ হাসিনা মাহাথির মোহাম্মদ বা লিপ ওয়ান হয়ে যাচ্ছেন৷ কিন্তু আমি তাদের সাথে দ্বিমত পোষণ করে বলতে চাই৷ সেই যুগ এখন আর নেই৷ এটি একবিংশ শতাব্দী৷ আর এই শতাব্দীতে শেখ হাসিনা নিজেই একটি মডেল৷ বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে আজকের পৃথিবীতে তিনি নতুন মডেল হিসেবে আর্বিভূত হয়েছেন৷সংগঠনের সভাপতি ডা. এমদাদুল হক সেলিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সহ সম্পাদক নারায়ণ দেবনাথ, কৃষকলীগ নেতা আব্দুল হাই কানু সহ আয়োজক সংগঠনের নেতরা উপস্থিত ছিলেন৷