high-court-of-bangladesh3102013_82580

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২১ মে: দেশের আইনজীবীদের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। নির্বাচনের তফসিল কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানাতে আদালত রুলও জারি করেন।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. ইউনুস আলী আকন্দ বলেন, আদালত আগামী ২৭ মে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন। পাশাপাশি ওই নির্বাচনের তফসিল কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা চার সপ্তাহের মধ্যে জানাতে সরকার ও বার কাউন্সিল কর্তৃপক্ষকে রুল দিয়েছেন। তিনি বলেন, গত ১৭ মে বার কাউন্সিলের নির্বাচন চ্যালেঞ্জ করে তিনি এই রিট আবেদনটি করেন। পরদিন ১৮ মে রিট আবেদনের শুনানি হয়। আদেশের জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য ছিল।রিট আবেদনের পক্ষে ইউনুস আলী আকন্দ নিজেই শুনানি করেন।

গত ২৫ মার্চ বার কাউন্সিল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা ও ৯ এপ্রিল ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়, যাতে কাউন্সিলের ভোটার সংখ্যা দেখানো হয় ৪৮ হাজার ৪৬৫ জন। তবে এ তালিকায় অস্পষ্টতা এবং একই নাম একাধিকবার থাকার কথা জানিয়ে কাউন্সিলের নির্বাচিত পাঁচ সদস্য এবং ১০১ জন আইনজীবী ২৯ এপ্রিল কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও সচিবকে চিঠি দেন। এতে অভিযোগ করা হয়, আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হলেও কাউন্সিল নিজস্ব নথির সাহায্য না নিয়ে আইনজীবী সমিতিগুলোর পাঠানো সদস্য তালিকা ধরেই ভোটার তালিকা তৈরি করেছে।আওয়ামী লীগ-সমর্থক প্যানেলের নির্বাচিত যে পাঁচজন চিঠি দেন, তাঁরা হলেন সৈয়দ রেজাউর রহমান, এইচ আর জাহিদ আনোয়ার, আবদুল মতিন খসরু, এস এম মুজিবুর রহমান ও তানিয়া আমীর।সংশোধিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২৭ মে এই নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল।

বার কাউন্সিলের সচিব ও তিন প্রার্থী এই স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে চেম্বার বিচারপতির কাছে গেলেও বিচারক বিষয়টি শোনার জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দিয়েছেন। রোববার এ বিষয়ে শুনানি হবে।বার কাউন্সিলের নির্বাচনের তফসিল, ভোটার তালিকা এবং ২০০৩ সালের সংশোধীত বার কাউন্সিল আইনের ৩ নম্বর ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ গত ১৭ মে এই রিট আবেদন করেন।গত ১৯ মে আবেদনের ওপর শুনানি করে বৃহস্পতিবার হাই কোর্ট রুলসহ আদেশ দেয়। আবেদনকারী ইউনুছ আলী নিজেই আদালতে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।আদেশের পর ইউনুছ আলী আকন্দ সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচনের তফসিল কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং বার কাউন্সিল (সংশোধনী) আইনের ৩ নম্বর ধারা কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে রুল দিয়েছে আদালত।বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ও আইন সচিবকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।এর আগে শুনানিতে ইউনুছ আলী বলেন, বিধান অনুসারে নির্বাচনের ত্রিশ দিন আগে ভোটার তালিকা প্রকাশ করতে হবে। ২০ মে থেকে ভোট পিছিয়ে ২৭ মে নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের মাত্র ছয়দিন বাকি থাকলেও ভোটার তালিকা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

গত ২৫ মার্চ এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর ৯ এপ্রিল ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়, যাতে কাউন্সিলের ভোটার সংখ্যা দেখানো হয় ৪৮ হাজার ৪৬৫ জন।তবে ভোটার তালিকায় অস্পষ্টতা ও একই ধরনের নাম একাধিকবার থাকার কথা জানিয়ে ৯ এপ্রিল কাউন্সিলের পাঁচ নির্বাচিত সদস্য এবং ১০১ জন আইনজীবী আলাদাভাবে বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও সচিবকে চিঠি দেন। চিঠিতে তারা তালিকা ঠিক করতে বলেন।এরপর কাউন্সিলের পাঁচজন সদস্য তলবি সভা করে ভোটের তারিখ পিছিয়ে দেন।ইউনুছ আলী আকন্দ সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমান কমিটির মেয়াদ ৩১ মে শেষ হবে। নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় এখন বার কাউন্সিল অর্ডার ১৯৭২ এর ৪৬ ক্ষমতা বলে সরকার অ্যাডহক কাউন্সিল গঠন করতে পারে।