দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২১ মে: প্রস্তাবিত অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামো প্রত্যাখান করে এর পুনঃনির্ধারণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতি।বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় ঢাবির ক্লাব ভবনে সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন- শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দীন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আখতারুজ্জামান, টেলিভিশন, ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান এজেএম শফিউল আলম ভূঁইয়া এবং সাদা দলের শিক্ষক নেতা আখতার হোসাইন খান প্রমুখ।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মাকসুদ কামাল বলেন, সপ্তম জাতীয় বেতন কাঠামোতে শিক্ষকদের যে অবস্থান ছিল বর্তমান কাঠামোতে তা দুইধাপ নামিয়ে আনা হয়েছে। এটি শুধু ন্যায়সঙ্গত অধিকারই ক্ষুণ্ন করেনি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য অত্যন্ত অবমাননাকরও।
তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও আমলারা নানান কৌশলে নিজেদের পদকে স্বাভাবিক অবস্থা থেকে উচ্চতর অবস্থানে উন্নীত করেছেন, বিভিন্ন ধাপ সৃষ্টি করে নতুন সুবিধার দিগন্ত উন্মোচন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেকশন গ্রেডের অধ্যাপকরা সচিবদের সমতুল্য বেতন পান। কিন্তু প্রস্তাবিত বেতনকাঠামোতে সিলেকশন গ্রেড বাদ দেয়ার মতো সুপারিশ করা হয়েছে। আমরা মনে করি, সিলেকশন গ্রেড অধ্যাপকদের পদমর্যাদা হবে সিনিয়র সচিবদের সমতুল্য।শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরেই স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের দাবি জানিয়ে আসছি। বর্তমান সরকারের একটি নির্বাচনী অঙ্গীকারও ছিল তা এবং শিক্ষামন্ত্রী ও তার বক্তব্যে বারবার এ বিষয়টি তুলে এনেছেন। কিন্তু এ দাবি আজও বাস্তবায়ন হয়নি।
সচিবদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তিনি বলেন, সচিব কমিটি নতুন পদ সৃষ্টি করে নিজেদের জন্য অযৌক্তিক সুযোগ-সুবিধার প্রস্তাব করে এ বেতন কাঠামোর সর্বজন গ্রহণযোগ্যতা বিনষ্ট করেছে। শিক্ষকদের স্বার্থ ক্ষুণ্নকারী সচিব কমিটির সুপারিশকৃত বেতন কাঠামো আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। সংবাদ সম্মেলনে তিনি কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। এর মধ্যে আছে- প্রস্তাবিত বেতন কাঠামোর বৈষম্য দূর করে সিলেকশন গ্রেডে অধ্যাপকদের বেতন-ভাতা সিনিয়র সচিবদের সমতুল্য করা। অধ্যাপকদের বেতন-ভাতা পদায়িত সচিবদের সমতুল্য করা,সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষকদের বেতন কাঠামো ক্রমানুসারে নির্ধারণ করা,ভারত ও পাকিস্তানের আলোকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের গবেষণা ভাতা, বই ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করা; প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তাদের অনুরূপ গাড়ি ও অন্যান্য সুবিধা শিক্ষকদের ক্ষেত্রে ও নিশ্চিত করা; রাষ্ট্রীয় ওয়ারেন্ট অব প্রেসিডেন্স-এ প্রত্যাশিত বেতন কাঠামো অনুযায়ী পদমর্যাদাগত অবস্থান নিশ্চিত করা; ঢাবি উপাচার্যের পদমর্যাদা মুখ্য সচিব/মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সমতুল্য করা; অবিলম্বে সরকারের অঙ্গীকার অনুযায়ী শিক্ষকদের জন্যে স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন করা এবং বাঙালির অহঙ্কারের প্রতীক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশেষ মর্যাদা দেয়া।
সংবাদ সম্মেলনে দাবিগুলো আদায়ের লক্ষ্যে কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়। কর্মসূচির আলোকে আগামী ২৪ মে রোববার বেলা ১১টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে বিক্ষুব্ধ শিক্ষকসমাজের প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে।এছাড়াও দাবিগুলোর বাস্তবায়ন না হলে আগামীতে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারী দেন শিক্ষক নেতারা।