দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২১ মে: রাজধানীর শাহজাহানপুরের রেলওয়ের মাঠসংলগ্ন পানির পাম্পের পরিত্যক্ত পাইপে পড়ে শিশু জিহাদের (৩) মৃত্যুর ঘটনার মামলায় রেলওয়ের জ্যেষ্ঠ উপ সহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলমের জামিন মঞ্জুর করেছেন ঢাকার সিএমএম আদালত।বৃহস্পতিবার সকালে জাহাঙ্গীর আলম আত্মসমর্পন করে আদালতে জামিন প্রার্থনা করেন। শুনানি শেষে বেলা ১২টা ৪০ মিনিটে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অশোক কুমার দত্ত তার জামিন মঞ্জুর করেন। গত ৭ এপ্রিল এ মামলায় রেলওয়ের জ্যেষ্ঠ উপ সহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম ও ঠিকাদার প্রকৌশলী আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে চার্জশীট দিয়েছে পুলিশ।
চার্জশিটে অভিযুক্ত রেলওয়ের জ্যেষ্ঠ উপ সহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম হলেন শাহজাহানপুর রেল কলোনিতে পানির পাম্প বসানোর প্রকল্প পরিচালক ও প্রকৌশলী আব্দুস সালাম ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জেএসআরের মালিক ।ওই চার্জশিটটি দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহজাহানপুর থানা পুলিশের এসআই মো. আবু জাফর। অভিযুক্তদের মধ্যে প্রকৌশলী আব্দুস সালাম জেলহাজতে আছেন। গত ১১ মার্চ তাকে ২ দিনের রিমানন্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।চার্জশিটে অভিযোগ করা হয়েছে, আসামিদের প্রতিষ্ঠান এসআর হাউজ শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনিস্থ মৈত্রী সংঘ মাঠের পূর্ব দক্ষিণ কোণে একটি পানির পাম্পের ঠিকাদারী নিয়ে অনুমান ৬শ ফুট লোহার পানির পাইপ স্থাপন করে। কিন্তু পাইপের মুখ খোলা রেখে কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা না নিয়ে অবহেলা ও তাচ্ছিল্যপূর্ণভাবে দীর্ঘদিন ফেলে রাখে। যার ফলে গত ২৬ ডিসেম্বর বেলা ৩ টার সময় মামলার বাদী নাসির উদ্দিনের ছেলে শিশু জিহাদ (৩) উক্ত স্থানে খেলতে গিয়ে পাইপের ভেতরে পড়ে গিয়ে মারা যায়।
২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর বেলা ৩ টায় শিশু জিহাদ পাইপের মধ্যে পড়ে গেলে মিডিয়ার মাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়।রাতভর ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার অভিযান ব্যর্থ হয়। পরদিন দুপুরে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান শিশুটি পাইপে নেই বলে ঘোষণা দিয়ে উদ্ধার অভিযান স্থগিত করেন। এরপর শিশুটিকে উদ্ধারে কাজ করেন জনৈক মজিদ, লিটু ও আনোয়ার। তাদের তৈরি একটি ক্যাচারের মাধ্যমে জিহাদকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।এ ঘটনায় নিহত জিহাদের বাবা নাসির ফকির ফৌজদারি আইনের ৩০৪/ক ধারায় দায়িত্বে অবেহেলায়’ জিহাদের মৃত্যুর অভিযোগে শাহজাহানপুর থানায় প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম ও প্রকৌশলী আব্দুস সালামকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
রেল কলোনির পরিত্যক্ত ওই গভীর নলকূপের পাইপে জিহাদ পড়ে যাওয়ার পর রাতেই ওই প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। আর পাশেই নতুন গভীর নলকূপ স্থাপন প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জেএসআরকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়।