দৈনিকবার্তা-সিলেট,২১মে : হত্যার হুমকিদাতারা যা করছে তা দেশের আইন, পৃথিবীর আইন বা মানুষের আইন— কোনো আইনেই নেই বলে মন্তব্য করেছেন জনপ্রিয় লেখক শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।তিনি বলেন, নতুন করে হত্যার যে হুমকি দেওয়া হয়েছে, এটি অত্যন্ত খারাপ সঙ্কেত। যদি তারা (১০ জন) গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকেন তবে সরকার বিষয়টি আরও গুরুত্বসহকারে নেবে বলে আমার বিশ্বাস।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ও ড. জাফর ইকবালসহ ১০ জনকে হত্যার হুমকির প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার সকালে কথা হয় ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের।জাফর ইকবাল বলেন, কারও কথা পছন্দ না হলে পাল্টা কথা বলা যেতে পারে, কারও লেখা পছন্দ না হলে পাল্টা কিছু লেখা যেতে পারে কিন্তু আমাদের ধর্ম ও আইন এটা বলে না যে, মানুষ হত্যা করা যেতে পারে। কাজেই এ ধরনের হত্যার হুমকি আমাদের দেশের আইনের পরিপন্থী। গোপনে হুমকি দিতেই পারে, কিছুই করার নেই। কিন্তু এভাবে হুমকি দেওয়ার সাহস হঠাৎ করেই যেন বেড়ে গেছে। আমি মনে করি, এতে করে আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর দায়িত্বও অনেক বেড়ে গেছে যোগ করেন জাফর ইকবাল।
প্রসঙ্গত, বুধবার সকালে ডাকযোগে পাঠানো ইংরেজি ভাষায় লেখা চিঠির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ঢাবির জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অসীম সরকার, ড. জাফর ইকবাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক কাবেরী গায়েন ও গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকারসহ ১০ বিশিষ্ট ব্যক্তিকে হত্যার হুমকি দেয় আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট আনসারুল্লাহ বাংলাটিম-১৩। ওই হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে শাহবাগ থানায় অসীম সরকারের পক্ষ থেকে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের হত্যার হুমকি দেওয়া প্রসঙ্গে জাফর ইকবাল আরও বলেন, যে ১০ জনকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে, সেই তালিকা এখনো আমার দেখা হয়নি। তবে আমার ধারণা, তারা সবাই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের সময় কিছুটা হলেও তাদের নিরাপত্তা থাকে। কিন্তু এর আগে ৮৪ জনের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল, এর মধ্যে অনেকেই আছেন যাদের কোনো নিরাপত্তা নেই। তাদের রক্ষা করার কথা কেউই বলে না। তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে ৮৪ জনের তালিকায় থাকা আমাদের ছাত্র অনন্তকে হত্যা করা হল। আমি নতুন ১০ জনের তালিকা বাদই দিলাম, কারণ এখনো পুরনো তালিকা ধরে একজন একজন করে হত্যা করা হচ্ছে। তাই আমি সরকারকে অনুরোধ করব, ওই ছেলেগুলোকে যেন নিরাপত্তা দেওয়া হয়।
ব্লগার হত্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি মনে করি অভিজিৎ ও অনন্তের হত্যাকারীদের ধরা উচিত ছিল। কারণ যারা এ হত্যাকা- ঘটাচ্ছে তারা তা গোপনে কিছু ঘটাচ্ছে না। হত্যাকারীরা হুমকি দিচ্ছে, মোবাইলে এসএমএস পাঠাচেছ, বাসার সামনে ঘোরাঘুরি করছে, মোটরসাইকেলেও অনুসরণ করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চাইলে এ বিষয়ে আরও সক্রিয় হতে পারত।