দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২০ মে: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাগরে অসহায়ভাবে নৌকায় ভাসতে থাকা হাজারো অভিবাসন-প্রত্যাশীদের সাময়িক আশ্রয় দিতে সম্মত হয়েছে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া। বুধবার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অভিবাসী সংকট’ নিয়ে কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত তিন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকার অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। ইউএনএইচসিআর, ওএইচসিএইচআর, আইওএম এবং মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি মঙ্গলবার এক যৌথ বিবৃতিতে সাগরে বিপদগ্রস্ত এই মানুষদের প্রাণ বাঁচানো এবং মানবাধিকার রক্ষার জন্য ইন্দোনেশিয়া,মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনিফা আমান ছাড়াও ইন্দোনেশিয়ার রিন্টো মার্সুদি এবং থাইল্যান্ডের উপ প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী তানাসাক প্রতিমাপ্রগর্ন ত্রিদেশীয় বৈঠকে অংশ নেন।বুধবার কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় বৈঠক শেষে মালেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনিফা আমান অভিবাসী প্রত্যাশীদের আশ্রয় দেয়ার কথা ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া ৭ হাজার অভিবাসী প্রত্যাসীকে সাময়িকভাবে আশ্রয় দেবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতায় আগামী এক বছরের মধ্যে এসব আশ্রয় পাওয়াদের পুনর্বাসন এবং প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে আনা হবে।মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ জাহিদ এক বিবৃতিতে রোহিঙ্গা অভিবাসী প্রত্যাশীদের সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্যে মানবাধিকার গোষ্ঠী এবং জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে সকলের প্রতি আহ্বান জানান। ওই বিবৃতিতে তিনি আরো বলেছেন,যদিও এসব অভিবাসনে উচ্ছুক এই সম্প্রদায়টি অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘণ করছে, তারপরও তাদের ভালোভাবে জীবনধারণের প্রচেষ্টাকে অগ্রাহ্য করা উচিত নয়।এদিকে আঞ্চলিক অভিবাসী সংকট সমাধানে প্রথমবারের মতো সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে মিয়ানমার। এতদিন তারা এই সংকটের দায় অস্বীকার করে আসছিল।
এতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারেরর সাগরভাসা অসহায় মানুষের আশ্রয় পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এটাকে একটি বড় অর্জন হিসেবে দেখা হচ্ছে।কুয়ালালামপুরে বৈঠকে অংশ নেয়া দেশ তিনটি হলো ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড।এরইমধ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনার মুখে পড়ে নৌকায় সাগরে ভাসা হাজারো অভিবাসন-প্রত্যাশীদের তীরে ভিড়তে না দেয়ায় এ দেশ তিনটি।এদিকে, আঞ্চলিক অভিবাসী সংকট সমাধানে প্রথমবারের মতো সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে মিয়ানমার। এত দিন দেশটি এই সংকটের দায় অস্বীকার করে আসছিল।মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতির বরাত দ্যয়ে জানায়, আঞ্চলিক অভিবাসী সংকটে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগের সঙ্গে একমত ইয়াঙ্গুন। সমুদ্রে ভাসা মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে, তাদের মানবিক সহায়তা দিতে মিয়ানমার প্রস্তুত।আঞ্চলিক অভিবাসী সংকটের দায় প্রশ্নে মিয়ানমার যে কিছুটা নমনীয় হয়েছে, দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই বিবৃতিটি সেটাই ইঙ্গিত করছে।সম্প্রতি মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হয় থাইল্যান্ড সরকার। এরপর প্রায় তিন হাজার মিয়ানমারের রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীকে পাচারকারীরা জরাজীর্ণ ও ভিড়ে ঠাসা নৌকায় রেখে পালিয়ে যায়।একপর্যায়ে ওই অভিবাসন-প্রত্যাশীদের তীরে ভিড়তে না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড।
এতে তারা ক্ষুধা-পিপাসায় কাতর হয়ে এক দেশের জলসীমা থেকে আরেক দেশের জলসীমায় ঘুরতে বাধ্য হয়। এর মধ্যে আজ ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের উপকূল থেকে ৪২৬ জন অভিবাসন-প্রত্যাশীকে উদ্ধার করা হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাগরে অসহায়ভাবে নৌকায় ভাসতে থাকা হাজারো অভিবাসন-প্রত্যাশীদের সাময়িক আশ্রয় দিতে সম্মত হয়েছে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া। এতে বাংলাদেশের সাগরভাসা অসহায় মানুষের আশ্রয় পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এটাকে একটি বড় অর্জন হিসেবে দেখা হচ্ছে।সম্প্রতি মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হয় থাইল্যান্ড সরকার। এরপর প্রায় তিন হাজার মিয়ানমারের রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি অভিবাসন-প্রত্যাশীকে পাচারকারীরা জরাজীর্ণ ও ভিড়ে ঠাসা নৌকায় রেখে পালিয়ে যায়।একপর্যায়ে ওই অভিবাসন-প্রত্যাশীদের তীরে ভিড়তে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড। এতে তারা ক্ষুধা-পিপাসায় কাতর হয়ে এক দেশের জলসীমা থেকে আরেক দেশের জলসীমায় ঘুরতে বাধ্য হয়। এর মধ্যে আজ ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের উপকূল থেকে ৪২৬ জন অভিবাসন-প্রত্যাশীকে উদ্ধার করা হয়েছে।এদিকে, ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের উপকূল থেকে অভিবাসন-প্রত্যাশী আরও ৩৭০ বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা উদ্ধার করা হয়েছে। তারা কয়েক সপ্তাহ ধরে সমুদ্রে ভাসছিলেন।বুধবার স্থানীয় জেলারা তাদের উদ্ধার করে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানায়।স্থানীয়রা জানান, দুই দফায় দু’টি নৌযান থেকে ৫০ নারী ও শিশুসহ ৩৭০ অভিবাসন-প্রত্যাশীদের উদ্ধার করা হয়েছে।উদ্ধার অভিযানে থাকা স্থানীয় জেলে তেউকু নায়েক ইদ্রিস বলেন, উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিরা অত্যন্ত দুর্বল এবং অনেকেই অসুস্থ। তাদের মধ্যে অনেকেই না খেয়ে মারা গেছেন বলেও তারা জানতে পেরেছেন।
ইন্দোনেশিয়ার কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয়ং জেলারা ১০২ জন অভিবাসন-প্রত্যাশীকে মালাক্কা প্রণালি থেকে একটি ভাসমান নৌযান থেকে উদ্ধার করা হয়। সেখানে ১০২ জনের মধ্যে ৩১ শিশু ও ২৬ জন নারী রয়েছেন।দ্বিতীয় দফায় উদ্ধার হওয়াদের প্রসঙ্গে ইন্দোনেশীয় এক কর্মকর্তা সাদিকিন বলেন, সমুদ্রে একটি বিকল হওয়া নৌযান ভাসছিল। স্থানীয় জেলেরা তাদের উদ্ধার করে। সেখানেও নারী ও শিশু ছিল বলেও জানান তিনি। বুধবার মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের অংশগ্রহণে কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গ্রহীত হয় বলে জানিয়েছে দা গার্ডিয়ান পত্রিকা।দেশ দুটিতে যেসব হাজার হাজর অভিবাসীকে আশ্রয় দেয়া হবে তাদের অধিকাংশই বাংলাদেশি এবং রোহিঙ্গা। উন্নত জীবনের আশায় দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমাতে গিয়ে পাচারকারীদের ফাঁদে পড়ে এখন সাগরে ভাসছে এসব অসহায় মানুষ। এর আগে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং থাইল্যান্ড এসব সাগরভাসিদের আশ্রয় দেবে না বলে জানিয়েছিল। সাগরে কাঠের নৌকায় করে ভাসতে থাকা এসব লোকজন পানিতে পড়ে মারা গেলেও তাদের উদ্ধার না করার জন্য স্থানীয় জেলেদের নির্দেশ দিয়েছিল ইন্দোনেশিয়া কর্তৃপক্ষ। এছাড়া রোহিঙ্গার অভিবাসী প্রত্যাশীদের দায় নেবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছিল মিয়ানমার। কুয়ালামপুর বৈঠকও বর্জন করেছিল ওই দেশটি। পরে এসব ঘোষণার কারণে আন্তর্জাতিকভাবে কড়া সমালোচনার মুখে পড়ে এশিয়ার এই দেশগুলো। ফিলিপাইন সরকার অবশ্য সাগরে ভেসে থাকা মানুষদের আশ্রয় দিতে সম্মত হয়েছে।
এর আগে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন, পোপ ফ্রান্সিস এবং ওয়াশিংটন রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশি অভিবাসী প্রত্যাসীদের উদ্ধারে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন।এদিকে গত দশ দিনে সাগর থেকে প্রায় ৩ হাজার রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশিকে উদ্ধার করেছে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং থাইল্যান্ড। বুধবার মালয়েশিয়া বৈঠকের আগে প্রায় ৪শ অভিবাসী প্রত্যাসীকে উদ্ধার করেছে ইন্দোনেশিয়ার জেলেরা। এই উদ্ধারের পরই মালয়েশিয়া বৈঠক থেকে এ ঘোষণা এল। মঙ্গলবার জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক সংস্থা জানিয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বার্মা-বাংলাদেশ উপকূলের কাছে সাগরে ভাসছে ২ হাজারের বেশি অভিবাসী প্রত্যাসী।