দৈনিকবার্তা-রাজশাহী, ২০ মে: আমের রাজধানী বলে খ্যাত রাজশাহীর এলাকায় ইটভাটার নির্গত ধোয়ায় আমের গুটি পুরে কালো দাগ হয়ে ফেঁটে এবং আমের গুটিগুলো ছোট হয়ে যাওয়ায় আম চাষ করা ধ্বংসের মুখে পড়ছে৷ আম নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আম চাষী ও আম ব্যবসায়ীর লোকশানের মুখে পড়াই ইট ভাটা এলাকায় আম চাষীরা বাগান করা বন্ধ আর যারা করেছেন তার বর্তমানে দুশ্চিনত্মায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে৷
অপরদিকে আম ব্যবসায়ীর ইটভাটা এলাকায় আমের বাগান কিনে লোকসানের মুখে পড়ায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে ব্যবসায়ীরা৷ ইটভাটার ধোয়ার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷ জেলার পুঠিয়া উপজেলার গোপাল হাটি গ্রামের আম ব্যবসায়ী আবু বকর সিদ্দিক জানায়, উপজেলা সদরে পৌর এলাকার হাফ কিলোমিটার পূর্বে একটি ইটভাটা রয়েছে৷ তার পাশ্বর্ে আলী হোসেনের ৪৪ টি আমের গাছের বাগান ৩ বছর পূর্বে ৪ বছরের চুক্তিতে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা চুক্তিতে বাগান ক্রয় করি৷প্রতি চালানে বাগানে ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকার ঔষধ দিতে হয়৷ সে সময় থেকে ইটভাটার নির্গত ধোয়ায় আমের গুটি পুরে কালো দাগ হয়ে ফেঁটে এবং আমের গুটিগুলো ছোট হয়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় প্রতি বছর মোটা অংকের লোকশান দিতে হচ্ছে৷ আম নষ্ট হওয়ার ব্যপারে ঔষধ প্রয়োগ করেও কোন লাভ হয় না৷ আম নষ্ট হওয়ার ব্যপারে উপজেলা কৃষি অফিসে গিয়ে জানানোর পড়েও কোন সমধান আনতে না পাড়াই লোকশান গুনতে হচ্ছে৷
উপজেলার বাগান মালিক ও গ্রামবাসীরা জানায়, চলতি বছরের আমের মৌসুমের পূর্বে গাছে মুকুল আসলেও অধিকাংশ মুকুল ঝড়ে যাচ্ছে৷ বিশেষ করে ইটভাটার আশেপাশের গাছগুলোতে এ অবস্থা দেখা গেলেও কোন ব্যবস্থাই নেয়া হচ্ছে না৷ গত বছর ক্ষতি কম হলেও এবার সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হচ্ছে৷ ইটভাটা থেকে নির্গত ঝাঝালো গ্যাসে পরিবেশ দূষিত হয়ে পড়ছে৷জানাগেছে, ইটভাটাগুলো আবাসিক এবং কৃষি জমি অধ্যুষিত৷ এই ভাটা গুলো থেকে গরম ধূয়ার সঙ্গে ক্ষুদ্রকণার ধূলাও নির্গত হচ্ছে৷ এগুলো ঠান্ডা হতেও বেশ সময়ের প্রয়োজন হয়৷ এগুলো উপর থেকে পুনরায় নিচের দিকে ধাপিত হয়ে থাকে৷ অনেক সময় ভাটা থেকে নির্গত তীব্র ঝাঁঝালো গ্যাসে পুরো এলাকা দূষিত হয়ে পড়ে৷ এ সময় মানুষেরও স্বাশ প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয়৷ এলাকার সার্বিক পরিবেশ নষ্ট হয়ে পড়ে৷
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মুনজুর রহমান জানায়, ইটভাটার ধোওয়া ও বাতাসের করণে আমের নিচের দিকে নষ্ট হয়ে যায়৷ এটা শুধু ভাটা এলাকায় সমস্যটা হয়৷ ভাটাা এলাকায় আমে কোন প্রকার ঔষুধে এই রোগ প্রতিকার সম্ভব নয়৷ সেটা একমাত্র উপায় ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে৷ তাহলেই এই রোগ থেকে প্রতিকার পাওয়া যাবে৷এ ব্যাপারে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার খন্দোকার ফরহাদ আহমদ জানায়, আম নষ্ট হওয়ার ব্যপারে আমাদের কাছে কেউ আসেনি৷ আর ইটভাটার কারণে যে আমগুলো নষ্ট হচ্ছে সেটা পরীক্ষা নিরিক্ষা করার পর সে বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷