দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৯ মে: বর্ষবরণের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কয়েকজন নারীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে আদালত। আগামী ২৮ মে এ বিষয়ে আদেশ শুনানি হবে।পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) পক্ষ থেকে প্রতিবেদনটি আদালতে জমা দেওয়া হয় ।বুধবার বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে প্রতিবেদনটি জমা দেয়া হয়।বর্ষবরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নারী নিগ্রহ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে। এ নিয়ে যৌনসন্ত্রাসীর চিহ্নিত হলেও তাদের কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।এছাড়া এ ঘটনায় প্রতিবাদে ডিএমপি কার্যালয়ে ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশের নির্যাতনের শিকার হয় প্রতিবাদকারীরা।
বর্ষবরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আট নারী লাঞ্ছনাকারীকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের ধরিয়ে দিলে টওত্যেক লাঞ্ছনাকারীর জন্য এক লাখ টাকা করে পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক।ভিডিও ফুটেজ দেখে এ আটজনকে বর্ষবরণে নারী লাঞ্ছনাকারী হিসেবে শনাক্ত করেছে পুলিশ। ছবিটি পুলিশের পক্ষ থেকে সরবরাহ করা। রোববার পুলিশ সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শহীদুল হক বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা আট নারী লাঞ্ছনাকারীর ছবি গণমাধ্যমে দেওয়া হবে। অন্যদের মধ্যে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোখলেছুর রহমান, মাইনুর রহমান চৌধুরী, মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।আইজিপিআরও বলেন,রেজিস্ট্রেশন নম্বর বিহীন মোটরসাইকেল ধরতে আগামী ৩ জুন থেকে অভিযান চালাবে পুলিশ।রেজিস্ট্রেশন নম্বর বিহীন মোটরসাইকেল মালিকদের এ সময়ের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন নম্বর সংগ্রহ করার পরামর্শ দেন তিনি।বাংলা নববর্ষের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন কয়েকজন নারী।
ওই দিন বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেটে এ ঘটনা ঘটে। নিপীড়নকারীদের ঠেকাতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়ন শাখার সভাপতি লিটন নন্দীর হাত ভেঙেছে। অভিযোগ উঠেছে, পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে এই ঘটনা জানানো হলেও তাঁরা যথাসময়ে ব্যবস্থা নেননি।এ কে এম শহীদুল হক।ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্র ইউনিয়ন নেতা লিটন নন্দী বলেন, বাংলা নতুন বছর উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানুষের প্রচণ্ড ভিড় ছিল। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে শাহবাগ থেকে টিএসসি আসার পথে তারা য়েকজন দেখেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেটে ৩০-৩৫ জনের একদল যুবক বেশ কয়েকজন নারীর শ্লীলতাহানি করছে। তারা কারও কারও শাড়ি ধরে টান দিচ্ছিল। কয়েকজনকে তারা প্রায় বিবস্ত্রও করে ফেলে। এ সময় তিনি সেখানে বাধা দিতে গেলে ওই যুবকদের ধাক্কায় পড়ে যান এবং হাতে ব্যথা পান।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে লিটন নন্দী বলেন, এ দৃশ্য বর্ণনা করা যায় না। আমি আমার পাঞ্জাবি খুলে এক নারীকে দিয়েছিলাম। আরেকটি মেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিল। ওই যুবকেরা ভিড়ের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ ধরে এই ঘটনা ঘটাচ্ছে। আমরা পুলিশ সদস্য ও প্রক্টরকে ঘটনা জানালেও তাঁরা কেউ যথাসময়ে আসেননি।এ ঘটনায় ১৬ এপ্রিল স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।বর্ষবরণের উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যৌন নিপীড়নের ঘটনার ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ভিডিও দেখে আটজনকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ।তবে তাদের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হতে না পেরে সবার সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। কেউ তাদের পরিচয় সনাক্ত করতে পারলে ১ লাখ টাকা করে পুরস্কারেরও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।