দৈনিকবার্তা-রাজশাহী, ১৯ মে: দফায় দফায় কালবৈশাখীর তান্ডবে দুর্গাপুর উপজেলার প্রাথমিক, নিম্নমাধ্যমিক, উচ্চবিদ্যালয় ও মাদরাসাসহ ২৬টি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান লন্ড ভন্ড হয়ে উল্টেপাল্টে আছে। শুধুমাত্র তালিকায় সীমাবদ্ধ থেকে এক মাস পার হয়ে গেলেও ওইসব ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতে পৌঁছেনি কোন রকম সরকারি সহায়তা। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানে চরম ভাবে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে ভেবে স্থানীয় এলাকাবাসীর উদ্দ্যেগে গ্রাম থেকে সাহায্য উঠায়ে জোড়াতালি দিয়ে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান চালোনো হচ্ছে। আবার বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান চলছে খোলা আকাশের নিচে,অথবা গাছের নিচে।
সরেজমিনে ও খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, উপজেলায় কালবৈশাখীর তান্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে পড়া শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান গুলোতে এখনো কোনো সরকারি সহায়তা মেলেনি। সরকারি সহায়তা না পেয়ে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ও স্থানীয় এলাকাবাসী গ্রাম সাহায্য উঠিয়ে কোন রমক জোড়াতালি দিয়ে পাঠদান চলছে। কালবৈশাখীর তান্ডবে নান্দি গ্রামের শেখ পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪টি রুমসহ পুরো বিদ্যালয়ে টিনের চালা উড়ে যায়। এরপর আশে পাশের চা’স্টল,আম বাগান ও বাঁশ ঝাড়ে চলতে থাকে পাঠদান।
বিষয়টি নিয়ে কয়েকটি পত্রিকায় সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করলে টনক নড়ে উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তার। তিনি তাৎক্ষনিক ওই বিদ্যালয় পরিদর্শন করে কোন রকম টিনের চালাটি সংস্কার করার ব্যবস্থা করেন। তারপরও চালা উঠলেও এখনো বেড়া দিতে না পারায় অফিস কক্ষসহ পুরো বিদ্যালয় বেড়া বিহীন অবস্থায় অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে।
পৌরসদর দেবীপুর বিএম স্কুল ও কলেজের টিনের চালা উড়ে গেলেও পাঠদান চলতে থাকে খোলা আকাশের নিয়ে। এ অবস্থাতেও সরকারি কোন সহযোগিতা পায় নি প্রতিষ্ঠানটি। এমনকি সরকারি কোন কর্মকর্তা কর্মচারি ওই ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানে পরির্দশনে যাননি বলে শিক্ষকদের অভিযোগ। ফলে কলেজের পক্ষ থেকে কোন রমক সংস্কার করে পাঠদান চালানো হচ্ছে।
পালশা উচ্চ বিদ্যালয়ের টিনের চালা উড়ে যায় কালবৈশাখী ঝড়ে । সেই প্রতিষ্ঠানের মাটির দেয়াল ধ্বসে পড়ে শ্রেনি কক্ষে পাঠদান ব্যবস্থা ভেস্তে পড়ে। এরপর ওই প্রতিষ্ঠানে কোন সরকারি সহায়তা পৌছেনি বলে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষিক মফিজ উদ্দিন মিয়া। তিনি আরো জানান, প্রতিষ্ঠানটি ঝড়ে বিধ্বস্ত হওয়ার ১মাস পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত সরকারি কোন সহযোগিতা পায়নি তার প্রতিষ্ঠানটি। স্থানীয় গ্রামবাসী প্রতিষ্ঠানের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে দেখে গ্রাম থেকে সাহায্য তোলে কোন রমক সংস্কার করে পাঠদান চালোনো হচ্ছে।
নওপাড়া দাখিল মাদরাসা অবস্থাও একই সেখানে ঝড়ের কবলে পড়ে ক্ষতি গ্রস্থ শ্রেনি কক্ষ গুলো। উড়ে গেছে টিনের চালা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অফিস কক্ষ,টয়লেট ও প্রয়োজনী কাগজপত্র। এছাড়াও বেলঘরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়,জামিউল ইলুম কওমী মাদরাসা,আলিপুর মডেল কলেজ,জয়কৃঞ্চপুর দাখিল মাদরাসা,শ্রীধরপুর দাখিল মাদরাসা,বহরমপুর দাখিল মাদরাসা,আড়াইল দাখিল মাদরাসা,কিশোরপুর দাখিল মাদরাসা,পালশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,কাঁঠালবাড়িয়া সরকারি প্রাখিথক বিদ্যালয়,মাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,,ভাঙিরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাঁচুবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুহাড় নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পারিলা নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়,আলিপুর নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়,বাগলপাড়া নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়,যুগিশো চয়নিকা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, গৌরিহার আল আরাবিয়া দাখিল মাদরাসা, বাগলপাড়া টেকনিক্যাল ও বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ এবারের কালবৈশাখীর তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । এগুলো সহ ২৬ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবার কালবৈশাখীর তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এখনো পৌছেনি সরকারি সহায়তা। ফলে নিজেদের উদ্যোগেই কোন জোড়াতালি দিয়ে পাঠদান চালাচ্ছেন শিক্ষকরা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গোফরান হালিম জানান, ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানের তালিকা তৈরি করে ক্ষতির পরিমান নির্ণয় করে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সেখান থেকে কোন সহায়তা পেলে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান গুলোর সংস্কার করা হবে।