দৈনিকবার্তা-রাবি, ১৮ মে: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) একটি নতুন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা ও কর্মকর্তাদের চাকরির বয়সসীমা দুই বছর বৃদ্ধিসহ ১০টি প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।সোমবার (১৮ মে) দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১তম সিনেট সভায় এসব প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।সংশ্লিষ্টরা জানায়, দীর্ঘ ১৪ বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনেট সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২১তম এ সিনেট সভায় ১০টি প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক ইলিয়াছ হোসেন জানান, সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনস্টিটিউট অব ইংলিশ অ্যান্ড আদার ল্যাংগুয়েজেস অনুমোদন, ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ ও ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস কয়েকটি ধারা-উপধারা সংশোধন করা হয়।
এছাড়া, রাবি অধিভুক্ত কলেজ অধ্যাদেশ-২০১৫ দ্বাদশ সংবিধি করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের চাকরির বয়সসীমা ৬০ বছর থেকে ৬২ বছরে উন্নীত করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ তহবিল সংক্রান্ত ধারা সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয় এ সভায়। সিনেটের এ সভায় ২০১৪-২০১৫ সালের ২৭০ কোটি ৮০ লাখ টাকার সংশোধিত বাজেট এবং ২৯৪ কোটি ৭০ লাখ টাকার ২০১৫-২০১৬ সালের মূল বাজেট প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর সায়েন উদ্দিন আহমদ এ বাজেট পেশ করেন।এর আগে, সকাল ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সামনে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে সভার কর্মসূচি শুরু হয়।সভায় সভাপতিত্ব করেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন। সভার শুরুতে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জিল্লুর রহমানসহ ২০০১ সাল থেকে এ পর্যন্ত মৃত বিশিষ্টজন ও বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের স্মরণে শোক প্রস্তাব গ্রহণ ও তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ও রূহের মাগফিরাত কামনায় এক মিনিট নিরবতা পালন ও মোনাজাত করা হয়।
সিনেট সভায় উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন তার অভিভাষণে বলেন, সার্বিক শিক্ষার পরিবেশ, গবেষণার সুনাম, প্রভাব, অভিনবত্ব ও আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গির ওপর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মান-মর্যাদা বিবেচিত হয়। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, এসব মানদন্ডে বাংলাদেশের প্রায় সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো অবস্থানই নেই। এমন কি ভারতের অবস্থানও এ ক্ষেত্রে খুব উজ্জ্বল নয়। অথচ, সিঙ্গাপুর, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া শিক্ষার আন্তর্জাতিক মানদন্ডে পৌছে গেছে।তিনি বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া সত্ত্বেও আমরা চাহিদা অনুযায়ী বাজেট পাই না। এর ফলে, আমাদের শিক্ষা ও গবেষণা কাজ ব্যাহত হয়। বিগত ২০০০-০১ থেকে বর্তমান ২০১৪-১৫ আর্থিক বছর পর্যন্ত আমাদের ঘাটতি বাজেট নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে হচ্ছে।উপাচার্য আরো বলেন, ১৪ বছরের দীর্ঘ ব্যবধানের পর আজকের এ সিনেট সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ দীর্ঘ সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় নানা ঘটনাপ্রবাহ, আয়োজন, অর্জন, সাফল্য আর ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছে।উপাচার্য তার ভাষণে ২০০১ সালের সিনেট অধিবেশন থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।সিনেটের এই সভায় ৫৩ জন সিনেট সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সভাটি সঞ্চালন করেন সিনেটের সচিব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মুহাম্মদ এন্তাজুল হক।