DoinikBarta_দৈনিকবার্তা_LakshmipurRamgonjBung-chorPic16.05.2015দৈনিকবার্তা-লক্ষ্মীপুর, ১৬ মে: সন্ধায় মাইকিং,সময় দেয়া হয়েছে রাত ১২ টা পর্যন্ত। পরদিন সকালেই বুলডোজার চালিয়ে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে হাজার হাজার মানুষের স্বপ্ন। উচ্ছেদের কবলে পড়ে চোঁখেমুখে অন্ধকার দেখছেন ক্ষতিগ্রস্থ প্রায় তিনশত ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ীদের কান্নায় এসময় বাতাস ভারি হয়ে উঠে। একমাত্র সম্বল হারিয়ে ব্যবসায়ীদের অনেকই বেকার হয়েছেন। পথের ভিখারী হয়েছেন অনেকেই।শনিবার সকাল থেকে রামগঞ্জ হাজীগঞ্জ সড়কের রামগঞ্জ চৌরাস্তা থেকে সোনাপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত (১ কিলোমিটার) অংশের রাস্তার দু’ পাশে সড়ক ও জনপথ বিভাগ কোন কিছু নির্মানের ঘোষণা না দিয়ে প্রায় তিনশত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দেন।

এসময় সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তার মোবাইল বন্ধ থাকায় উল্লেখযোগ্য কোন বক্তব্য নেয়া যায়নি।ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী সাবেক কাউন্সিলর আবদুস ছাত্তার, দেলোয়ার হোসেন (এসপি দেলু), ৫নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কালাম খোকা ও তোফাজ্জল হোসেন বাবুল, মিয়া জানান, বিগত ১৫ দিন পূর্বে রামগঞ্জ ও সোনাপুর পর্যন্ত ১ কিলোমিটার সড়ক ও জনপথ বিভাগের রাস্তার উভয়পাশের স্থাপনাগুলো ভেঙ্গে ফেলার জন্য শহরব্যপি প্রচারনা চালানো হয়। পরবর্তিতে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, জেলা প্রশাসক লক্ষ্মীপুর, স্থানীয় এমপি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, পৌর মেয়র ও উপজেলা চেয়ারম্যান, সড়ক ও জনপথ বিভাগের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার লক্ষ্মীপুরের নিকট বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানিয়ে স্মারকলিপি দেন ব্যবসায়ীরা।কিন্তু শুক্রবার সন্ধার পরপরই সড়ক ও জনপথ বিভাগের বরাত দিয়ে শহরব্যপি মাইকিং করে ঐদিন রাত ১২ টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে আজ শনিবার সকালে উক্ত ব্যবসায়ীরা স্থাপনাগুলো সরিয়ে নেয়ার শুরু করার কিছুক্ষন পরেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যাক র‌্যাব, পুলিশ, ডিবি পুলিশ ও বিজিবিসহ একদল লোক বুলডোজার নিয়ে রাস্তার উভয়পাশের স্থাপনাগুলো মাটির সাথে গুড়িয়ে দেয়। অভিযোগ রয়েছে, দুইটি মহলের ধন্ধের বলি হিসাবে রমজানের মাত্র কয়েকদিন পূর্বে এরকম সিদ্ধান্ত তাদেরকে আর্থিকভাবে পঙ্গু করে দিয়েছে।

এদিকে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী অভিযোগ করে জানান, উপজেলা আওয়ামীলীগের বেশ কয়েকজন নেতা বিষয়টি নিয়ে বাজারের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গত সপ্তাহ পূর্ব থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত দফায় দফায় বৈঠক করে ব্যবসায়ী ও দোকান মালিকদের কাছ থেকে ২২ লক্ষ টাকা উত্তোলন করেন রামগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রদান করেন। উচ্ছেদের পূর্বে ব্যবসায়ীরা গত মঙ্গলবার শহরের টেম্পুষ্ট্যান্ড চৌরাস্তায় মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পৌর মেয়র ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহন করে বিষয়টি বিবেচনা করার জোর দাবী জানান। স্মারকলিপি দেয়া হয় রামগঞ্জ আসনের এমপি লায়ন এম এ আউয়ালকেও।

মোবাইলে কল করে না পেয়ে আজ শনিবার উচ্ছেদের সময় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার কাছে কেন উচ্ছেদ করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তারা জানান, আমরা নকশা অনুযায়ী উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পর্যায়ক্রমে অবৈধ স্থাপনা সব উচ্ছেদ করা হবে। এখানে বড় করিকল্পনা রয়েছে সরকারের। নাম জিজ্ঞাসা করলে তারা জানান, ভাই আমরা ব্যস্ত আছি পরে কথা হবে।উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব প্রদানকারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মাহাবুবল আলম জানান, আমরা উপরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রামগঞ্জ উপজেলার সব অবৈধ স্থাপনা পর্যায়ক্রমে উচ্ছেদ করবো। সরকারী সম্পদের উপর কোন অবৈধ স্থাপনা থাকবে না। নির্বিঘেœ তা সমাধান করতে আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।