কলাপাড়া

দৈনিকবার্তা-কলাপাড়া, ১৬ মে: মহিপুর মৎস্য বন্দর এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিত্যক্ত অফিস ও আবাসিক জীর্ণদশার ভবনগুলো মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। যে কোন সময় ভবনগুলো বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণহানির শঙ্কা প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে সংরক্ষিত এলাকা দখল করে কিছু টিনশেড স্থাপনা তোলা হয়েছে। বেহাত হচ্ছে পাউবোর কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব অফিস ও স্টাফ কোয়ার্টার করার জন্য ষাটের দশকে মহিপুরে সাড়ে ছয় একর জমি অধিগ্রহন করা হয়। নির্মাণ করা হয় অফিস, স্টাফ ও অফিসার্স কোয়ার্টার। ২০০০ সালের দিকে ওখানকার অফিস গুটিয়ে ফেলা হয়। প্রথমদিকে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে এই বিশাল এলাকার জমি ও নির্মিত ভবনগুলো। পরবর্তীতে জীর্ণদশার অফিসসহ একই দশার একাধিক আবাসিক ভবন দখল করে বর্তমানে ৮/৯টি পরিবারের প্রায় ৩০ সদস্য চরম ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করে আসছে। ফলে জমি বেহাতের পাশাপাশি যেকোন সময় ভবন ধসে বড় ধরনের প্রাণহানির প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। ২০০৮ সালে রহস্যজনকভাবে খানকায়ে ছালেহিয়া কমপ্লেক্স নামের একটি সাইবোর্ড টানিয়ে বিশাল এই এলাকার দখল নেয়া হয়। তখন কৌশলে চুপি চুপি একটি জীর্ণদশার ভবন দখল করে মাদ্রাসার কার্যক্রম শুরু করে ওই মহলটি। কথিত ওই খানকার সেক্রেটারী মোহাম্ম্দ সেলিম তখন দাবি করেন, তারা ২০০৮ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পটুয়াখালী নির্বাহী প্রকৌশলীর অফিস থেকে বনায়ন করার জন্য এ পরিমান জমি সাত বছরের জন্য লীজ নিয়েছেন। অথচ সেখানে কোন বনায়ন করা হয়নি। এলাকার সচেতন মানুষের প্রতিরোধে ২০১০ সালে মাদ্রাসার কার্যক্রম বন্ধ হয়।

কিন্তু জীর্ণদশার আবাসিক কোয়ার্টার এবং অফিসের মধ্যে বহিরাগত ভাসমান পরিবারগুলো বসবাস করছে। এদের একজন নুরুন্নাহার জানান, তারা নিতান্ত দায় ঠেকে এখানে বসবাস করছেন। রাস্তা সংলগ্ন জীর্ণদশার একতলা ভবনটিতে এক ভিক্ষুক দম্পতি ছাড়া ব্যবসায়ী কালাম ও নুরজাহান দম্পতি সন্তানসহ চরম ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন। এমনকি ভবনগুলোর মধ্যে মাদক সেবনকারী ও জুয়াড়ির রাত-দিন আড্ডা বসে। উত্তরদিকে এ জমিতে একাধিক টিনশেড স্থাপনা তোলা হয়েছে। ফলে দখলের পাশাপাশি ভবন ধসে প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়াস্থ নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবুল খায়ের জানান, শীঘ্রই দখলদার উচ্ছেদ করা হবে। লোকবল কম থাকায় একটু সমস্যার কথাও তিনি জানান। পটুয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী কার্যালয়ের অধিগ্রহণ শাখার সার্ভেয়ার মো. নূরুল হক জানান, ওই লিজ অনেক আগেই বাতিল করা হয়েছে।