দৈনিকবার্তা-খাগড়াছড়ি, ১৫ মে ২০১৫: বাংলাদেশ–ভারত সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শীঘ্রই রামগড়-সাব্রুম সীমান্তে দেশের ১৫ তম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথম স্থল বন্দর অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ শুরু হচ্ছে ।সম্প্রতি বাংলাদেশ-ভারত উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সদস্যদের পরিদর্শন ও পর্যারোচনা শেষে স্থলবন্দর কার্যক্রম চালুর লক্ষ্যে রামগড় পৌরসভার মহামুনি ও দক্ষিণ ত্রিপুরার সাবরুম মহকুমার দোলবাড়ী এলাকা (পিলার নম্বর ২২১৫/৭এস থেকে ২২১৫/১০-এস পর্যন্ত ) হয়ে ফেনী নদীর উপর প্রায় ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে ভারতীয় অর্থায়নে ব্রিজ নির্মাণ কাজ শুরুর প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু হয়েছে । ব্রিজের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলেই চালু করা হবে রামগড় সাবরুম কার্যক্রম । ভারতের দক্ষিণ ত্রিপুরা সরকার ইতিমধ্যে রামগড়ের মহামুনি সীমান্তের ওপারে সাবরুম দোলবাড়ী সীমান্তে স্থলবন্দর অবকাঠামো কাজ সম্পন্ন করেছে ।
এদিকে রামগড় রামগড় মহামুনি সীমান্তে বন্দরের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ, টার্মিনাল স্থাপন ইত্যাদির জন্য ভুমি অধিগ্রহনের প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে । এর আগে জেলার রামগড় উপজেলার সীমান্তবর্তী ফেনী নদীর উপর বাংলাদেশ-ভারত স্থলবন্দর কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষে ভারতীয় অর্থায়নে রামগড়-সাব্র“ম সংযোগ ব্রীজ নির্মানে দুই দিনের সফরের প্রথম দিন গত ২৭শে এপ্রিল সোমবার বাংলাদেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল ও ২৮এপ্রিল মঙ্গলবার ভারতের প্রতিনিধি দল রামগড় পৌরসভার সম্মেলন কক্ষে উভয় দেশের প্রতিনিধি দলের পর্যালোচনা বৈঠক শেষে রামগড় মহামুনি-ত্রিপুরা সাব্র“ম সীমান্ত ব্রীজ নির্মান স্থান পরিদর্শন করেন ।পরিদর্শনকালে ভারতের সাব্র“ম ইন্জিনিয়ার কমল সরকার এর নেতৃত্বে ৬সদস্যের প্রতিনিধি দলে এসডিও ইন্জিনিয়ার রাজ কুমার দাস, সাব্র“ম এসিষ্টেন ইন্জিনিয়ার পাওমানিক জয়ন্তি, ডিজাইন ইন্জিনিয়ার নাভিন জয়শাল, এলএম ভৌমিক, সাব্র“ম জিএম জৌতিশ দেববর্মা উপস্থিত ছিলেন ।
বাংলাদেশের পরিদর্শন দলের আহবায়ক মোঃ আব্দুল মালেক বলেন, বাংলাদেশের রামগড় মহামুনী এলাকার সাব পিলার ২২১৫-এস এর ৭থেকে১০নং পিলারের মধ্যে ভারতীয় অর্থায়নে সম্ভাব্য ১৮০মিটার লম্বা সেতু নির্মান করা হবে । সেতুটি বাংলাদেশ স্থলভাগে ৪০মিটার জলভাগে ১০০মিটার ও ভারতের স্থলভাগে ৪০মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মান, জমি অধিগ্রহন সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হবে আশ্বাস দিয়েছিলেন ।বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সচিবালয়ের যুগ্ম-সচিব মোঃ আব্দুল মালেককে আহবায়ক করে ৮সদস্যের প্রতিনিধি দলে রয়েছেন-সদস্য সচিব অতিরক্তি প্রকল্প পরিচালক সওজ মোঃ আব্দুল বাকী মিয়া, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম পওর সার্কেল তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান, খাগড়াছড়ি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) মোল্লা মিজানুর রহমান, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ন(দক্ষিণ এশিয়া) সহকারী সচিব মোঃ মোরশেদুর রহমান, ভূমি রেকর্ড ও জরীর অধিদপ্তর সহকারী অফিসার মোঃ পারভেজ মিয়া, পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম নির্বাহী প্রকৌশলী স্বপন কুমার বড়–য়া, বিজিবি’র সেক্টর গুইমারা জিটুআই মেজর শাহীন ও রামগড় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ইকবাল হোসেন ।
উল্লেখ্য যে, ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতার আসার পর- সরকারী প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে রামগড়ের স্থলবন্দর স্থাপনের ঘোষনা দেন । জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ১৯৯৬ সালের ২৮ শে জুলাই বা অভ্যন্তরীন জলপথে ভারত ও মায়ানমার থেকে আমদানি রপ্তানি বা পন্য সামগ্রী ছাড় করণের উদ্দেশ্যে দেশে ১৭৬ টি শুল্ক ষ্টেশনের তালিকা ঘোষনা করে তালিকার ৮৪ নং ক্রমিক ছিল রামগড় স্থল শুষ্ক ষ্টেশন । সরকার ঘোষিত ১৭৬ টি শুষ্ক ষ্টেশনের বেশ কিছু ইতিমধ্যে চালু হয়ে গেছে । আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় রামগড় স্থলবন্দর স্থাপনের কাজ দীর্ঘ দিন ফাইল বন্ধি থাকলেও আবারও আওয়ামীলীগ সরকার ২০১০ সালে বন্দরের কার্যক্রম বাস্তবায়নের উদ্যোগ শুরু করে দীর্ঘ দিনে ধীর গতির পর সম্প্রতি বাংলাদেশ- ভারত ত্বরান্নিত গতিতে স্থল বন্দর বাস্তবায়নের কাজ শুরু করায় এলাকায় ব্যবসায়ী মহল ও সাধারণ জনগন আশার আলো দেখছে ।