দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৪ মে: মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়নের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন গভর্নর ড. আতিউর রহমান।তিনি বলেন, সরকারের নীতি সহায়তায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়নে উৎসাহিত করেছে। এতে প্রচলিত ব্যাংকিং ধারার বাইরে গিয়ে আমরা অধিকসংখ্যক মানুষকে অর্থায়ন করতে পেরেছি। যা প্রকারান্তরে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়ক হয়েছে।বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম সম্মেলন কক্ষে ‘বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে চ্যালেঞ্জ : বাংলাদেশ ব্যাংকের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।বাংলাদেশ ব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) যৌথভাবে সেমিনারের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. বিরুপক্ষ পাল, আইএলও আবাসিক প্রধান শ্রীনিবাস রেড্ডি এবং আইএলও জেনেভা কার্যালয়ের এমপ্লয়মেন্ট এন্ড লেবার মার্কেট পলিসিজ শাখার প্রধান আয়ানাতুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।গভর্নর বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রধানত মূল্যমান ¯ি’তিশীল রাখতে কাজ করে থাকে। কিন্তু এখন প্রথাগত এই কাজের বাইরে গিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি বিশ্বের অনেক দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক উন্নয়নমুখী কাজে এগিয়ে আসছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এক্ষেত্রে রোল মডেলের ভূমিকায় আছে।
তিনি বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়নের কারণে বৈশ্বিক মন্দার মধ্যেও গত ৬ বছর ধরে আমরা গুণগতমানের প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পেরেছি। সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে। সামাজিক দায়বদ্ধ কর্মসূচিও বেড়েছে। এতে দারিদ্র্য হ্রাসের হার যেমন বেড়েছে তেমনি মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে ভোলাটাইলিটি কমেছে। সুদহার হ্রাস পাচ্ছে।বাংলাদেশ সম্পর্কে বৈশ্বিক রেটিং এজেন্সিসমূহের মূল্যায়নের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, মুডিসহ একাধিক রেটিং এজেন্সি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতি এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কর্মকান্ডের প্রশংসা করছে।তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক সবুজ অর্থায়নে নজর দেয়ার কারণে দেশে এখন সবুজ কারখানা গড়ে উঠছে। বিশ্বের প্রথম সবুজ পোশাক কারখানা বাংলাদেশে স্থাপন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আমরা বিশ্ববাসীকে এই বার্তা দিতে চাই, বিযাক্ত কার্বন নিঃসরণে আমাদের ভূমিকা নগণ্য হলেও-সবুজ পৃথিবী গড়তে আমরা অগ্রগামী ভূমিকা রাখছি।তৈরি পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশের উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংক জাইকা’র সহায়তায় কাজ করছে বলে তিনি জানান।অনুষ্ঠানে আইএলও আবাসিক প্রধান শ্রীনিবাস রেড্ডি বলেন, রানা প্লাজা ধসের পর বাংলাদেশের ৭৫ শতাংশ পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশের উন্নতি হয়েছে। তিনি বলেন, এ দেশের পোশাক শিল্পে বিপুলসংখ্যক নারী শ্রমিক কাজ করছে, যা নারীর ক্ষমতায়ন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখছে। তবে কর্মদক্ষতার অভাব এদের জীবনমান উন্নয়নে বড় বাঁধা। পোশাক শ্রমিকসহ বাংলাদেশের তরুণদের কর্মদক্ষতা বাড়ানোর ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।