দৈনিকবার্তা-লক্ষ্মীপুর, ১৩ মে ২০১৫: টানা তিন দিন ধরে বন্ধ রয়েছে লক্ষীপুর-ভোলা-বরিশাল রুটের ফেরী চলাচল। প্রবল কালবৈশাখী ঝড়ে ভেঙ্গে যাওয়া ফেরীর পন্টুন র্যাম সচল না হওয়ায় পারাপার করা যাচ্ছে না ওই রুটে কোন প্রকার যানবাহন। ফলে লক্ষ্মীপুর মজুচৌধুরীর হাট ফেরী ঘাট পাড়ে দেখা দিয়েছে দীর্ঘ যানজট। এতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী যানবাহন। আজ (বুধবার) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফেরী চলাচল বন্ধ থাকায় তিন গুন ভাড়া দিয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে ছোট ছোট নৌকা ও ট্রলার যোগে ডেঞ্জার জোনে উত্তাল মেঘনায় পাড়ি দিচ্ছে শত শত যাত্রী। যে কোন মূহুর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে অশংকা করছেন স্থানীয়রা।খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ২১টি জেলার সাথে সড়ক পথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর হাট-ভোলা রুটের নৌ-পথে ফেরি সার্ভিস। তাই এ রুটে প্রতিদিন শত শত বাস, ট্রাক, কাভার ভ্যানসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যবাহী যানবাহন চলাচল করে। গত ১১ মে সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে হঠাৎ করে কাল বৈশাখী ঝড় শুরু হলে প্রচন্ড ঢেউ আর বাতাসের তোরে ভোলা ইলিশা ফেরিঘাটের পল্টুনের র্যাম ছিড়ে নদীতে পড়ে যায়। যার ফলে সোমবার থেকে লক্ষীপুর-ভোলা রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এদিকে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়া মজুচৌধুরীর হাট ফেরী ঘাট পাড়ে আটকে আছে শত শত বাস, ট্রাক, কবারভ্যানসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। চরম দুর্ভোগে পড়েতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রী, চালক ও পরিবহন শ্রমিকদের।
ঘাটে বাবার লাশ নিয়ে এক যাত্রী জানায়, গতকাল রাতে আমার বাবার লাশ নিয়ে চট্রগ্রাম থেকে আমার নিজ জেলা ভোলার উদ্দ্যেশে রওনা হই। মজুচৌধুরীর হাট ফেরী ঘাটে এসে জানতে পারি ফেরী চলাচল বন্ধ। বাবার লাশ নিয়ে আমার খুব চিন্তিত।চট্রগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা এক বাস চালক জানান, গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে চট্রগ্রাম থেকে যাত্রী নিয়ে ভোলার উদ্দোশে রমনা হলে রাতে মজুচৌধুরীর হাট ফেরী ঘাটে যাত্রী নিয়ে দীর্ঘ লাইনে পড়ে আছি। কখন ফেরি ঘাটের সমস্যা সমাধান হবে বলা যাচ্ছে না। এখানে নেই কোন থাকার ব্যবস্থা নেই স্বাস্থসম্মত খাওয়ার ব্যবস্থা। বহু কষ্টে রাতটা পার করছি।ভোলা-বরিশাল রুটের একাধিক বাস চালকরা জানান, গত কয়েক দিন যাবত ইলিশা ফেরি ঘাটটিতে যে সমস্যা লেগেই আছে। কর্তৃপক্ষের অসচেতনতাই এর জন্য দায়ী বলে তারা মনে করছেন।ভোলা-লক্ষ্মীপুর-চট্রাগ্রাম রুটের শতাব্দী পরিবহনের চালক আফসার জানান, সামান্য ঝড়ের কবলেই পন্টুন ও র্যাময়ের এই দুর্গতী। বড় ধরনের ঝড় জলোচ্ছাস হলেতো ইলিশা ফেরিঘাটের চিহ্নই থাকবে না।
লক্ষ্মীপুর ফেরী ঘাটের এক শ্রমিক বলেন, সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে হঠাৎ করে কাল বৈশাখী ঝড় শুরু হলে প্রচন্ড ঢেউ আর বাতাসের তোরে ইলিশা ফেরিঘাটের পল্টুনের র্যাম ছিড়ে নদীতে পড়ে যায়। এতে করে লক্ষীপুর-ভোলা রুটে গাড়ী চালকরা ভীষন ভোগান্তীর মধ্যে রয়েছে। আজই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।এ দিকে সুযোগকে কাজে লাগিয়ে লক্ষ্মীপুর ফেরী ঘাটের একটি প্রভাবশালী মহল টাকার জন্য অবৈধ ভাবে ট্রলার যোগে উত্তাল মেঘনায় যাত্রীদের পারাপার করছে। আটকে পড়া অনেক যাত্রী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোট ছোট ট্রলারে করে মেঘনা নদী পাড়ি দিচ্ছে। লক্ষ্মীপুর-ভোলা ফেরি সার্ভিস সহব্যবস্থাপকের কার্যলয়ের (সহব্যবস্থাপক ব্যনিজ্য) মোঃ ফয়সাল জানান, ভোলার ইলিশা ফেরী ঘাটে যে সমস্যটা ছিলে তা সমাধানের পথে। আশা করি আজ থেকে স্বাভাবিক নিয়মে ফেরি চলাচল চলবে।