দৈনিকবার্তা-গাজীপুর, ১৩ মে: গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সিডিউল ক্রয় ও লেনদেনকে কেন্দ্র করে বুধবার গাজীপুরে সরকারদলীয় দুই ঠিকাদার ও তাদের সমর্থকদের মাঝে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। তারা নগর ভবনে ব্যাপক ভাংচুর ও বিভিন্ন কক্ষ ও নথিপত্র তছনছ করেছে। এসময় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের তিন কাউন্সিলর ও দু’ঠিকাদারসহ ৮জন আহত হয়েছে।
সিটি কাউন্সিলর আজিজুর রহমান শিরিশ ও শওকত আলমসহ স্থানীয়রা জানায়, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের দু’টি জোনের কাজের সিডিউল ক্রয় করা ও নিজেদের মধ্যে পাওনা টাকা নিয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগর ভবনের ৩য় তলায় দু’ঠিকাদার জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহবায়ক শাহজাহান মিয়া সাজু এবং বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট গাজীপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রিপনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে শাহজাহান মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে রিপনকে মারধর করে। খবর পেয়ে রিপনের ভাই গাজীপুর পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থলে আসে। এসময় তারা ঠিকাদার শাহজাহানকে মারধর করে। এ খবর পেয়ে শাহজাহানের লোকজন লাঠিসোটা, লোহার রড নিয়ে নগর ভবনের এসে বিভিন্ন রুমে রিপন ও তার ভাই আলী হোসেনকে মারধর করে। এক পর্যায়ে তারা সিটি কর্পোরেশনের নগর ভবনের দ্বিতীয় তলায় ২০১ নম্বর কক্ষে হামলা চালিয়ে তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী মোঃ আকবর হোসেনের টেবিলের কাঁচ ভাংচুর ও নথিপত্র তছনছ করে। এ সময় তারা বিভিন্ন কক্ষের দরজা জানালার কাঁচ ও বিভিন্ন স্থানে থাকা ফুলের টব ভাংচুর করে। এতে উভয় ঠিকাদারসহ ৫জন আহত হয়। এঘটনার সময় উভয় পক্ষকে থামাতে গিয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর মোঃ জান্নাতুর রহমান, শওকত আলম ও মহিলা কাউন্সিলর আয়েশা খাতুন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে, ওই ঘটনার খবর পেয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ টঙ্গী থেকে নগর ভবনে ছুটে আসেন। এসময় তিনি জানান, দুই ঠিকাদারের আভ্যন্তরীন দ্বন্দ্বে এ ঘটনা ঘটেছে। এব্যাপারে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। গাজীপুরের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ হারুন অর রশীদ পিপিএম দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
এব্যাপারে ঠিকাদার রিপন জানায়, তিনি শাহজাহানের কাছে ৪লাখ ১৭ হাজার টাকা পান। এছাড়া মঙ্গলবার তিনি সিটি কর্পোরেশনের দুই ও তিন নম্বর জোনের সিডিউল ক্রয় করেন। পাওনা টাকা চাইতে গেলে এবং সিডিউল কেনার কারণে শাহজাহানের লোকজন তাদের মারধর করেছে।