খালেদা জিয়া-Khaleda zia

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৩ মে: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, দেশের মানুষ জুলুম-অত্যাচারের অবসান চায়। বর্তমান স্বৈরাচারী সরকার জনগণের ওপর জুলুম-অত্যাচার করছে। তারা নির্বাচনের নামে কারচুপি ও সহিংসতা করে জয়ী হচ্ছে।সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে অন্ধ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশন পত্র-পত্রিকা দেখলে বলতে পারতো না সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে।এই যদি হয় সুষ্ঠু নির্বাচনের নমুনা তাহলে ভবিষ্যতে কেউ নির্বাচনে অংশ নেবে না। দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে থাকাবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়া দলের নেতাদের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। একইসঙ্গে তিনি রাজনৈতিক সহাবস্থান ও সুস্থ স্বাভাবিক প্রতিযোগিতার পরিবেশ অবিলম্বে ফিরিয়ে আনতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

বুধবার বিকালে তার প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানিয়েছেন খালেদা।বুধবার প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে খালেদা জিয়া বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় স্থায়ী কমিটি সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সহ-সভাপতি শমসের মোবিন চৌধুরী, বীর বিক্রম, যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ, আমার উপদেষ্টা অধ্যাপক এম এ মান্নান, শামসুজ্জামান দুদু ও মোসাদ্দেক আলী, বিএনপি নেতা লুৎফুজ্জামান বাবর, আসলাম চৌধুরী, আবদুস সালাম পিন্টু ও আরিফুল হক চৌধুরীসহ বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলের বহু নেতা-কর্মী দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে রয়েছেন। এরা অনেকেই জাতীয় পর্যায়ের বিশিষ্ট রাজনীতিক, সাবেক মন্ত্রী এবং নিজ নিজ অঙ্গনে খ্যাতিমান ব্যক্তি। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বশত বিরোধীদলকে দমনের হীন উদ্দেশ্যে বিভিন্ন মিথ্যা ফৌজদারি মামলা এবং সরকারের আজ্ঞাবহ দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা সাজানো মোকদ্দমায় দীর্ঘদিন ধরে এসব নেতাদের অনেককেই বিনা বিচারে বন্দি রাখা হয়েছে।

তারা অনেকেই জাতীয় পর্যায়ের বিশিষ্ট রাজনীতিক, সাবেক মন্ত্রী এবং নিজ নিজ অঙ্গনে খ্যাতিমান ব্যক্তি। রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত বিরোধীদলকে দমনের হীন উদ্দেশ্যে বিভিন্ন মিথ্যা ফৌজদারি মামলা এবং সরকারের আজ্ঞাবহ দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা সাজানো মোকদ্দমায় দীর্ঘদিন ধরে এসব নেতাদের অনেককেই বিনা বিচারে বন্দি করে রাখা হয়েছে।খালেদা জিয়া বলেন, দেশে বর্তমানে আইনের প্রয়োগ, তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়াকে ক্ষমতাসীনদের ইচ্ছের বাহনে পরিণত করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালনের কোন সুযোগ রাখা হয়নি। আইন তার স্বাভাবিক গতিতে চললে, দেশে আইনের শাসন ও সুবিচারের সুযোগ থাকলে এসব ঘটনা ঘটতে পারতো না। সরকারের প্রতিহিংসার শিকার কেউ হলে তার প্রতিকার ও প্রতিবিধানের ব্যবস্থা থাকতো। কিন্তু সেসব ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়ে আইনগতভাবে মোকাবিলার পথ খুবই সংকুচিত করে ফেলা হয়েছে।

তিনি বলেন, এই পরিস্থিতিতে আমি দাবি করছি, বিএনপিসহ বিরোধী দলমতেরনেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মিথ্যা মামলাসমূহ অবিলম্বে প্রত্যাহার করে তাদেরকে মুক্তি দেয়া হোক। বিশেষ করে আমি অসুস্থ সিনিয়র নেতাদের মুক্তি ত্বরান্বিত করার দাবি করছি। বন্দি রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের জামিন লাভের স্বাভাবিক অধিকারও এখন সরকারের তীব্র বিরোধিতার মুখে ক্ষুন্ন হচ্ছে।

খালেদা বলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য যাদের দেশের বাইরে যাওয়ার আশু প্রয়োজন তাদেরকেও জামিন দেয়ার বিরোধিতা করা হচ্ছে। আমি এ ধরনের অমানবিক আচরণ পরিহার করার আহ্বান জানাচ্ছি। হামলা-মামলা ও অত্যাচার-উৎপীড়নে পর্যুদস্ত করে বিএনপির মতো একটি দলের স্বাভাবিক কার্যক্রমকে স্থবির করে দিয়ে ক্ষমতাসীনরা উল্লাস প্রকাশ করছে। গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ধারাকে এভাবে স্তব্ধ করে দিয়ে কেউ কখনও সুফল পায়নি। আমি ইতিহাস থেকে সেই শিক্ষা গ্রহণের জন্য ক্ষমতাসীনদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।একইসঙ্গে রাজনৈতিক সহাবস্থান ও সুস্থ স্বাভাবিক প্রতিযোগিতার পরিবেশ অবিলম্বে ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান তিনি। খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ সব জায়গায় অক্টোপাসের মতো জড়িয়ে আছে। এ কঠিন অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। আমরা শান্তি চাই, সহিংসতা চাই না।বিএনপির এসব নেতাকে রিমান্ডে নিয়ে দৈহিক মানসিক নির্যাতন চালানো হয়েছে দাবি করে খালেদা জিয়া আরও বলেন, ‘তাদের অনেকে বয়সে প্রবীণ এবং নানা ধরণের রোগে আক্রান্ত। কারাগারে সুচিকিৎসার অভাবে তারা অনেকেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

তিনি বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে বিএনপি নেতা নাসিরউদ্দিন পিন্টুকে রাজশাহী কারাগারে স্থানান্তরের পর সম্প্রতি তিনি কর্তৃপক্ষের নিষ্ঠুর অবহেলায় মৃত্যুবরণ করেন। গুরুতর অসুস্থ মির্জা আলমগীরকে সম্প্রতি তেমন কোনো চিকিৎসা না দিয়েই কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়েছে। খন্দকার মোশাররফ অজ্ঞান হয়ে বাথরুমে পড়ে যাবার পরেও তার তেমন কোনো চিকিৎসা হচ্ছে না। এসব ঘটনা তাদের পরিবারের সদস্যবৃন্দ এবং আমাদের জন্য গভীর উদ্বেগের।এই পরিস্থিতিতে আমি দাবি করছি, বিএনপিসহ বিরোধী দলমতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মিথ্যা মামলা সমূহ অবিলম্বে প্রত্যাহার করে তাদেরকে মুক্তি দেয়া হোক। বিশেষ করে আমি অসুস্থ সিনিয়র নেতাদের মুক্তি ত্বরান্বিত করার দাবি করছি।