দৈনিকবার্তা-নীলফামারী, ১২ মে: নীলফামারীর সৈয়দপুরে লঙ্কা বেচে টঙ্কা মিলছে না চাষিদের। প্রতিকেজি পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৪ টাকায়। ফলে মরিচ চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। এমনকি বাজারে মরিচ এনে তোলার খরচ ও ভ্যান উঠছে না। এবছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় সৈয়দপুরে ৫টি ইউনিয়নে মরিচের চাষ করা হয়।উপজেলার কামারপুকুর, বাঙালিপুর, খাতামধুপুর, কাশিরাম বেলপুকুর, বোতলাগাড়ি ইউনিয়নে উঁচু জমিতে মরিচের আবাদ করা হয়েছে। অনেক কৃষক সাথী ফসল হিসাবেও এর আবাদ করেছেন। এর মধ্যে বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের শ্বাসকান্দর, চেংমারি, পোড়ারহাট প্রভৃতি এলাকায় বিস্তীর্ণ জমিতে মরিচের আবাদ করা হয়েছে। ওই এলাকার কৃষক আব্দুল কাদের জানান, বর্তমানে কাঁচা মরিচের দাম নেই বললেই চলে। প্রতিকেজি ২/৩ টাকা হিসাবে পাইকাররা কিনছেন। এতে করে মরিচ তোলার শ্রমিক মজুরী ও ভ্যান ভাড়াও উঠছে না। ফলে তাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। প্রতিবছর এই সৈয়দপুরের বাজার থেকে পাইকাররা মরিচ কিনে বাইরের জেলায় পাঠাতো। কিন্ত এবারে দাম কমের কারণে তারাও খুব একটা মরিচ কিনছেন না।
পাইকারি বাজারের ক্রেতা শফিকুল ইসলাম জানান, যে হারে বাজারে মরিচ আসছে, সে হিসাবে ক্রেতা নেই। চাষিদের কাছ থেকে কাঁচা মরিচ কিনে মাত্র ৪ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হচ্ছে। আর খুচরা দোকানীরা সেই মরিচ ৮/১০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, এবছর উপজেলার সর্বত্র কাঁচা মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হোমায়রা মন্ডল জানান, কাঁচা মরিচের আশাতীত ফলন হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে কৃষি বিভাগের উপ-সহকারি কৃষি অফিসারদের তদারকি ও পরামর্শে কৃষকরা এই সাফল্য অর্জন করেছে। বর্তমানে বাজারে দাম না পাওয়ায় কৃষকদের মাঝে কিছুটা হতাশা বিরাজ করছে।
উপজেলার কৃষকরা প্রতিটি উৎপাদিত ফসলে একের পর এক দামে মার খাওয়ায় উৎপাদনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। চলতি বছর সার, বীজ, সেচ ও মজুরী দিয়ে বোরো আবাদ করেন এবং বাম্পান ফলনও হয়েছে। কিন্ত বাজারে ধান বিক্রি করে সেই উৎপাদন খরচও উঠছে না। একই অবস্থা আলুর ক্ষেত্রেও। বর্তমানে প্রতিবস্তা (৮৫ কেজি) আলু মাত্র ৭শ’ ৫০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। এভাবে উৎপাদিত ফসলে মার খাওয়ায় এখানকার কৃষকরা নিজস্ব পুঁজি হারিয়ে ফেলছেন। ছোট ও মাঝারি কৃষক ঘাটতি মোকাবেলায় জমিতে বিক্রিতে হাত দিয়েছেন বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।