দৈনিকবার্তা-নারায়ণগঞ্জ, ১১ মে: সাতখুনের মামলায় পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্র নিয়ে আদালতে আপত্তি জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি।এজাহারে থাকা কয়েকজনের নাম অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়ায় এবং কয়েকজনের নাম না আসায় সোমবার এই নারাজি আবেদন করেন সেলিনা। এদিন অভিযোগপত্র গ্রহণের উপর শুনানি হওয়ার কথা ছিল।নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম এইচ এম শফিকুল ইসলাম নারাজি আবেদন নিয়ে আগামী ৮ জুন এ বিষয়ে শুনানির দিন রেখেছেন।বাদীর আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন জানান, সেলিনা ইসলাম বিউটির দায়ের করা মামলার এজাহারের পাঁচ আসামিকে বাদ দেওয়া এবং আসামিদের জবানবন্দিতে আসা অনেকের নাম অভিযোগপত্রে না রাখায় নারাজি দেওয়া হয়েছে।সাত খুনের ঘটনায় দায়ের করা অপর মামলার বাদী নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পালকে আদালত পরবর্তী তারিখে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছে বলে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর কেএম ফজলুর রহমান জানান।
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত চাঞ্চল্যকর সাত খুনের ঘটনায় আদালতে দেওয়া দু’টি মামলার চার্জশিটের মধ্যে এক মামলার বাদী নারাজি দিয়েছেন। নিহত সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ওই নারাজি প্রদান করেন। তবে শুনানির সময়ে অপর মামলার বাদী উপস্থিত না হলেও তিনি চার্জশিটের ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করেন।সাত খুনের ঘটনায় প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ ৫ জনকে অপহরণ শেষে হত্যার ঘটনায় নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। এ মামলায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অন্যদিকে অ্যাডভোকেট চন্দন সরকার ও গাড়িচালক ইব্রাহিমকে অপহরণ ও হত্যা মামলার বাদী ছিলেন চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল। এ মামলায় আসামি অজ্ঞাত করা হয়েছিল। তবে চার্জশীটের ব্যাপারে কোনো ধরনের আপত্তি নেই চন্দন সরকারের পরিবারের।
গত ৮ এপ্রিল বুধবার আদালতে দায়ের করা চার্জশিটে ভারতের কলকাতায় গ্রেফতারকৃত সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নূর হোসেন এবং র্যাবের চাকরিচ্যুত তিনজন আলোচিত কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বিউটির মামলার এজাহারভুক্ত ৫ আসামিকে। অভিযুক্তদের মধ্যে নূর হোসেন ভারতে গ্রেফতার হলেও তাকে পলাতক দেখানো হয়েছে।নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও বিউটির মামলার আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান জানান, ত্রুটিপূর্ণ চার্জশিট ও এজাহারভুক্ত ৫ আসামিকে অব্যাহতি দেওয়ায় নারাজি দেওয়া হয়েছে।এদিকে সোমবারের শুনানিতে অভিযুক্ত ৩৫ আসামির মধ্যে ৩০ জনকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। চার্জশিটের বিরুদ্ধে আদালতপাড়ায় বিউটির সমর্থকেরা মানববন্ধন করেন। আসামিদের নিয়ে যাওয়ার সময়ে গাড়ি লক্ষ্য করে জুতাও নিক্ষেপ করেন তারা।২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় খান সাহেব ওসমান আলী জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সামনে থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, নজরুলের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার এবং তার ব্যক্তিগত গাড়িচালক ইব্রাহিম অপহৃত হন। ৩০ এপ্রিল বিকেলে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ৬ জন এবং ১ মে সকালে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।