3900-free_kinternet

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১০ মে: বাংলাদেশে রোববার থেকে চালু হলো বিনামূল্যে একটি বিশেষ ইন্টারনেট সেবা। এতে ফেসবুকের ইন্টারনেট ডট ওআরজি প্রকল্পের আওতায় ডেটা খরচ ছাড়াই পাওয়া যাবে ইন্টারনেট সেবা।ফেসবুকের প্রতিষ্ঠান ইন্টারনেট ডটওআরজি (রহঃবৎহবঃ.ড়ৎম) রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এই সেবা কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

সরকারি ওয়েব পোর্টাল, চাকরির খোঁজখবর, ই-কমার্স, অনলাইন মার্কেট প্লেস, শিক্ষা সম্পর্কিত তথ্য, নারী স্বাস্থ্য, আবহাওয়া বার্তা, সংবাদসহ ২৫টি ওয়েবসাইট ব্রাউজ করা যাবে।অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আপাতত রবির সিম ব্যবহার করে এ সেবা পাওয়া যাবে। পর্যায়ক্রমে সব মোবাইলফোন অপারেটর থেকে দেশের ১৬ কোটি মানুষের কাছে এই সেবা পৌঁছাবে দেওয়া হবে।

ফেসবুকের গ্লোবাল অপারেটর পার্টশিপের ডিরেক্টর মারকু মাকেলেইনেন বলেন, বিশ্বের ২০৬টি দেশের মধ্যে ১০ম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে তাঁরা এ সুবিধা দিচ্ছেন। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন রবির চিফ অপারেটিং অফিসার মাহতাব উদ্দিন আহমেদ।প্রাথমিকভাবে আটাশটি ওয়েবসাইট বিনামূল্যে দেখতে পারবেন একজন গ্রাহক। ক্রমে এই সংখ্যা বাড়ানো হবে।আর সেই সঙ্গে প্রয়োজনীয় আরো কয়েকটি ওয়েবসাইট ইন্টারনেট ডট ওআরজি’তে ব্যবহারের উপযোগী করে তৈরি করার কাজ চলছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইন্টারনেট ডট ওআরজি সেবার মাধ্যমে স্বাস্থ্য, খবর, চাকরি ও ই-সরকারি সেবার দুই ডজনের বেশি ওয়েবসাইট বিনা খরচায় ভিজিট করতে পারবেন।

এখন থেকে বিনা খরচে ২৫টি ওয়েবসাইট ব্রাউজ করতে পারবেন মোবাইল ফোন অপারেটর রবির ইন্টারনেট গ্রাহকরা।২৪এর মধ্যে রয়েছে সরকারি তথ্যাবলি, চাকরির খোঁজ-খবর, ই-কমার্স, অনলাইন মার্কেটপ্লেস, শিক্ষা সম্পর্কিত তথ্য, নারী স্বাস্থ্য, জরুরি নম্বর, আবহাওয়া বার্তার কয়েকটি ওয়েবসাইট। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের ইন্টারনেট ডট ওআরজি (িি.িরহঃবৎহবঃ.ড়ৎম) প্রকল্পের আওতায় গ্রাহকদের জন্য বিনা খরচের ইন্টারনেট সেবা এনেছে রবি।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে পলক বলেন, সরকার ফেইসবুকের সঙ্গে একমত যে বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিনামূল্যে ইন্টারনেট সেবা পওয়া একটি অধিকার। আজ একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হল।এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই যে ফ্রি ইন্টারনেট একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ দেশ গড়তে সহায়ক হবে।তিনি জানান, বাংলাদেশের ৪৪ লাখ মানুষ এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করেন, যা মোট জনসংখ্যার ২৭ শতাংশ। এ দেশে প্রতি ১২ সেকেন্ডে একজন ফেইসবুকে প্রোফাইল খুলছে, যা দেশের জন্মহারের চেয়েও বেশি।১১ কোটি তরুণ বাংলাদেশিকে তথ্য প্রযুক্তি খাতে দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করতে সরকারের লক্ষ্যের কথাও জানান প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ২৫টি ওয়েবসাইট যুক্ত হলেও ধীরে ধীওে প্রয়োজনীয় আরও অনেকগুলো ওয়েবসাইট এতে যুক্ত হবে। এটা কেবল শুরু। আশা করি, অন্য অপারেটররাও ধীরে ধীরে আমাদের এ উদ্যোগে এগিয়ে আসবে। ইন্টারনেট ডট ওআরজি অ্যাপের সাহায্যে মোবাইলে এবং সরাসরি কম্পিউটারে বিনা খরচে ওই সব ওয়েবসাইটের বিস্তারিত দেখা যাবে। অ্যাপের মাধ্যমে অথবা সরাসরি ইন্টারনেট ডট ওআরজিতে লগ ইন করে ওয়েবসাইটে ঢোকা যাবে।চলতি বছরের ফেব্র“য়ারিতে ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড’ চলাকালীন প্রথম বাংলাদেশে বিনামূল্যের ইন্টারনেট সেবা চালুর বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। তখন বাংলাদেশে প্রকল্পটি চালুর প্রতিশ্র“তি দিয়েছিল ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ।গত ২১ এপ্রিল এটুআই ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ এ প্রকল্প চালুর উদ্যোগ নিলেও কিছু কারিগরি জটিলতার কারণে তা সম্ভব হয়নি।ফেইসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ বিশ্বের ইন্টারনেট সুবিধাবঞ্চিত মানুষের দোরগোড়ায় ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে ইন্টারনেট ডট ওআরজি প্রতিষ্ঠা করেন। এটি একটি বৈশ্বিক অংশীদারিত্বমূলক উদ্যোগ।

সরকার, মোবাইল ফোন অপারেটর এবং অলাভজনক ও স্থানীয় কমিউনিটির সহায়তায় ইন্টারনেট বঞ্চিত বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষের ইন্টারনেট পৌছে দিতে কাজ করছে এ প্রকল্পটি।এশিয়া, আফ্রিকাসহ বিভিন্ন মহাদেশের ইন্টারনেট সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কাছে ইন্টারনেট পৌঁছানোই এর মূল লক্ষ্য।ইতোমধ্যে তানজানিয়া, কেনিয়া, কলাম্বিয়া, ঘানা, জাম্বিয়া ও ভারতে এ প্রকল্প চালু হয়েছে। দশম দেশ হিসেবে এখন বাংলাদেশও এ প্রকল্পের আওতায় আসলো। ফেইসবুকের পাশাপাশি এ উদ্যোগে রয়েছে স্যামসাং, এরিকসন, মিডিয়াটেক, ওপেরা সফটওয়্যার, কোয়ালকম ও নকিয়া।

ওয়েস্টিন হোটেলের অনুষ্ঠানে ইন্টারনেট ডট ওআরজি সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন ফেইসবুকের গ্লোবাল অপারেটর পার্টনারশিপের ডিরেক্টর মারকু মাকেলেইনেন।তিনি বলেন, এ পদক্ষেপটির মাধ্যমে সাধারণ ইন্টারনেট সেবাগুলো গ্রহণের মাধ্যমে সবাই তাদের জীবনমান উন্নয়নের সুযোগ পাবেন।রবি’র চিফ অপারেটিং অফিসার মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, সাধারণ মানুষের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে ইন্টারনেট সেবা প্রদান করতে আমাদের প্রতিশ্র“তির প্রতিফলন এই পদক্ষেপ। এর ফলে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে, যা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার পূর্বশর্ত।অনুষ্ঠানের আয়োজকরা জানান, কোনো ডাটা প্যাক কেনা না থাকলে ইন্টারনেট ডট ওআরজি ব্যবহারের সময়ও গ্রাহক তার পছন্দের প্যাকেজটি বেছে নিতে পারবেন। যদি ডাটা প্যাক না থাকে এবং গ্রাহক কোনো প্যাকেজ না কিনে ভিডিও কন্টেন্ট দেখতে চান, তবে পে-পার-ইউজের ভিত্তিতে চার্জ প্রযোজ্য হবে।অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রবি’র চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার সুপুন বীরাসিংহে, চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড পিপল অফিসার মতিউল ইসলাম নওশাদ প্রমুখ।