দৈনিকবার্তা-গোপালগঞ্জ, ৯ মে: গোপালগঞ্জে প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় আখি বাকচী (১৭) এক কলেজ ছাত্রীকে এসিড দিয়ে ঝলসে দিয়েছে রথিন ঘোষ নামে এক বখাটে যুবক। এসিডে তার মুখোমন্ডল, হাত, গলাসহ শরীরের ১০ শতাংশ ঝলছে গিয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। মারাত্মক আহতাবস্থায় প্রথমে তাকে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আজ শনিবার ভোর রাত তিনটার দিকে ঘরের ভিতর ঢুকে তার উপর এসিড ছুড়ে পালিয়ে যায় ওই বখাটে যুবক রথিন ঘোষ।এসিডের শিকার আখি বাকচী গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার টুঠামান্দ্রা গ্রামেরসুবাস বাকচীর মেয়ে। সে সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর সপ্তপল্লী মহাবিদ্যালয়ের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। চিকিৎসাধীন কলেজ ছাত্রী আখি বাকচী ও তার মা মমতা বাকচী জানিয়েছেন, পাশ্ববর্তী ঘোষালকান্দি গ্রামের সুধাংশু ঘোষের বখাটে ছেলে রথিন ঘোষ (২৫) দুই বছর ধরে প্রেম নিবেদন করে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। কিন্তু আঁখি ও তার পরিবার এ প্রস্তাব মেনে না নেয়ায় কয়েকবার হুমকি দেওয়া হয়। এ নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মুরব্বীদের নিয়ে শালিশ বৈঠক হয়।
কিন্তু হায়নারী ও জ্বালাতন না কমায় সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামে মামার বাড়ী গিয়ে পড়াশোনা করতে থাকে আখি। ধান কাটার মৌসুম হওয়ায় মাকে সাহায্য করতে সে মামা বাড়ি থেকে নিজেদের বাড়িতে আসে। এ সুযোগে বখাটে রথিন কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে আজ শনিবার ভোর রাত ৩টার দিকে কৌশলে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে আখির উপর এসিড ছুড়ে পালিয়ে যায়। এসময় আখি চিৎকার করলে পরিবারের লোকজন প্রথমে তাকে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। এসিডে তার মুখোমন্ডল, হাত, গলাসহ শরীরের প্রায় ১০ শতাংশ ঝলসে গেছে।
সদর উপজেলার সাহাপুর ইউপি চেয়ারম্যান বিনয় সরকার জানান, ২/৩ মাস আগে বিষয়টি আমি দু’পক্ষের সাথে কথা বলেছি। ছেলে এবং তার বাবাকে বলে দিয়েছিলাম যাতে মেযেটিকে আর হায়রানি ও জ্বালাতন না করে। মেয়েটিকে জ্বালাতন করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও ছেলেটিকে বলে দিয়েছিলাম।গোপালগঞ্জ ২৫০-শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ নিয়াজ আহম্মেদ জানান, এসিডে তার মুখোমন্ডল, হাত, গলাসহ শরীরের ১০ শতাংশ ঝলছে গিয়েছে। আমাদের এখানে যেহেতু বার্ন ইউনিট নেই সেহেতু তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে রিফার্ড করা হয়েছে।গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) সেলিম রেজা জানান, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।