দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৬ মে: প্রাঙ্গণেমোর নাট্যদল এ বছর এক যুগ পূর্ণ করল। ৬ মে প্রাঙ্গণেমোর এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ২০০৩ সালের এ দিনটিতে প্রাঙ্গণেমোর প্রতিষ্ঠিত হয়। দলের প্রথম প্রযোজনা ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘শ্যামা’ নৃত্যনাট্য অবলম্বনে ‘শ্যামাপ্রেম’ নাটকটি। এ নাটকের প্রথম মঞ্চায়ন হয়েছিল ২০০৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি। নাটকটি দেশে ও বিদেশে দর্শক নন্দিত হয়েছে।আগামী ৯ মে ‘শ্যামাপ্রেম’ নাটকের ৫০-তম প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর পরীক্ষণ থিয়েটার হলে সন্ধ্যা ৭টায়। রবীন্দ্রজয়ন্তীর বিশেষ প্রদর্শনী হিসেবে এবার ‘শ্যামাপ্রেম’ নাটকের ৫০-তম মঞ্চায়ন করা হচ্ছে।নাটকটির নাট্যরূপ দিয়েছেন শ্রী চিত্তরঞ্জন ঘোষ ও নির্দেশনা দিয়েছেন অনন্ত হিরা। নাটকটিতে অভিনয় করেছেন নূনা আফরোজ, অনন্ত হিরা, রামিজ রাজু, ইউসুফ পলাশ, নিজাম লিটন, শুভেচ্ছা, আশা, আবু হায়ত জসিম, রিগ্যান রতœ, জসিম, সুজন, সুজয়সহ আরো অনেকে। নাটকের কথা: ‘শ্যামাপ্রেম’ নাটকটির মূল উপজীব্য ভালোবাসা, স্বাধীনতা ও মানবতার চিরায়ত আকাঙ্খা। শ্যামা রাজ নর্তকী। গ্রামের সাধারণ এক কৃষক পরিবারের এই মেয়েটিকে কৈশোরে লুট করেছিল অত্যাচারী জমিদারের লোকেরা। ভাগ্যচক্রে রাজ নর্তকী হয়ে উৎকোচ আর বশীকরনের বাঁকা পথে অভ্যস্ত ‘শ্যামা’র প্রায় মরে যাওয়া স্বপ্নগুলো আরেকবার বেঁচে উঠে যাঁর সান্নিধ্যে, সে এক বিদেশী বনিক- প্রেমময় শৌর্যবান পুরুষ বজ্রসেন।
অন্যদিকে ছেলেবেলার হল্লাহাটির সাথী অভিমানী বিপ্লবী উত্তীয় প্রাণ দিয়ে ভালোবাসে শ্যামাকে। কিন্তু তার কাছে ধরা দেয়াটা হয়ে ওঠেনা শ্যামা-র। অন্যদিকে বজ্রসেনের সাথে স্বপ্নযুথের আকুলতায় শ্যামা প্রত্যাখান করে প্রতাপশালী অমাত্ত সায়নের আয়োজিত ভোজসভায় গীতনৃত্যের আহবান। অপমানজ্ঞানে বৈরী হয় সায়ন- বজ্রসেনকে ‘গুপ্তচর’ সাব্যস্ত করে আটক করে এবং আয়োজন শুরু হয় তার শিরচ্ছেদের। যেই উত্তীয় তার ভালোবাসার প্রতিদানে কোনোদিন শ্যামার কাছ থেকে কিছুই পায়নি, সেই বজ্রসেনকে বাঁচাতে আতœদানে প্রবৃত্ত হয়। শ্যামার কাছ থেকে এক অসাধারণ মুগ্ধতায় ভালোবাসার স্বীকৃতি পায় উত্তীয়।
কুট-চালে সিদ্ধহস্ত রাজকোটালের বন্দোবস্তে বজ্রসেনকে ছেঁড়ে দেয়া হয় আর ‘বজ্রসেন’ পরিচয়ে উত্তীয়কে শিরচ্ছেদে হত্যা করা হয়। বজ্রসেন ফিরে আসে ঠিকই, কিন্তু সব জানতে পেরে ঘৃনায়, অপমানে আতœঘাতী হতে বের হয়ে যায়। চিত্ত স্থির হলে আবার ফিরে আসে, শ্যামাকে সঙ্গে করে যাত্রা শুরু করে মৃত্যুঞ্জয়ী উত্তীয়র খোঁজে, অন্ধকার থেকে মুক্তির খোঁজে। এই গল্পে তাই উত্তীয় অমর হয়ে থাকে স্বাধীনতা ও ভালোবাসার এক আলোকসামান্য প্রতীক হয়ে।