DoinikBarta_দৈনিকবার্তা Du-logo-1424929897

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৬ মে: লিখিত কোন ছাত্রলীগের কমিটি না থাকলেও গেস্ট রুম নির্যাতনের প্রতিবাদ করায় সাধারণ ছাত্রদের ওপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে আলী আহসান নামের এক ছাত্র আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কমিটি বিহীন তথাকথিত ছাত্রলীগ নেতা আরিফকে পুলিশে দিয়েছে হল কর্তৃপক্ষ। আরিফ ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের ৪র্থ বর্ষের এবং হলের সক্রিয় ছাত্রলীগ কর্মী।অনিয়মের প্রতিবাদ করায় ছাত্রলীগ কর্মীদের মারধরের শিকার হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দুই শিক্ষার্থী।মঙ্গলবার রাতে আলাদা দুটি ঘটনায় আহত তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাসুদ আল মাহাদী ও দ্বিতীয় বর্ষের আলী আহসান ভূইয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন।দুই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সৌমিত্র ধর ও আরিফ নামে দুইজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে।এদের মধ্যে সৌমিত্র নিজেকে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বলে দাবি করেছেন, যিনি জগন্নাথ হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শান্ত ধরের ছত্রছায়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকতেন বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।

আর আটক আরিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। তিনি হলে ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী।প্রথম ঘটনাটি ঘটে রাত সোয়া ১০টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের অক্টোবর স্মৃতি ভবনের ক্যান্টিনে। সেখানে মারধর করা হয় মাসুদ আল মাহাদীকে।মাসুদের সঙ্গে থাকা সহপাঠী মীর আরশাদুল হক জানান, তারা রাতের খাবার খেতে ওই ক্যান্টিনে গিয়েছিলেন। সেখানে তাদের পাশে আরও দুজন খাবারের অপেক্ষায় বসে ছিলেন।ক্যান্টিন বয় এসে ওই দুজনের কাছে টোকেন চাইলে তারা টোকেন ছাড়াই খাবার আনতে বলেন। ক্যান্টিন বয় খাবার আনতে দেরি করায় মাসুদ ওই দুজনকে বলে, টোকেন নিয়ে এলে দ্রুত খাবার পাওয়া যাবে।এসময় ওদের একজন বলে ওঠে, তুই আমাকে চিনিস? আমি টোকেন নেব কেন? তোরা কোন হলের’।উত্তরে তারা সূর্যসেন হলের কথা বললে ওই দুজন ফোন করে আরও ২০-২৫ জনকে ডেকে এনে মাসুদকে মারধর করে বলে আরশাদুল জানান।

খবর পেয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অসীম সরকার ঘটনাস্থলে এসে সৌমিত্র ধর ও অনিক নামে দুজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরে সৌমিত্রকে শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক মাজাহারুলের কাছে হস্তান্তর করা হয়।অনিকের ব্যাপারেও একাডেমিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন অধ্যাপক অসীম ।বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রোক্টর আমজাদ আলী বলেন, তদন্ত করে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।জগন্নাথ হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সুপ্রিয় কুণ্ড রাজেষ বলেন, ঘটনার কথা শুনেছি, সৌমিত্র ধর হলের বহিরাগত। আর অনিক হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মী।এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে হল শাখা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অন্যদিকে রাত সাড়ে ১১টার দিকে গেস্ট রুম দখলের প্রতিবাদ করে বিজয় একাত্তর হলে মারধরের শিকার হন আলী আহসান।ঘটনার সূত্রপাত গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সোহেল তানভীরকে হলের গেস্ট রুমে ডেকে নেওয়াকে কেন্দ্র করে। সোহেল তানভীর জানান, হলে ছাত্রলীগ কমিটির পদপ্রত্যাশী আরিফের সমর্থকরা গেস্ট রুম দখলে রাখতে প্রতিদিনই সাধারণ শিক্ষার্থীদের ফোন করে সেখানে ডেকে নিত।মঙ্গলবার রাতে আমাকে গেস্ট রুমে ডেকে নিলে আমি বিষয়টি ফোনে বিভাগের সিনিয়র আলী আহসানকে জানাই। আহসান ভাই গেস্ট রুমে এসে এর প্রতিবাদ করলে আরিফ সঙ্গীদের নিয়ে তাকে মারধর করে।অভিযোগ পেয়ে পরে হল কর্তৃপক্ষ প্রোক্টরিয়াল বডির মাধ্যমে আরিফকে আটক করে শাহাবাগ থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয় বলে জানান সোহেল।বিজয় একাত্তর হলের প্রাধ্যক্ষ এ জে শফিউল আলম ভূইয়া জানান, ঘটনা তদন্তে হলের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক রবিউল হককে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি করা হবে। কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।