দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৩ মে: ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে বা বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস আজ। ১৯৯১ সালে ইউনিস্কোর ২৬তম সাধারণ অধিবেশনের সুপারিশ মোতাবেক জাতিসংঘ ১৯৯৩ সাল থেকে এ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সাংবাদিকতার স্বাধীনতা ও মুক্ত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠার মৌলিক নীতিমালা অনুসরণ, বিশ্বব্যাপি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মূল্যায়ন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ প্রতিহত করার শপথ গ্রহণ এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ক্ষতিগ্রস্ত ও জীবন দানকারী সাংবাদিকদের স্মরণ ও তাদের স্মৃতির প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে বিশ্বব্যাপি সাংবাদিক সংগঠনগুলো দিবসটি পালন করে থাকে।
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালন উপলক্ষে বাংলাদেশেও বিভিন্ন সংগঠন পৃথক পৃথকভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশে এমন এক সময়ে এবার মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালিত হচ্ছে যখন শাসকগোষ্ঠী গণমাধ্যমের ওপর দলন ও নিপীড়ন চালাচ্ছে বলে বিভিন্ন সময় অভিযোগ করে আসছে সাংবাদিক সংগঠনগুলো। সাংবাদিক সংগঠন ছাড়াও, গণমাধ্যমের ওপর অযাচিত হস্তক্ষেপ, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনী হত্যাসহ গণমাধ্যমকর্মীদের নিরাপত্তা ঝুঁকির পরিপ্রেক্ষিতে গভীর উদ্বেগ ও হতাশা প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সরকার তার আগের মেয়াদে একদিকে যেমন তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ এবং জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশ (সুরক্ষা প্রদান) আইন-২০১১ প্রণয়ন করেছে, অন্যদিকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (সংশোধন) আইন-২০১৩ এর ৫৭ ধারা সংশোধন এবং জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা-২০১৪ তে বেশকিছু ধারা সংযোজিত করেছে। যা গণমাধ্যম ও ব্যক্তির স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করার ঝুঁকি সৃষ্টি করেছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, সম্প্রতি একদিকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক সাংবাদিক নির্যাতন ও অন্যদিকে ব্লগার হত্যা এবং সাগর-রুনী হত্যার ঘটনার বিচারের দীর্ঘসূত্রতা সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ঘটনার দুই বছর অতিক্রান্ত হলেও এখনো পর্যন্ত সাগর-রুনী হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হওয়া, ব্লগার অভিজিতের হত্যাকারীদের চিহ্নিত করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতা এবং সাংবাদিক নির্যাতনের সাম্প্রতিক ঘটনা সংবিধান স্বীকৃত স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকারকে খর্ব করেছে। তিনি বৈষম্যমূলকভাবে কোনো কোনো সাংবাদিকের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রবেশে অলিখিত নিষেধাজ্ঞা আরোপেরও নিন্দা জানান।
উল্লেখ্য, আওয়ামী মহাজোট সরকারের আমলে ১৮জন সাংবাদিক খুন হয়েছেন, আহত হয়েছেন প্রায় দুই হাজার সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ৪৮ সাংবাদিকের ওপর হামলার রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকার বাইরের ভিন্ন মতের ২০০ পত্রিকার ডিক্লারেশন ডিসিদের দিয়ে বাতিল করে দেয়া হয়েছে। অনলাইন গণমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের জন্য নীতিমালা করা হচ্ছে। একুশে টিভির কর্তৃপক্ষও হয়রানিমূলক মামলা ও হুমকির শিকার।