1430655205

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৩ মে: ই-কমার্স ব্যবসাকে আগামী ৫বছরের জন্য কর অব্যাহতি দেয়ার দাবি জানিয়েছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলনকক্ষে প্রাক-বাজেট আলোচনায় বেসিসের মহাসচিব উত্তম কুমার পাল আগামী ৩ থেকে ৫ বছরের জন্য ই কমার্স ব্যবসায় কর অব্যাহতিসহ এ খাতের খুচরা বিক্রির ওপর ভ্যাট প্রত্যাহার এবং বিদেশি সফটওয়্যার আমদানির ওপর শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব দেন। কৃষি, পোল্ট্রি, ইলেকট্রনিক্স মোবাইল আমদানিকারক, কম্পিউটার সমিতি এবং গাড়ি আমদানিকারক সংগঠন বারভিডার সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন—আয়কর নীতি বিভাগের সদস্য পারভেজ ইকবাল, মূসক বাস্তবায়নের সদস্য এনায়েত হোসেন এবং শুল্কনীতির জ্যেষ্ঠ সদস্য ফরিদ উদ্দিন।

সভায় মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নিজাম উদ্দিন জিটু বলেন ,প্রায় ৩০ শতাংশ সেট অবৈধভাবে আমদানি হচ্ছে। এতে সরকার বড় অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অপর দিকে, সত্ আমদানিকারকরা অসম প্রতিযোগিতার মুখে পড়ছেন। তাই মোবাইল সেট আমদানিতে শুল্ক ফাঁকি বন্ধে সেটপ্রতি এক শ থেকে দেড় শ টাকা শুল্ক আরোপের প্রস্তাব দেন তিনি।মোবাইল ফোন আমদানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিমেজবাহ উদ্দিন বলেন,বিটিআরসির তথ্য অনুসারে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৯৬ শতাংশ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকেন। অথচ কম্পিউটার পণ্যের ওপর কর সাড়ে ৬ শতাংশ। পক্ষান্তরে মোবাইলের ওপর করহার ২১ দশমিক ৭৫ শতাংশ, যা অসামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই মোবাইলের করহার যৌক্তিক এবং সারচার্জ বাতিলের প্রস্তাব দেন তিনি। ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আমিরুল হাকিম গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেন।

সভায় বাংলাদেশ চা সংসদের চেয়ারম্যান আরদাসীর কবির বলেন,চা আমদানির ওপর মাত্র ৮৪ শতাংশ শুল্ক রয়েছে। এ সুযোগে নিম্ন মানের চা আমদানি হচ্ছে। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত চা আমদানির ওপর ১১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। তাই সেখানে বাংলাদেশি চায়ের চাহিদা থাকা সত্ত্বেও উচ্চ শুল্কের কারণে রফতানি সম্ভব হচ্ছে না। এ দিকে, আমাদের চায়ের উত্পাদন ব্যয় ১৮৭ থেকে ২০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থায় কম শুল্কের সুবিধা নিয়ে চা আমদানি অব্যাহত থাকলে দেশের এ শিল্প ধ্বংসের মুখে পড়বে। তাই আগামী বাজেটে চা আমদানির ওপর যৌক্তিক হারে শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব দেন তিনি।

রাবার বাগান মালিক সমিতির সভাপতি মির্জা আনোয়ার হোসেন বলেন,১৮টি দেশ রাবার উত্পাদন করে থাকে। এ সব দেশ রাবার উত্পাদন ও বিপণনে প্রণোদনা দেয়। কিন্তু কৃষিপণ্য হিসেবে রাবার অন্তর্ভুক্ত হলেও এ ধরনের কোনো সুবিধা আমরা পাই না। ল্যাটেক্সের ওপর ভ্যাট প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেন তিনি। কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি মোজাম্মেল হক চৌধুরী বিদ্যুত্ বিলের ওপর ভ্যাট প্রত্যাহার ও আলু থেকে উত্পাদিত পণ্য রফতানিতে প্রণোদনা ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব দেন।

ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মনসুর হোসেন বলেন—দেশে ভুট্টা উত্পাদন হলেও পোল্ট্রি ফিড তৈরি করতে ভুট্টা বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। তাই ভুট্টা আমদানিতে অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেন তিনি।এ দিকে, দেশি ফল থেকে উত্পাদিত সব ধরনের জুসে ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাগ্রো-প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন (বাপা)।
আগামী বাজেটে প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্যে করপোরেট কর কমানোর দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি।প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সভাপতি হামিদ শরীফ বলেন, হাইব্রিড গাড়ি জ্বালানি সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব। চাহিদা থাকা সত্ত্বেও দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতারা এ সব গাড়ি কিনতে চাচ্ছেন না। তাই এ সব গাড়ি আমদানিতে প্রণোদনা অথবা বিশেষ অবচয় সুবিধা দিলে জ্বালানি তেলের ওপর চাপ কমবে।