দৈনিকবার্তা-কলাপাড়া, ৩ মে: কুয়াকাটায় বেড়িবাঁধের কান্ট্রি সাইটের স্লোপসহ টপ পর্যন্ত কাটা তারের বেড়া দিয়ে দখল করে নিয়েছে একটি আবাসন ব্যবসায়ী গ্রুপ। আবাসন কোম্পানি ইউনিক গ্রুপ কুয়াকাটার পূর্বখাজুরা এলাকায় এভাবে বেড়িবাঁধসহ পানিউন্নয়ন বোর্ডের অধিগ্রহণ করা জমি পর্যন্ত দখল করে নিচ্ছে। ফলে পাউবো তাদের বাঁধের নিয়ন্ত্রণ হারাতে বসেছে। সাগরের ভাঙ্গনের কবল থেকে কুয়াকাটা সৈকতসহ বেড়িবাঁধ রক্ষায় সরকার স্লোপ সংরক্ষণ প্রকল্পের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে যাচ্ছে আর সেখানে বাঁধ দখলে স্থানীয় মানুষসহ পর্যটকরা উৎকন্ঠা প্রকাশ করেছেন। বাঁধসহ স্লোপ দখল করতে সেখানে ঝুপড়ি ঘর বানিয়ে বসবাস করা অন্তত ৪৬টি জেলে পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। উচ্ছেদ হওয়া জেলে হুমায়ুন কবির, শামসু ও জাহাঙ্গীর জানালেন, সরকারের খাঁস জমিতেও জোতদারের কারণে থাকতে পারলেন না।
সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা গেছে, মাঝিবাড়ি থেকে খানিকটা সামনে এগিয়ে বাঁধ দখলের চিত্র। ৪৮ নম্বর পোল্ডারে বেড়িবাঁধের কান্ট্রি সাইটের সবটুকু, প্রায় টপসহ কাটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিগ্রহন করা প্রায় ৫০ ফুট প্রস্থ জমি অন্তত চার শ’ ফুট দীর্ঘ এলাকা দখল করা হয়েছে। এসব বাঁধের স্লোপে দরিদ্র জেলে জনগোষ্ঠী যুগের পর যুগ বসবাস করে আসছিল। তাদেরকে প্রভাব খাটিয়ে উচ্ছেদ করা হয়েছে। আবাসন কোম্পানি ইউনিক গ্রপ এভাবে বাঁধ দখল অব্যাহত রেখেছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার ভাই আাবুল হোসেন মোল্লা এসব কাজ তদারকি করছেন বলে স্থানীয়রা কেউ ভয়ে টু-শব্দ করছেন না। আবুল হোসেন মোল্লা জানান, কাউকে উচ্ছেদ করা হয় নি। বাঁধের স্লোপে এবং নিচে যারা বসবাস করছিল তাদেরকে নিয়ে সমঝোতার ভিত্তিতে সব করা হয়েছে। এজন্য প্রত্যেক পরিবারকে আট হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৫৫ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে।
জেলেসহ স্থানীয় মানুষ জানান, স্লোপ দখলের ফলে বাঁধটির ডিজাইন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নরম হয়ে যাচ্ছে বাঁধের স্লোপের বালুমাটি। ফলে সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের আঘাতে বাঁধটি প্রবল ক্ষতির শঙ্কায় রয়েছে। এব্যাপারেও আবুল হোসেন মোল্লা জানান, বাঁধের স্লোপ দখল করা হয় নি। পানি উন্নয়ন বের্ডের সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে। স্লোপে কিংবা অধিগ্রহণ করা জমিতে কোন ধরনের স্থাপনা তোলা হবেনা। শুধু সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য ফুলের বাগান করা হবে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়াস্থ নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবুল খায়ের জানান, যারা বাঁধের স্লোপে কাটাতারের বেড়া দিচ্ছেন তারা সম্পুর্ণ মিথ্যা বলেছেন, এধরনের কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আদৌ তার জানাও নেই। বিষয়টি তিনি সরেজমিনে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন।