দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২ মে: প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে হবে উন্নত দেশ। আর এটি গড়ে তুলবে তরুণরাই ।নিজেদের মেধা, উদ্যম ও কর্মস্পৃহার মাধ্যমে আত্ম-কর্মসংস্থানে এগিয়ে আসতে দেশের তরুণ সমাজের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।শনিবার রাজধানীর খামারবাড়ীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটে ‘ইয়ং বাংলা অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সমাজসেবা, উদ্ভাবন ও গবেষণা, ব্যবসায়িক উদ্যোগ, শিল্পকলাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখছেন এখন ৩০ জন তরুণের হাতে পুরস্কার তুলে দেন তিনি।
তরুণদের হাতে আগামীর বাংলাদেশ উল্লেখ করে জয় বলেন, আত্ম-কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য সরকার সব ধরনের সহায়তা দেবে।উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলাতে বাংলাদেশ নিয়ে পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে তিনি আরো বলেন, সরকার তরুণদের দিকে লক্ষ্য দিয়ে, তাদের মাধ্যমেই উন্নত বাংলাদেশ দেখতে চায়। সে লক্ষ্যেই তরুনদেরকে উন্নয়নমুখী কাজে সম্পৃক্ত করতে সরকার এগিয়ে যাচ্ছে।জয় বলেন, এক সময়ে বাংলাদেশের তরুণ সমাজ জয় বাংলা শব্দ উচ্চারণ করতে লজ্জা পেত, ভয় পেত। স্বাধীনতার এ শ্লোগানকে বিকৃত করে তরুণদের বিভ্রান্ত করা হয়েছে।
সে অবস্থা এখন নেই উল্লেখ করে ভবিষ্যতে যাতে জয় বাংলা বলতে বাংলাদেশের কোনো মানুষ লজ্জা অথবা ভয় না পায়, সে বিষয়ে তরুণদের সজাগ থাকার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টাতরুণদের দেয়া এ সম্মাননা ভবিষ্যতে তাদের কর্মস্পৃহা আরো বাড়িয়ে দেবে বলে মনে করেন সজীব ওয়াজেদ জয়।২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার যে লক্ষ্য ঠিক করেছে আওয়ামী লীগ, তা অর্জনে বর্তমান তরুণদের ওপরই ভরসা করছেন প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়।আমরা ফোকাস করেছি এখন ভবিষ্যতের দিকে। আমরা ফোকাস করেছি তরুণদের দিকে। কারণ ভবিষ্যৎ গড়ে তুলবে তরুণরা। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ হচ্ছে তরুণদের হাতে। আপনারাই এগিয়ে নিয়ে যাবেন বাংলাদেশকে।
জয় বলেন, আমরা তো (আওয়ামী লীগ) বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিই, তবে ভবিষ্যতে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আসুন আমরা একসঙ্গে বাংলাদেশকে, বাংলাদেশের মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যাই।অনুষ্ঠানে বক্তব্যে তারুণ্যের জয়গান গাওয়ার এক পর্যায়ে জয় রসিকতাচ্ছলে বলেন, আমাদের তরুণ প্রতিমন্ত্রী পলক জানালেন, ৩৫ বছর বয়সের পর না কি আর তরুণ থাকা যায় না। আমাকেও তিনি বৃদ্ধ বানিয়ে দিলেন। সেন্টার ফর রিসার্স অ্যান্ড ইনিশিয়েটিভের (সিআরআই) উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকও মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।সিআরআই ‘ইয়ং বাংলা’ প্লাটফর্ম গড়ে তুলেছে, যেখানে তরুণরা যুক্ত হয়ে উদ্যোক্তা হতে নানা ধরনের সহায়তা পাচ্ছেন। ইয়ং বাংলার প্লাটফর্মেরই একটি উদ্যোগ হচ্ছে জয় বাংলা ইয়ুথ পুরস্কার।
সিআরআইয়ের চেয়ারপারসন হিসেবে রয়েছেন জয়। সিআরআইর ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং ইয়ং বাংলার আহ্বায়ক সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাকও বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানে।এ উদ্যোগের পেছনের ইতিহাস সম্পর্কে জয় বলেন, সিআরআই থেকে প্রথমে আমরা তরুণদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করলাম। সেখানে দেখলাম, এখনকার তরুণদের মধ্যে দেশের প্রতি, দেশের মানুষের প্রতি অসাধারণ আকর্ষণ আছে। তারা দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে চাই, পরিশ্রম করতে চায়।এবং তাদের নিজস্ব এক একটি ধারণা আছে, পরিকল্পনা আছে, উদ্যোগ আছে; যেগুলো অসাধারণ। অনেককেই দেখলাম, নিজেদের মতো করে গ্রাম এলাকায় বা নিজ অঞ্চলে, নিজেদের উদ্যোগে, নিজেদের পরিশ্রমে, নিজেদের অর্থে কাজ করে যাচ্ছে।এসব উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা করতেই ইয়ং বাংলা প্লাটফর্ম গঠন ও জয় বাংলা পুরস্কার চালু করা হয়েছে বলে জানান জয়।তবে শুধু পুরস্কার বা স্বীকৃতির মধ্যে সহযোগিতা আবদ্ধ থাকবে না বলেও জানান তিনি।শুধু পুরস্কার ও স্বীকৃতি নয়, আমরা আরও কিছু উদ্যোগ নিয়েছি; এই তরুণদের জন্য। তাদেরকে আরও সুযোগ ও সহযোগিতা করার জন্য আমরা সরকারের পক্ষ থেকে অনেক ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করেছি।আওয়ামী লীগ সরকারের পরিকল্পনা, পরিশ্রম ও ভিশনে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রীর পুত্র জয়।এই যে আমাদের পরিকল্পনা, শুধুমাত্র ২০২১ সাল পর্যন্ত না। আমাদের এখন পরিকল্পনা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।
এক্ষেত্রে তরুণদের উপর নিজের ভরসার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এটা তো আমাদের বর্তমান যে সিনিয়র নেতৃবৃন্দ আছেন, শুধু তারা তো পারবেন না। এটা পারবে আমাদের এই তরুণ নেতৃত্ব; আপনাদের সামনে যারাৃ। এটা পারবেন আপনারা; আজকে যারা স্বীকৃতি পেয়েছেন। এটা পারবে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম।এসময় পুরস্কার পাওয়া কয়েকজন তাদের সংগ্রাম ও স্বপ্নের গল্প বলেন। নানা প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে কীভাবে তারা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছেন সে গল্পও শোনান কয়েকজন। জয় বলেন, যারা পুরস্কার পেয়েছে তাদের গল্প শুনে আমি খুবই মুগ্ধ যে, তারা নিজের উদ্যোগে গ্রামে বসে, নিজের অর্থে, পরিবারের অর্থে গ্রামের কিছু মানুষের সহযোগিতা করছে। কেউ তাদেরকে সহযোগিতা করেনি। আমাদের ইয়ং বাংলার উদ্দ্যেশ্য হচ্ছে তাদেরকে সহযোগিতা করা।এসময় জয় বাংলা নামে পুরস্কার দেওয়ার ব্যাখ্যাও দেন সজীব ওয়াজেদ।জয় বাংলা মানে বাংলার জয়। জয় বাংলা শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের স্লোগান নয়, জয় বাংলা হচ্ছে আমাদের স্বাধীনতার স্লোগান, জয় বাংলা হচ্ছে বাংলাদেশের স্লোগান। বাংলার মানুষ বিজয়ী হবে। নিজের জোরে, নিজের শক্তিতে, নিজের রক্ত দিয়ে বাংলার মানুষ বিজয়ী হবে। সেটার মানেও হচ্ছে জয় বাংলা।তার জন্যই আমরা এ পুরস্কারের নাম দিয়েছি জয় বাংলা, বলেন জয়।সিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক সাব্বির শামসের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন প্রমুখ।