দৈনিকবার্তা-রিয়াদ, ২৯ এপ্রিল: সৌদি আরবের যুবরাজ মোকরেন বিন আবদুল আজিজ বিন সৌদকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি বাদশাহ সালমানের উত্তরাধিকারী ছিলেন। মোকরেনের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন দেশটির বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মেদ বিন নায়েফ। তিনি বাদশাহ সালমানের ভাইয়ের ছেলে। এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৌদ বিন ফয়সাল বিন আবদুল আজিজ আলে সৌদকে অপসারণ করে তার জায়গায় আবদেল বিন আহমেদ আজ-জুবাইয়রকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আজ-জুবাইয়র এর আগে আমেরিকায় সৌদি রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন।
বার্তা সংস্থা এএফপির এক খবরে বলা হয়েছে, আজ বুধবার সৌদি আরবের বাদশা সালমান এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। সৌদি রাজসভার বিবৃতির উদ্ধৃতি দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, মোকরেনকে উপপ্রধানমন্ত্রীর পদ থেকেও সরিয়ে দেয়া হয়েছে। নতুন যুবরাজ হয়েছেন নায়েফ। তাকে উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবেও নিয়োগ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ এক ফরমানে এসব পদক্ষেপ নিয়েছেন। একই ফরমানে অপসারণ করা হয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা সৌদ বিন ফয়সাল বিন আবদুল আজিজ আলে সৌদকে। সৌদ বিন ফয়সাল চার দশক ধরে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। স্বাস্থ্যগত কারণে তিনি দায়িত্ব পালনে অপারগতার কথা জানিয়েছেন বলে ফরমানে দাবি করা হয়েছে।
মুকরিন হলেন সৌদি রাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল আজিজ বিন সৌদের শেষ ছেলে। তাকে অপসারণের মধ্য দিয়ে সৌদি ক্ষমতার কেন্দ্র বিন্দুতে চলে এলেন সৌদি রাজবংশের দ্বিতীয় প্রজন্ম বা আবদুল আজিজের নাতিরা। এই প্রথম আবদুল আজিজের কোনো নাতিকে যুবরাজ করা হলো। এ নিয়োগের মধ্য দিয়ে দেশটির ক্ষমতার ওপর সৌদি রাজপরিবারের সৌদাইরি শাখার নিয়ন্ত্রণ জোরদার হলো। সাবেক রাজা আব্দুল্লাহর সময়ে এ শাখার প্রভাব তলানিতে এসে ঠেকেছিল।
এদিকে ফরমানে নিজ ছেলে প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমানকে উপ-যুবরাজ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন সৌদি রাজা। প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন এবং ইয়েমেনে সৌদি জোটের বিমান হামলা তারই নেতৃত্বে অব্যাহত রয়েছে। মোকরেনের বিরুদ্ধে নেয়া পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে দেশটির প্রয়াত বাদশাহ আবদুল্লাহ আমলের সবশেষ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকেও সরিয়ে দেয়া হলো। গত ২৩ জানুয়ারি মারা যান আবদুল্লাহ। এরপর সৌদি আরবের মসনদে বসেন সালমান। ক্ষমতায় বসেই প্রয়াত বাদশাহর আমলের বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে সরিয়ে দেন তিনি।