দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৯ এপ্রিল: জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদকে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দেয়া মৃত্যুদন্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে আনা আপিল শুনানি আজ শুরু হয়েছে। বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চে মুজাহিদের আপিল শুনানি আজ শুরু হয়। বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
মুজাহিদের পক্ষে শুনানি শুরু করেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত রয়েছেন এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এদিকে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর আপিল মামলাও শুনানির জন্যে একই বেঞ্চে আজ বুধবারের কার্যতালিকায় ৫ নম্বরে রয়েছে। মুজাহিদের আপিলটি কার্যতালিকার চার নম্বরে ছিল।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেয়া মৃত্যুদন্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে ২০১৩ সালের ১১ আগস্ট সুপ্রিমকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল দায়ের করেন মুজাহিদ। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই মুজাহিদকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ডাদেশের রায় দেয় ট্রাইব্যুনাল-২। আসামিপক্ষের আইনজীবী তাজুল ইসলাম বলেন, “আপিলে আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদকে খালাসের আরজি পেশ করা হয়েছে। ৯৫ পৃষ্ঠার মূল আপিলে খালাসের পক্ষে ১১৫টি যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে। ৯৫ পৃষ্ঠার মূল আপিলের সঙ্গে তিন হাজার ৮০০ পৃষ্ঠার নথিপত্র জমা দেয়া হয়েছে।” মুজাহিদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনীত সাতটি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটি ট্রাইব্যুনালে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বাসস’কে বলেন, “মুজাহিদের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করেনি। তবে আপিলে আসামীপক্ষের শুনানির সময় রায় বহাল রাখার পক্ষে আর্জি পেশ করে যুক্তি উপস্থাপন করবে রাষ্ট্রপক্ষ।” এর আগে আপিল বিভাগে আরো তিনটি মামলা নিম্পত্তি হয়েছে। ২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। আপিলে ২০১৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগ এ মামলার চুড়ান্ত রায়ে কাদের মোল্লাকে মৃত্যুদন্ড দেয়। যা ওই বছর ১২ ডিসেম্বর কার্যকর করা হয়। ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের নায়েবে আমীর দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির আদেশ হয়। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের রায়ে গত বছর ১৭ সেপ্টেম্বর তার সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদন্ডের আদেশ দেয় আপিল বিভাগ। ২০১৩ সালের ৯ মে জামায়াতের আরেক সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানকে মৃত্যুদন্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শেষে কামারুজ্জামানকে ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদন্ডের রায় বহাল রেখে গত বছর ৩ নভেম্বর রায় দেয় আপিল বিভাগ। এ মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় বের হওয়ার পর গত ৫ মার্চ রায় রিভিউর আবেদন করে কামারুজ্জামান। শুনানি শেষে রিভিউ আবেদন গত ৬ এপ্রিল খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগ। এরপর গত ১১ এপ্রিল রাতে এ রায়ও কার্যকর করা হয়।