দৈনিকবার্তা-কিলাক্যাপ (ইন্দোনেশিয়া), ২৯ এপ্রিল: ইন্দোনেশিয়ায় মাদক পাচারের দায়ে বুধবার ফায়ারিং স্কোয়াডে আটজনের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়েছে। এদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার দুই নাগরিকসহ সাত বিদেশী রয়েছে। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হয়েছে। খবর এএফপি’র। এই ঘটনাকে ‘নিষ্ঠুর’ আখ্যায়িত করে ক্যানবেরা ইন্দোনেশিয়া থেকে তার রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করেছে। ইন্দোনেশীয় কর্তৃপক্ষ দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় নুসাকাম্বাঙ্গান দ্বীপের কড়া নিরাপত্তা বেষ্টিত কারাগারে মাঝরাতের পর (গ্রিনিচ মান সময় ১৭০০টায়) সাত বিদেশীসহ আট জনের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করেছে। তবে ১১টার সময় ফিলিপাইনের এক নাগরিককে প্রাণদন্ড থেকে মুক্তি দেয়া হয়।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী টনি অ্যাবট বলেন, ‘আমরা ইন্দোনেশিয়ার সার্বভৌমত্বকে শ্রদ্ধা করি। তবে দেশটিতে যা হয়েছে তার নিন্দা জানাচ্ছি।’ অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক অ্যান্ড্রু চ্যান ও মিউরান সুকুমারানের বিরুদ্ধে তথা-কথিত ‘বালি নাইন’ মাদক পাচারকারী চক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ আনা হয়। প্রায় এক দশক আগে ইন্দোনেশিয়ায় চ্যান ও মিউরানকে মৃতুদন্ড দেয়ার পর অস্ট্রেলিয়া তার নাগরিকদের প্রাণ রক্ষার জন্য ব্যাপক প্রচারণা চালায়। এমনকি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীও তাদের মৃত্যুদন্ড কার্যকর না করতে বারবার অনুরোধ জানান। এর আগে অস্ট্রেলিয়া মাদক সংক্রান্ত ঘটনার জের ধরে তার কোন রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করেনি। এটি এ ধরনের প্রথম ঘটনা। অ্যাবট বলেন, ‘সাজাটি অত্যন্ত নিষ্ঠুর ও অপ্রয়োজনীয়।’
এ জন্যই ইন্দোনেশিয়ায় নিযুক্ত অস্ট্রেলীয় রাষ্ট্রদূত পল গ্রিগসনকে প্রত্যাহারের নজিরবিহীন সিদ্ধান্তটির প্রয়োজন ছিল বলে জানান তিনি। এক বিবৃতিতে সাজাপ্রাপ্তদের পরিবারের সদস্যরা জানান, ‘জেলখানায় তারা তাদের পক্ষে যতটা করা সম্ভব ছিল তারা তা করেছে। তারা অন্যান্য কয়েদীদের সাহায্য করেছে। গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে সুকুমারান অন্যান্য বন্দীকে ইংরেজি ও আর্ট শিক্ষা দেয়।’ পরিবারের সদস্যরা আরো বলেন, ‘তারা প্রাণভিক্ষা চেয়েছিল। কিন্তু কেউ তাদের আবেদনে কর্ণপাত করেনি। যারা তাদের সমর্থন করেছিল তাদের প্রতি তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। আমরাও তাদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ।’ অভিযোগ ও তথ্য প্রমাণের ওপর সন্দেহ থাকায় প্রাণদন্ডাদেশ প্রাপ্ত ফিলিপাইনের নাগরিক দুই সন্তানের জননী ভেলোসোর সাজা কার্যকর করা হয়নি।