surfing1430229191

দৈনিকবার্তা-কক্সবাজার, ২৮ এপ্রিল: ১৯৯৪ সাল।অস্ট্রেলিয়ার একজন পর্যটক সর্বপ্রথম কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতের নীল জলে সার্ফিংয়ের বোট ভাসান। তার কাছে থেকে সেই বোটটি কিনে নিয়েছিলেন জাফর নামের একজন যুবক। আস্তে আস্তে তিনি শিখে নেন সার্ফিং। তিনিই বাংলাদেশের প্রথম সার্ফার। বাংলাদেশে সার্ফিংয়ের আইকন। জাফরের পদাঙ্ক অনুসরণ করে আজ হাজারো ছেলে-মেয়ে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে সার্ফিং করছে।তাদের নিয়েই ব্র্যাক চিকেনের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ সার্ফিং ফেডারেশন আয়োজন করেছিল প্রথম জাতীয় সার্ফিং প্রতিযোগিতা ২০১৫। ২৭ ও ২৮ তারিখ দুইদিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতা শেষ হয়েছে। বিভিন্ন ক্যাটেগোরিতে ৭০ জন সার্ফার অংশ নিয়েছিল এই প্রতিযোগিতায়। পেশাদার/সিনিয়র ক্যাটেগোরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন কামাল। দ্বিতীয় হয়েছেন ফরহাদ। আর তৃতীয় হয়েছেন কামরুল।

এদিকে জুনিয়র বালক প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন সেলিম। দ্বিতীয় হয়েছেন জাহেদ। আর তৃতীয় হয়েছেন সাগর। বালিকা বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন রিফা। দ্বিতীয় হয়েছেন সোহা মহারাজ এবং তৃতীয় হয়েছেন সুমি।পেশাদার বিভাগের চ্যাম্পিয়নকে প্রাইজমানি হিসেবে দেওয়া হয়েছে ২০ হাজার টাকা, একটি ক্রেস্ট ও একটি ব্র্যান্ড নিউ সার্ফিং বোট। রানার্স আপ পোয়েছেন ১৫ হাজার টাকা ও ক্রেস্ট। আর তৃতীয় স্থান অধিকারকারী পেয়েছেন ১০ হাজার টাকা ও একটি ক্রেস্ট। এদিকে মহিলা ও বিগেনার বিভাগের প্রথম স্থান অর্জনকারী পেয়েছেন ১০ হাজার, দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী ৬ হাজার ও তৃতীয় স্থানধারী ৪ হাজার টাকা ও ক্রেস্ট পেয়েছেন।

বিকেলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পুরস্কার বিতরণ করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রনালয়ের সচিব খোরশেদ আলম চৌধুরী। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আলী হোসেন, পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠানের সাইফুর রহমান, ডিজিএম (ব্র্যাক ডেইরি অ্যান্ড ফুড এন্টারপ্রাইজ), হসপিটালিটি পার্টনার বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের ম্যানেজার মার্কেটিং ও পিআর পারভেজ আহমেদ চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সার্ফিং অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এফ.এম. ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন), সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী ও ট্রেজারার আমিনুল ইসলাম লিটনসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ।

এক বক্তব্যে খোরশেদ আলম চৌধুরী বলেন, ‘সরকার ক্রিকেটের পর সার্ফিংকে প্রমোট করার চিন্তভাবনা করছে। সার্ফিং খুবই রোমাঞ্চকর ও আকর্ষণীয় একটি খেলা। এই জলক্রীড়ার মাধ্যমে দেশকে প্রমোট করা সম্ভব। আমি একবার অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিলাম। সেখানে সমুদ্র সৈকতে কিছু সার্ফারদের সঙ্গে কথা বলছিলাম। তারা আমাকে বলল বাংলাদেশের সার্ফার জাফরকে তারা চেনে। আমি বাংলাদেশ সরকারের সচিব। আমাকে না চিনলেও তারা জাফরকে চেনে। আমি তখন গর্ব করে তাদের বলেছিলাম আমি জাফরের দেশের লোক। সার্ফিং নিয়ে আমাদের অনেক পরিকল্পনা রয়েছে।’

বাংলাদেশ সার্ফিং অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এফ.এম. ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন) সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আমরা সফলভাবে প্রথম জাতীয় সার্ফিং প্রতিযোগিতা শেষ করতে পেরেছি। যারা চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ হয়েছে তাদের অভিনন্দন জানাই। আমরা কয়েকমাস অন্তর অন্তর সার্ফিং প্রতিযোগিতা আয়োজন করার চেষ্টা করব। সার্ফিং দ্য ন্যাশন্সের সদস্যরা আমাদের সার্ফারদের বিচারকার্য পরিচালনা করার উপর প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। যাতে তারা ঘরোয়া যেকোনো প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করতে পারে। আমি আশা করছি আপনারা সব সময় আমাদের পাশে থাকবেন।’

সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী, ‘আমি আসলে কি বলব ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। আমি খুবই আবেগাপ্লুত। ভাবতে পারিনি যে শেষ পর্যন্ত এই প্রতিযোগিতাটা সম্পন্ন করতে পারব। আমাদের যারা সাহায্য সহযোগিতা করেছেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।