DoinikBarta_দৈনিকবার্তাsaj-13

দৈনিকবার্তা-কলাপাড়া, ২৮ এপ্রিল: কলাপাড়ায় এ বছর বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে, কিন্তু কৃষকের মুখে হাসি নেই। উৎপাদন খরচের চেয়েও ধানের দাম কম থাকায় কৃষক চরম বিপাকে পড়েছেন। তারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন ফের বোরোর আবাদে। এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বোনা আউশের আবাদে। সরকারীভাবে কলাপাড়ায় ১৫০ মেট্রিক টন বোরো ধান ২১ টাকা কেজি দরে ক্রয়ের সিদ্ধান্ত রয়েছে। কিন্তু কৃষকরা এর থেকেও কোন সুবিধা পাচ্ছেন না। সরকারের উদাসীনতাকে তারা দায়ী করেছেন।

কলাপাড়ায় সরকারীভাবে বোরো কেনার কার্যক্রম শুরু হয়নি। এ সুযোগকে পুঁিজ করে দালাল-ফড়িয়া মধ্যস্বত্ত্বভোগী চক্র এখন পানির দামে ধান কিনছে। এ বছর ৪৬ কেজিতে এক মণ হিসাবে ধানের দাম দালালরা নির্ধারণ করেছে মাত্র চার শ’ টাকা। যেখানে গত বছর এ ধান বিক্রি করেছে ছয় শ’ টাকা মণ দরে। এমনকি চার শ’ টাকা মন দরে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে। তা আবার নগদ নয়, বাকিতে। কৃষকের দেয়া তথ্যানুসারে, এক বিঘা অর্থাৎ ৩৩ শতক জমিতে বোরোর আবাদ করতে সবকিছু নিয়ে প্রায় সাত হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। যেখানে ১৬-১৯ মন ফলন পেয়েছেন। যা বিক্রি করলে লাভ নেই। ফলে কৃষক পড়েছেন দুরবস্থায়।

নীলগঞ্জ আইপিএম ক্লাব সভাপতি কৃষক সুলতান গাজী জানান, নিজেদের অর্থায়ন ও উন্নয়ন সংস্থা আভাসের সহযোগিতায় লবন পানির প্রবেশ মুখে কালভার্ট ও খালে বাধ দিয়ে মিঠা পানি সংরক্ষনের মাধ্যমে বোরো চাষ করেছেন। কিন্তু লাভ হয়নি দাম কমে যাওয়ায়। একই দাবি কৃষক মাসুম চৌধুরির। কৃষকের দেয়া তথ্যানুসারে এ বছর শুধুমাত্র নীলগঞ্জ ইউনিয়নের দুই শ’ একর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। কিন্তু বাজারমূল্যেও ন্যায্যতা না থাকায় উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন অধিকাংশ চাষী। হাবিব গাজী জানান, ২০০৫ সাল থেকে বোরো চাষ করছি। পর্যায়ক্রমে চাষের জমি বাড়িয়েছি। কৃষক দুলাল চৌধুরী জানান, মিষ্টি পানি নিশ্চিত কারার জন্য সরকারী কোন উদ্যোগ নেই। তারপরও বোরোর আবাদ করেছেন। ধানের সঠিক বাজার মূল্য পাওয়া প্রয়োজন। কৃষি অফিসের প্রত্যক্ষ সহযোগিতাসহ সরকারীভাবে ধান ক্রয়ের সুযোগ থাকার প্রয়োজন বলে এ কৃষক মনে করেন। নয়তো আবার বোরো চাষ বিমুখ হয়ে পড়বে কৃষকরা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মসিউর রহমান জানান, উপজেলায় ৮১০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। সরকারীভাবে বোরো চাষে কোন সহায়তা ছিল না। তবে বোরোর চেয়ে বৃষ্টি নির্ভর আউশ ও আমন আবাদে কৃষককে তারা পরামর্শ দেন।