দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৭ এপ্রিল: প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষপাত সহ্য করা হবে না।তাদের কোনোরকম শৈথিল্য নির্বাচন কমিশন বরদাস্ত করবে না।সোমবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।সংবাদ সম্মেলনে তিন সিটি নির্বাচনে সার্বিক প্রস্তুতি ব্যাখ্যা করে এর সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরও নিরপেক্ষতা বজায় রাখার নির্দেশ দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, তিন সিটির নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ হয়ে দায়িত্ব পালন করবেন।কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ বলেন, সকল ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা এবং নির্বাচন পরিচালনায় সংশ্লিষ্ট সকলকে নিরপেক্ষতা বজায় রেখে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিচ্ছি। এর ব্যত্যয় হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।তিনি বলেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ ও চট্টগ্রামের ভোটারদের আশ্বস্ত করতে চাই রেয, আপনারা নিরাপদে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়ে নির্বিঘ্নে বাসায় ফেরত যাবেন। নির্বাচনে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনে ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৮০ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হবে। এর মধ্যে থাকবে ১০০ প্লাটুন বিজিবি সদস্য।প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ভোটের দিন কেন্দ্রের ভেতরে সশস্ত্র অবস্থায় ১০ জনসহ ২২ জন থাকবে সার্বক্ষণিক অবস্থান করবে। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে ১২ জন সশস্ত্রসহ সদস্যসহ ২২ জন দায়িত্ব পালন করবেন।এ ছাড়া ভোটকেন্দ্রের বাইরে প্রতিটি ওয়ার্ডে পুলিশ ও র্যাবের ২টি করে মোবাইল টিম সার্বক্ষণিক টহল দেবে।
সংবাদ সম্মেলনে সিইসি বলেন, পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের পরও জনগণের স্বস্তির জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্তও নিয়েছে ইসি। তারা ঢাকার তিনটি ও চট্টগ্রামের দু’টি জায়গায় অবস্থান করবে। থাকবে ১৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এর পাশাপাশি শতাধিক বিদেশী পর্যবেক্ষক থাকবেন।সিটি নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হলে বরদাশত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ।কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন, কোনো প্রকার পক্ষপাতিত্ব ইসি বরদাশত করবে না। সবাইকে নিরপেক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিচ্ছি। এর লঙ্ঘন বরদাশত করা হবে না।তিনি বলেন, তিন সিটি নির্বাচনে ৪৯ হাজার ৩৩৩ জন কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার জন্য, ব্যাপক সংখ্যায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য থাকবে। সাধারণ কেন্দ্রে ২২ ও ঝুঁকিপূর্ণ ২৪ জন করে ফোর্স দায়িত্ব পালন করবে।
সিইসি বলেন, সব মিলিয়ে ভোটের দিন প্রায় ৮০ হাজার সদস্য নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া ভোটারদের আশস্ত করার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। দ্রুত সময়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর জন্য সেনা জোওয়ানরা ক্যান্টনমেন্টে প্রস্তুত অবস্থায় থাকবে। ডাকলেই তারা মুভ করবেন। তাদের সঙ্গে ১৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও থাকবেন।তিনি বলেন, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ফেল করলে রিটার্নিং কর্মকর্তা সেনাবাহিনীকে ডাকবে। এছাড়া যদি এমন কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় যে, সেনাবাহিনীকে প্রয়োজন তখন তাদের ডাকা হবে।তিন সিটি করপোরেশনে ভোটের আগের দিন সোমবার নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি তুলে ধরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি ভোটারদের স্বতফূর্তভাবে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।প্রার্থীদের উদ্দেশে কাজী রকিব বলেন, আইন ভঙ্গ করবেন না, আইন মেনে চলুন। আইন অমান্য করলে কঠোরভাবে দমন করা হবে।নর্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে। রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করুন, পালন না করলে কঠোর ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানান, তিন সিটিতে র্যাব-বিজিবিসহ ৮০ হাজার আইন-শৃঙ্খলাকারী বাহিনীর সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে থাকবেন মোট ৫৯ হাজার ৩৬৩ জন কর্মকর্তা। কোনো কেন্দ্রে সমস্যা দেখা গেলে তাৎক্ষণিকভাবে আইন শৃংখলা রক্ষার জন্য সেনাবাহিনীকে ডাকা হবে। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করবেন।