DoinikBarta_দৈনিকবর্তা Shah_Nawaz1429796894

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৬ এপ্রিলঃ আর মাত্র একদিন পর অথাাৎ ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচন।রোববার (২৬ এপ্রিল) মধ্যরাত থেকে বন্ধ হচ্ছে সকল ধরণের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ও মিছিল-মিটিং। অর্থাৎ ২৬ এপ্রিল মধ্যরাত ১২টা থেকে ৩০এপ্রিল রাত ১২টা পযর্ন্ত প্রার্থী বা তার পক্ষে কোন ব্যক্তি কোন ধরনের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা করতে পারনে না।

সিটি করপোরেশন নির্বাচন বিধিমালা ২০১০ এর বিধি ৭৪(১)অনুসারে,কোন নির্বাচনী এলাকার ভোটগ্রহণ শুরুর পূর্ববর্তী ৩২ ঘণ্টা, ভোট গ্রহণের দিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১২টা এবং ভোট গ্রহণের দিন রাত ১২টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে উক্ত নির্বাচনী এলাকায় প্রার্থী বা তার পক্ষে কোন ব্যক্তি নির্বাচনী জনসভা, অনুষ্ঠান বা তাতে যোগদান এবং কোন মিছিল বা শোভাযাত্রা সংঘটিত বা তাতে যোগদান করতে পারবেন না।উল্লেখিত বিধি অমান্য করলে. উপ-বিধি (৩) অনুযায়ী, উল্লিখিত আইন ভঙ্গ করলে তিনি ন্যূনতম ৬ মাস ও অনধিক ৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।এ বিষয়ে দক্ষিণ সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তা মিহির সারওয়ার মোর্শেদ বলেন, নির্বাচনী আইন অনুযায়ী রোববার মধ্যরাতে নির্বাচনী প্রচারণা শেষ সময়সীমা। ভোট গ্রহণ শুরুর ৩২ ঘন্টা আগে থেকে ভোট গ্রহনের দিন ও এর পরবর্তী ৪৮ ঘন্টা সকল প্রচারপ্রচারণা উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ থাকবে। এরপর যদি কোন প্রার্থী বা তার সমর্থিত কোন ব্যক্তির পক্ষে থেকে কোন নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালালে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য,তিন সিটিতে মোট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা ১১৮০ জন। এর মধ্যে উত্তরে মেয়র পদে ১৬ জন, সাধারণ কাউন্সিলর ২৮১ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ৮৯জন। দক্ষিণে মেয়র পদে ২০ জন। সাধারণ কাউন্সিল পদে ৩৯০ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৯৭ জন। একই ভাবে চট্টগ্রামে মেয়র পদে লড়াইয়ে রয়েছেন ১২ জন,সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২১৩ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৬২ জন।ঢাকা উত্তর সিটিতে সাধারণ ওয়ার্ড ৩৬, সংরক্ষিত ওয়ার্ড ১২; ভোটার ২৩ লাখ ৪৫ হাজার ৩৭৪ জন (পুরুষ ১২,২৪,৭০১, নারী ১১,২০,৬৭৩)। ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে সাধারণ ওয়ার্ড ৫৭, সংরক্ষিত ওয়ার্ড ১৯; ভোটার ১৮ লাখ ৭০ হাজার ৭৫৩ জন (পুরুষ ১০,০৯,২৮৬, নারী ৮,৬১,৪৬৭)। এবং চট্টগ্রাম সিটিতে সাধারণ ওয়ার্ড ৪১, সংরক্ষিত ওয়ার্ড ১৪; ভোটার ১৮ লাখ ১৩ হাজার ৪৪৯ জন (পুরুষ ৯,৩৭,০৫৩, নারী ৮,৭৬,৩৯৬)। ভোটকেন্দ্র উত্তরে ১০৯৩ ও ভোটকক্ষ ৫৮৯২টি, দক্ষিণে ভোটকেন্দ্র ৮৮৯ ও ভোটকক্ষ ৪৭৪৬টি এবং চট্টগ্রামে ভোটকেন্দ্র ৭১৯ ও ভোটকক্ষ ৪৯০৬টি। ঘোষিত তফসিল অনুসারে আগামী ২৮ এপ্রিল এ তিন সিটিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে,২৮এপ্রিল মঙ্গলবার ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।নির্বাচন কমিশন ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী আগামী ২৮ এপ্রিল মঙ্গলবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।নির্বাচনে ভোটগ্রহণ উপলক্ষে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন এলাকার সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ এবং সরকারি, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ ও ভোটগ্রহণের সুবিধার্থে ২৮ এপ্রিল মঙ্গলবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।এক তথ্য বিবরণীতে আরও বলা হয়, ওই সিটি করপোরেশন এলাকায় যদি ওই তারিখে কোনো পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় তাহলে ওই পরীক্ষার কেন্দ্রসমূহ ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও কর্মচারীগণ সাধারণ ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবেন।

অন্যদিকে, সেনাবাহিনী রেডি আছে, আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কোনো ধরনের গণ্ডগোল হলেই সেনাবাহিনী চলে আসবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ। রোববার নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ বলেছেন, নির্বাচনে কোনো ধরনের গোলমাল হবে না। তবে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় সেনাবাহিনী প্রস্তুত থাকবে। রোববার দুপুরে নির্বাচন কমিশনের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ। এসময় সব ধরনের ভয়ভীতিথেকে মুক্ত থেকে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটদানের আহ্বান জানিয়েছে তিনি।নির্বাচন কমিশনার বলেন, ভোটারদের অনুরোধ করব, তারা যেন ফেষ্টিভ মুডে ভোট কেন্দ্রে যান। এই নির্বাচনে অন্য সময়ের তুলনায় তিন-চারগুণ বেশি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হবে।

তিনি বলেন, বিধি অনুযায়ী রোববার মধ্যরাত থেকে প্রচারণা বন্ধ হবে কেউ প্রচারণা করলে আচরণবিধি লঙ্ঘিত হবে। নির্বাচনী এলাকায় যাদের কোনো কাজ নেই, যারা বসবাসও করেন না। এ সব বহিরাগতদের নির্বাচনী এলাকার বাইরে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।শাহ নেওয়াজ বলেন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনের দিন সকাল থেকে পরদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত সব ধরনের যানচলাচল বন্ধ থাকবে। তবে ইমার্জেন্সির ক্ষেত্রে যান চলাচলের অনুমতি দেয়া হবে। তিনি বলেন, নির্বাচনের দিন সংশিষ্ট এলাকায় সব অফিস আদালত বন্ধ থাকবে। এছাড়া নিজ নিজ এলাকাতেই ভোটাররা ভোট দিবেন। কাজেই যান চলাচলের কোনো প্রয়োজন নেই। শাহ নেওয়াজ বলেন, আমরা রোববার মধ্যরাত থেকে সব ধরনের পুচার বন্ধ করেছি। নির্দিষ্ট সময়ের পর এসএমএম এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ কোনো ধরনের প্রচার চালানো যাবে না। প্রচার চালালে আচরণ বিধির বরখেলাপি হবে। তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে অবশ্যই আমাদের নজরদারি থাকবে। রিটানিং কর্মকর্তা ও ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দেয়া আছে। যারাই বিধি লংঘন করবেন তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হবেইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, নির্বাচনে ৮০ হাজারের মতো ফোর্স মোতায়েন থাকবে। এছাড়া তিন সিটির জন্য তিন ব্যাটালিয়ন সেনা সদস্য রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে মোতায়েন থাকবে।আগামী ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করবে ইসি