দৈনিকবার্তা-ঢাকা ২৫ এপ্রিল: আসন্ন ২৮/৪/২০১৫খ্রি. মঙ্গলবার অনুষ্ঠিতব্য ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সামগ্রিক আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলেন, ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম,পিপিএম(বার)।
আজ ২৫/৪/২০১৫খ্রি. শনিবার দুপুরে ডিএমপি’র মিডিয়া সেন্টারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার ডিসিসি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ৩ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা তুলে ধরে বলেন, নির্বাচন পূর্ববর্তী নিরাপত্তা ব্যবস্থা, নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও নির্বাচন পরবর্তী নিরাপত্তা ব্যবস্থা ডিএমপি’র পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে। কমিশনার ঢাকা সিটি নির্বাচনের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উল্লেখ পূর্বক অবাধ সুষ্ঠু ও নিরেপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে ডিএমপি’র পক্ষ থেকে গৃহীত প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা মুলক ব্যবস্থা ও বিধি বিধান তুলে ধরেন। তিনি বলেন,
ভোটারগণ যাতে নির্বিঘেœ ও স্বাচ্ছন্দ্যে ভোট প্রদান করতে পারেন, ভোট কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা সার্বিক পর্যবেক্ষণ এবং ফলাফল ঘোষণা করার পরে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা প্রদানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার থাকবে। নিরাপত্তা প্রদানে প্রতি ওয়ার্ডে ২টি করে মোবাইল পার্টি’র টহল থাকবে।
মোবাইল পার্টি গুলোতে মোবাইল সেট ও ওয়ারলেস সেটসহ প্রয়োজনীয় যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকবে। নিরাপত্তা প্রদানে প্রতি ৩টি ভোট কেন্দ্রের জন্য ১টি স্ট্রাইকিং রিজার্ভ থাকবে।
১টি প্রধান কন্ট্রোলরুম, ৪টি সাব-কন্ট্রোল রুমের ব্যবস্থা থাকবে।
সাব কন্ট্রোল রুমসমূহের অবস্থান:
(ক) গুলশান চেন্সারী
(খ) তেজগাঁও থানা
(গ) পিওএম
(ঘ) আব্দুল গণি রোড
বিআইসিসি ও নাট্যমঞ্চের জন্য ২ জন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।
নির্বাচনের আগের দিন দক্ষিণে ৮টি ও উত্তরে ৮টিসহ মোট ১৬টি স্থান থেকে ব্যালট সামগ্রী বিতরণ করা হবে। সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকবে।
২৫ এপ্রিল ২০১৫ দিবাগত রাত ১২.০০টা থেকে ২৯ এপ্রিল ২০১৫ তারিখ সকাল ০৬.০০ টা পর্যন্ত মোটর সাইকেল চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা থাকবে।
ভোট গ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিনের পূর্ববর্তী মধ্যরাত থেকে অর্থাৎ ২৭ এপ্রিল ২০১৫ তারিখ দিবাগত রাত ১২.০০ টা থেকে ২৮ এপ্রিল ২০১৫ তারিখ দিবাগত রাত ১২.০০ টা পর্যন্ত বেবিটেক্সি/অটোরিক্সা/ ইজিবাইক/টেক্সিক্যাব/ মাইক্রোবাস/ জীপ/পিকআপ/কার/বাস/ট্রাক/টেম্পো প্রভৃতি যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকবে।
শুধুমাত্র রিটার্র্নিং অফিসারের অনুমতি সাপেক্ষে নির্বাচনী এজেন্ট, দেশী-বিদেশী পর্যবেক্ষক, দেশী-বিদেশী সাংবাদিক, নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, বৈধ পরিদর্শকসহ জরুরী সেবামূলক কাজে নিয়োজিত এ্যাম্বুলেন্স, ফায়ারসার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ডাক, টেলিযোগাযোগ কার্যক্রমের উপরে এ নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।
কন্ট্রোল রুমে সার্বক্ষণিক কর্মকর্তা উপস্থিত থাকবেন, নির্বাচন সংক্রান্ত জরুরী কোন তথ্য প্রদান করা হলে তাৎক্ষনিকভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিজিবি’র পর্যাপ্ত টহলের ব্যবস্থা থাকবে।
কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ ভোট কেন্দ্রে প্রয়োজনে মেটাল ডিটেক্টর এর ব্যবস্থা থাকবে।
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশানুসারে সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অবস্থানকৃত বহিরাগতদের ২৫ এপ্রিল ২০১৫ দিবাগত রাত থেকে এলাকা ত্যাগ করতে বলা হচ্ছে। ভোট গ্রহণের দিন নির্বাচন কমিশনের আদেশ অগ্রাহ্য করে বহিরাগতরা অবৈধ প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
২৫ এপ্রিল ভোর ৬.০০ টা থেকে ১ লা মে রাত ১২.০০ টা পর্যন্ত সব ধরণের আগ্নেয়াস্ত্র বহন, প্রদর্শন নিষিদ্ধ।
২৬ এপ্রিল মধ্যরাত ১২.০০টা হতে পরবর্তী ৪৮ ঘন্টা পর্যন্ত অর্থাৎ ৩০ এপ্রিল/২০১৫ রাত ১২.০০ টা নির্বাচনী এলাকায় কোন জনসভা আহবান, অনুষ্ঠান, মিছিল বা শোভাযাত্রা সংগঠিত করা বা অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন।
ভোট কেন্দ্রের ৪০০ গজের মধ্যে কোন প্রার্থী কোন ক্যাম্প স্থাপন করতে পারবেন না।
কোন অবস্থাতেই কোন পর্যবেক্ষক ভোট প্রদানের স্থানে (গধৎশরহম চষধপব/গোপন কক্ষ) প্রবেশ করতে পারবেন না।
শুধুমাত্র অনুমোদিত আইডি কার্ড সম্বলিত পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকবৃন্দ আইডি কার্ড প্রদর্শনপূর্বক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। উল্লেখ্য যে, প্রত্যেক পর্যবেক্ষক সংস্থা প্রতি দলে অনধিক ৫ জন করে একাধিক ভ্রাম্যমান পর্যবেক্ষণ দল নিয়োগ করতে পারবেন। তারা ভোটকেন্দ্রের প্রতি বুথে স্বল্প সময়ের জন্য অবস্থান ও কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, সিটি নির্বাচনে ৭০ প্লাটুন বিজিবি সদস্য থাকবে। প্রত্যেব বড় কেন্দ্রে ১২ জন করে পুলিশ ও আনসার সদস্য থাকবে। বড় কেন্দ্রে ১২ টি ও ছোট কেন্দ্রে ১০ টি আগ্নেয়াস্ত্রসহ পুলিশ নিরাপত্তা দায়িত্ব পালন করবে। তিনি বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষ ও সম্মানিত নগরবাসীকে ডিসিসি নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য ডিএমপি’কে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান।