দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৫ এপ্রিল: শনিবার আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে ভারতের বিহার ও উত্তর প্রদেশসহ উত্তরাঞ্চলীয় এলাকায় ব্যাপক হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো এখন পর্যন্ত বিহারে ২৫ জন ও উত্তর প্রদেশে আটজন ও পশ্চিমবঙ্গে তিনজনের মৃত্যু হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে। এছাড়া, আরও অন্তত কয়েকশ’ মানুষ আহত হয়েছে বলেও জানিয়েছে।
শনিবার বাংলাদেশ সময় ১২টা ১১ মিনিটে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর অদূরে রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৯ মাত্রার এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। মূল কম্পনের আগে ও পরে অনুভূত হয় আরও বেশ কয়েকটি কম্পন।
মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস‘র তথ্য অনুযায়ী, প্রথম ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল রাজধানী কাঠমাণ্ডুর অদূরে পোখরার কাছে লামজুং। এর ২৬ মিনিট পর দ্বিতীয় এবং ৮ মিনিট পর তৃতীয় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। বিভিন্ন মাত্রার মোট ১৫-১৭টি কম্পন অনুভূত হয় বলে স্থানীয়দের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, ভূমিকম্পে দিল্লি, বিহার, উত্তর প্রদেশ, ওড়িশা, পাঞ্জাব, রাজস্থানসহ বিভিন্ন জায়গা কেঁপে কেঁপে ওঠে।বিহার থেকে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা জানান, রাজ্যের মতিহারি, সীতামারি, দ্বারভাঙা ও ছাপড়া থেকে বেশি প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির খবর আসছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মতিহারি ও সীতামারি এলাকা। এসব স্থানে দেয়াল চাপা পড়ে এবং ভূমিকম্প সৃষ্ট বিপর্যয়ে অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়তে পারে।
সংবাদকর্মীরা আরও জানান, বিহারের বিশাল এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ঘর-বাড়ি, আবাস হারিয়ে অনেক মানুষ এখন পথে বসেছেন।ভূমিকম্পে আটজনের মৃত্যু হয়েছে উত্তর প্রদেশের কানপুরে। এছাড়া, আরও তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে পশ্চিমবঙ্গে। এ রাজ্যে ৪০ স্কুলশিক্ষার্থীসহ অন্তত শতাধিক আহত হয়েছে বলেও জানায় স্থানীয় সংবাদমাধ্যম।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা তাদের অবস্থানস্থল থেকে জানাচ্ছেন, বিভিন্ন স্থানে বাড়িঘর ধসে পড়ার খবর যেমন আসছে, তেমনি অনেক বড় বড় মার্কেট ও ভবনও হেলে পড়ার খবর আসছে। আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে রাজধানী দিল্লিসহ মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলের এলাকাগুলো থেকেও।এদিকে, ভূমিকম্পের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বাত্মক তৎপরতা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। মোদী নিজেই এ তৎপরতা দেখভাল করছেন। তিনি নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালার সঙ্গে কথাও বলেছেন এবং তাকে দুর্যোগ মোকাবেলায় যাবতীয় সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।