দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৫ এপ্রিল: প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাঈদ খোকন নিজেকে পুরান ঢাকার ছেলে বলে তাদের উন্নয়নের সুযোগ পেতে ভোট চাইলেও ওই এলাকায় মির্জা আব্বাসের নির্বাচনী প্রতীক মগর জোয়ার দেখছেন তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাস।এই জোয়ারে মির্জা আব্বাস মেয়র পদে বিজয়ী হবেন বলেও মনে করছেন তিনি।শনিবার সকালে পুরান ঢাকার মীর হাজিরবাগ এলাকায় ভোট চাইতে গিয়ে সাংবাদিকদের একথা বলেন আফরোজা।ঢাকা দক্ষিণে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আব্বাসের স্ত্রী বলেন, জনগণ একটা পরিবর্তন চায়। ‘গুম-খুন’র এই পরিস্থিতি বদলে দিতে চায়। তারা একটা স্বস্তির পরিবেশ চায়। আমি দিন-রাত ঘুরেছি এই এলাকায়। আমার কাছে মনে হয়েছে, পুরান ঢাকায় মির্জা আব্বাস বিপুল পরিমাণভাট পাবে এবং শতভাগ সফল হবে।পুরান ঢাকাতে আমি মগের জোয়ার দেখেছি। কেউ পুরান ঢাকার প্রার্থী পরিচয় দিয়ে এ এলাকার ভোট নিতে পারবেন না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
নাম উল্লেখ না করলেও এই সিটিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী সাঈদ খোকনকে ইঙ্গিত করে আফরোজা বলেন, মির্জা আব্বাস ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা। অন্যদিকে সরকারদলীয় যে প্রার্থী তিনি উত্তরের বাসিন্দা। নির্বাচিত হলেও জনগণ তাকে পাশে পাবে না। তাকে পেতে হলে মানুষকে উত্তরে যেতে হবে।অন্যদিকে মির্জা আব্বাসের জন্ম, বেড়ে ওঠা, বসবাস সব কিছুই দক্ষিণে। তিনি নির্বাচিত হলে জনগণ তাকে কাছে পাবে। মানুষ সেটা বুঝতে পেরেছে।ঢাকার সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ছেলে সাঈদ খোকনের পৈত্রিক বাড়ি পুরান ঢাকার বংশালের নাজিরাবাজারে। বনানীতেও তার একটি বাসা রয়েছে। দুই বাসা মিলিয়ে থাকেন খোকন।নির্বাচনী প্রচারে পারিবারিক রাজনৈতিক ঐতিহ্য এবং পুরান ঢাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে তাদের দীর্ঘদিনের সম্পকের বিষয়টিতে গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি।
অন্যদিকে মির্জা আব্বাসের পূর্বপুরুষের বাড়ি কিশোরগঞ্জে হলেও দীর্ঘকাল ঢাকার শাহজাহানপুর এলাকায় তাদের বসবাস। ওই এলাকা থেকে সংসদ সদস্যও নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।এর আগেও একবার ঢাকার মেয়র নির্বাচনে খোকনের বাবা হানিফের সঙ্গে আব্বাসের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পুরান ঢাকার ইস্যুটি সামনে এসেছিল।সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আফরোজা আব্বাস নির্বাচনী প্রচার শুরু করার সময় বিএনপিপন্থি পেশাজীবী নেতা অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ কিছুক্ষণ তাদের সঙ্গে ছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই উপাচার্য বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারের জন্য গঠিত আদর্শ ঢাকা আন্দোলন’র আহ্বায়ক।তিনি বলেন, এই নির্বাচন যদি সন্ত্রাস কবলিত হয়, যদি সুষ্ঠু নির্বাচন না হয়, তাহলে দেশের পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠবে এবং বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠতে পারে।সরকার দায়-দায়িত্ব না নিয়ে কাজ করার কারণে যদি সটা হয়, তার জন্য সরকারই দায়ী থাকবে। সরকারের ‘অত্যন্ত অনুগত’ নির্বাচন কমিশন দায়ী থাকবে। আসন্ন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আদর্শ ঢাকা আন্দোলন মনোনীত মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস শনিবার পশ্চিম যাত্রাবাড়ীর মীর হাজীরবাগ থেকে তাঁর স্বামীর পক্ষে গণসংযোগ শুরু করেন।এসময় আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক সংসদ সদস্য হেলেন জেরীন খান, সাইফুল ইসলাম পটু, শাম্মী আক্তার, কবি আবদুল হাই শিকদার, জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।গুড়িগুড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে আফরোজা আব্বাস গণসংযোগ চালান এবং ভোটারদের বাড়ী বাড়ী যান। এসময় মিসেস আফরোজা আব্বাস সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবও দেন।
পরে তিনি দিনভর যাত্রাবাড়ী, স্বামীবাগসহ নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ করেন। আফরোজা ভোটার ও সাধারণ মানুষদের সাথে কথা-বার্তা বলেন, লিফলেট বিতরণ করেন এবং মির্জা আব্বাসের জন্য মগ প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন।গণসংযোগকালে সাংবাদিকদের কাছে অধ্যাপক এমাজ উদ্দিন আহমদ নির্বাচনী পরি¯িত নিয়ে নিজের মতামত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ঢাকার ভোটার, সর্বস্তরের জনগণ এবং সারা দেশের মানুষ এই নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। সরকার যদি প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের উপর প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচনের ফলাফলকে নিজের পক্ষে নিতে চায়, তাহলে এই ন্যাক্কারজনক পরিস্থিতি জাতির জন্য হবে খুবই ভয়াবহ।তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশন নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে কাজ করবে। যদি এর ব্যত্যয় ঘটে তবে এর মাশুল সরকারকে অবশ্যই দিতে হবে বলেও মনে করেন তিনি।