দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৩ এপ্রিল: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন,সেনাবাহিনী বিদেশে শান্তি মিশনে গিয়ে সে দেশের জনগণের নিরাপত্তা দিতে পারলে তারা কেন দেশে জনগণের নিরাপত্তা দিতে পারবে না?শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর কুড়িল এলাকায় দল সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে প্রচার চালানোর সময় সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনা মোতায়েন প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া এমন প্রশ্ন তোলেন।
নির্বাচনী পথসভায় একজন পথচারী খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেন,ম্যাডাম,সেনাবাহিনী মোতায়েন ছাড়া সুষ্ঠু ভোট হবে না।এ কথা শুনে খালেদা জিয়া বলেন, ক্যান্টনমেন্টে বসে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা দেওয়া যায় না। পিলখানায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে মারা হয়েছে, সে সময় সেনাবাহিনী কোনো ভূমিকা নিতে পারেনি।বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, আমাদের সেনাবাহিনী বিদেশে শান্তি মিশনে গিয়ে সেদেশের জনগণের নিরাপত্তা দিয়ে সুনাম অর্জন করেছে। এখন তারা কেন দেশে জনগণের নিরাপত্তা দিতে পারবে না? তিনি সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে ভোটকেন্দ্রে সেনা মোতায়েনের দাবি জানান।খালেদা জিয়া বলেন, আমরা পরিবর্তন চাই। সন্ত্রাসমুক্ত ঢাকা চাই। আওয়ামী লীগ জনবিচ্ছিন্ন হয়েছে গেছে। নির্বাচনী প্রচারে যাওয়ার কারণে পর পর তিন দিন আমাদের গাড়িবহরে হামলা করেছে। আমার প্রাণনাশের চেষ্টা করেছে। তারা ভেবেছিল গুলি করে আমার পথরোধ করবে। জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে আমরা সামনে এগিয়ে যাব। ভোটের দিন সবাইকে সকাল সকাল ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, জনগণ সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে, চট্টগ্রামে বিএনপি-সমর্থিত মনজুর আলম, ঢাকায় তাবিথ আউয়াল ও মির্জা আব্বাসকে তারা ভোট দেবে।
একদিন বিরতির পর দলীয় প্রার্থীর পক্ষে আজ প্রচারে বের হন খালেদা জিগা। সাড়ে চারটার দিকে তিনি গুলশানের বাসা থেকে বের হন। তাঁর গাড়িবহর প্রথমে রাজধানীর নতুন বাজার এলাকায় যায়। সেখান থেকে গাড়িবহর প্রগতি সরণি হয়ে যমুনা ফিউচার পার্ক এলাকায় যায়। এরপর কুড়িল এলাকায় গিয়ে পথসভায় বক্তব্য দেন খালেদা জিয়া।গত সোম, মঙ্গল ও বুধবার পর পর তিন দিন রাজধানীর কারওয়ান বাজার, ফকিরাপুল ও বাংলামোটর এলাকায় হামলার মুখে পড়ার পর গতকাল বৃহস্পতিবার আর নির্বাচনী প্রচারে নামেননি খালেদা জিয়া। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তিন দিনের হামলায় খালেদা জিয়ার গাড়িসহ নিরাপত্তাকর্মীদের গাড়িগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাড়ি-সংকটের কারণে খালেদা জিয়া বের হননি। এর আগে রোববার উত্তরায় তিনি নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে সরকার-সমর্থকদের বাধার মুখে পড়েন।
আসন্ন তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করতে সেনা মোতায়েনই চাইলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।খালেদা জিয়া বলেন, এ সরকার আবারও ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন করতে চাইছে। সরকার দলীয় প্রার্থীদের সুবিধা দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন তাদের ইচ্ছে মতো সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত দিয়েও আবার উইথড্রো (প্রত্যাহার) করে নিয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হলে সেনা মোতায়েন করতে হবে।দলের প্রার্থীদের পক্ষে ভোট চেয়ে তিনি বলেন, সরকারদলীয় প্রার্থীদের ভোট দিলে দেশের মতো ঢাকার নিরাপত্তাও ভেঙে পড়বে। দেশের মা- বোনদের ইজ্জতহানি হবে।খালেদা জিয়া সরকারকে জালিম বলে অভিযুক্ত করে বলেন, টিএসসিতে মা-বোনদের ওপর যে ঘটনা ঘটালো তাদের গুণ্ডা বাহিনী, এর এখনও কোনো বিচার হয়নি এখনও। আমি যেন নির্বাচনী প্রচারণায় নামতে না পারি এবং আমাদের প্রার্থী যেন জয়ী হতে না পারে, সেজন্য আমার গাড়িবহরেও হামলা চালিয়েছে সরকারের গুণ্ডা বাহিনী।তিনি বলেন, এই সরকার সন্ত্রাসী, জনসমর্থনহীন। তাদের প্রার্থীদের ভোট দিলে জনগণ নিরাপত্তা পাবে না। পহেলা বৈশাখে সরকারের গুণ্ডাবাহিনী নারীদের ওপর নির্যাতন করেছে। এই সরকারের জনগণের নিরাপত্তা দিতে পারছে না।ঢাকা ও চট্টগ্রামকে নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও বাসযোগ্য করে গড়ে তোলার সুযোগ দিতে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান বিএনপি চেয়ারপারসন।