জয়পুরহাট-চিনিকল-01

দৈনিকবার্তা-জয়পুরহাট, ২৪ এপ্রিল: দেশের অন্যতম চিনি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জয়পুরহাট চিনিকলে উৎপাদিত চিনির দাম চতুর্থ দফা কমানো সত্ত্বেও বিক্রি হচ্ছে না। বর্তমানে প্রায় ৩৬ কোটি টাকা মূল্যের ৯ হাজার ৮শ’ ৫৭ দশমিক ১৫ মেট্রিক টন চিনি অবিক্রিত রয়েছে।চিনিকল সূত্র জানায়, বিগত চারটি মাড়াই মৌসুমের উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ চিনি অবিক্রিত থাকায় সরকার ৫৫ টাকা প্রতি কেজি থেকে চতুর্থ দফা দর কমিয়ে ৩৭ টাকা নির্ধারণ করে। তারপরেও এই চিনি বিক্রি হচ্ছে না। ২০১১-১২ মাড়াই মৌসুমে উৎপাদিত ১২৯৭ দশমিক ১৫ মেট্রিক টন, ২০১২-১৩ মৌসুমে ১৭৭ দশমিক ৯০ মেট্রিক টন, ২০১৩-১৪ মৌসুমে ২৪৪০ দশমিক ১০ মেট্রিক টন ও ২০১৪-১৫ মাড়াই মৌসুমে ৫৯৪২ মেট্রিক টন চিনি এখনো অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।চিনিকল সূত্র জানায়, ২০১১-১২ ও ২০১২-১৩ মৌসুমের উৎপাদিত চিনির রং পরিবর্তন হতে শুরু করেছে। ফলে এই চিনিগুলো দ্রুত বিক্রি করা না গেলে আবহাওয়াগত কারণে গলে গুণগত মান নষ্ট হয়ে যাবে।

জয়পুরহাট চিনিকল শ্রমিক কর্মচারি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম জানান, এই চিনিকলের উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ চিনি নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। তিনি টেন্ডারের মাধ্যমে দ্রুত চিনি বিক্রির ব্যবস্থা করার দাবি জানান।চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক (অর্থ) রাব্বিক হাসান জানান, সরকারের কাছে ঋণের পরিমাণ ২শ’ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এর সুদের বোঝা টানতে হচ্ছে।
চিনিকলের হিসাব বিভাগ সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে অবসরপ্রাপ্ত ৯৩ জন শ্রমিক-কর্মচারী ও ২০১৫ সালের মার্চ পর্যন্ত ৩৫ জন অবসর নেয়া কর্মচারীদের টাকার বদলে চিনি দেয়া হয়েছে। এসব চিনি বাজারে কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন তারা। ফলে লোকসান গুণতে হয়েছে বলে সদ্য অবসরে যাওয়া শ্রমিক মনসুর রহমান, কর্মচারী নুরুল ইসলাম, সাহাদৎ হোসেন ও স্বপন কুমার ভক্ত জানান।

জয়পুরহাট চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস সালাম জানান, উৎপাদিত চিনির রং পরিবর্তন হলেও গুণগত মান ঠিক রয়েছে। তবে চিনিগুলো দ্রুত বিক্রি করা না গেলে সমস্যা হবে।চিনিকলের অপর এক সূত্র জানায়, ২০১১-১২ ও ২০১২-১৩ মৌসুমের উৎপাদিত চিনি আবহাওয়াজনিত কারণে ইতোমধ্যে গলতে শুরু করায় ব্যবসায়ীরা কিনতে অপারগতা প্রকাশ করেছে।