দৈনিকবার্তা-গাজীপুর ২৪ এপ্রিল: গাজীপুরের শ্রীপুরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মা ও মেয়েকে খুন করেছে দুবৃত্তরা। এসময় দুবৃত্তদের ধাড়ালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর জখম হয়েছে ছেলে শাহজাহান মিয়া (২৫)। বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে উপজেলার আতলরা ফাউকাল এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন স্থানীয় মৃত আমির উদ্দিনের স্ত্রী হাছিনা ওরফে হাছুনী বিবি (৫০) ও তার কলেজ পড়–য়া মেয়ে আরিফা খাতুন (১৮)। হাছুনী বিবির আহত বড় ছেলে শাহজাহান মিয়াকে (২৫) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রহলাদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সাইদ জানান, বৃহস্পতিবার রাতের খাবার খেয়ে হাছুনি বিবি, তার মেয়ে আরিফা ও ছেলে শাহজাহান মিয়াকে নিয়ে মাটির ঘড়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত দেড়টার দিকে সশস্ত্র দূর্বৃত্তরা নিহতদের মাটির ঘরের নড়বড়ে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে। এক পর্যায়ে দূর্বৃত্তরা তাদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে মা, ছেলে ও মেয়েকে এলোপাথারি কুপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। এসময় তাদের ডাক-চিৎকারের শুনে পার্শ্ববর্তী ঘর থেকে হাছুনির ছোট ছেলে মুজিবুর রহমান (২১) ও পাড়া প্রতিবেশিরা এগিয়ে আসলে দূর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
পরে এলাকাবাসি তাদের উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক আরিফা খাতুনকে মৃত ঘোষণা করে এবং মা-ছেলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।ঢাকায় নেয়ার পথে হাছুনি বিবি মারা যায়। গুরুতর আহত শাহজাহানকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত আরিফা স্থানীয় ধলাদিয়া কলেজে বিএ ১ম বর্ষের ছাত্রী ছিল। আরিফা টিউশনি করে লেখাপড়ার খরচ যোগাতো এবং তারভাই শাহজাহান মিয়া রাজমিস্ত্রীর সহকারি এবং মুজিবুর রহমান স্থানীয় নেসলে কারখানায় চাকুরি করে সংসার চালায়।
এলাকাবাসি জানায়, আহতদের উদ্ধারের সময় আরিফা বিবস্ত্র অবস্থায় ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, দূর্বৃত্তরা আরিফাকে ধর্ষণ করেছে কিংবা ধর্ষণ চেষ্টার সময় তার ভাই ও মা রক্ষা করতে গেলে তাদের সকলকে কুপিয়েছে।
শ্রীপুর থানার ওসি আব্দুল মোতালেব মিয়া জানান, তদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাদেকুর রহমান জানান, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক মো. নূরুল ইসলাম ভিক্টিমদের পরিবারকে মানবিক সহায়তা হিসেবে (দাফন ও চিকিৎসার জন্য) ৩০হাজার টাকা প্রদান করেছে। চিকিৎসার প্রয়োজনে আরো আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে। একের পর এক এ ধনের খুনের ঘটনা বর্তমান সরকারকে কেউ অস্থিতিশীল করার জন্য করছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে। উল্লেখ্য, এবছরের ১৪ জানুয়ারিতে গাজীপুরের দক্ষিণ সালনা এলাকায় দূর্বৃত্তের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে বাবা সাইফুল ইসলাম (৫৫) তার মেয়ে আঁখি আক্তার (১৫) এর পাঁচদিন পর বাউপাড়া এলাকার ভাবী করমজান (৭৬) ও ননদ রহিমা বেগম (৭৫), গত মার্চ মাসের শেষ দিকে কাপাসিয়ায় এক বিধবা মা ও এক স্বামী পরিত্যাক্তা মেয়ে এবং এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় ভাওয়ারাইদ এলাকায় সেনা সদস্যের মা খোরশেদা বেগম (৮৪) খুন হন। এসব খুনের ঘটনার আসামিদের অধিকাংশই রয়েছে এখনও ধরা ছোঁয়ার বাইরে।