দৈনিকবার্তা-ঢাকা,২১এপ্রিল: চট্টগ্রাম ও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য আগামী ২৬ এপ্রিল থেকে চারদিনের জন্য সেনাবাহিনী নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আর তা ভোটগ্রহণের পরদিন অর্থাৎ আগামী ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত মোতায়েন থাকবে।প্রার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে মঙ্গলবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনরা শাহনেওয়াজ।
তিনি বলেন, ২৮ তারিখ তিন সিটি নির্বাচন। গত ১৯ এপ্রিল আমরা আইনশঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলাম। তারা জানিয়েছে পরিবেশ এখন পর্যন্ত ভালো আছে। তারপরও ভোটারদের কথা চিন্তা করে ভোটের দুইদিন আগে থেকে ভোটরে পরের দিন পর্যন্ত সেনা বাহিনী মোতায়েন থাকবে।সেনা বাহিনী ভোট কেন্দ্রের ভেতরে যেতে পারবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রের ভিতরে কখনও সেনা বাহিনী যাইনি, এবারো যেতে পারবে না। সেনা বাহিনী স্টাইকিং ফোর্স ও রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে কাজ করবে। রিটর্নিং কর্মকর্তারা যখনই চাইবে তখনই তারা কাজ করবে। সেনা বাহিনীর সংখ্যা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংখ্যা কোনো ব্যাপার না। কী পরিমান সেনা মোতায়েন করা হবে এ বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
সেনা বাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়া হবে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার বলেন, সেনা বাহিনী নির্বাচনে স্টাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে। তাদের সঙ্গে আমাদের ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে। এ বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেট ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে ৪ দিনের জন্য সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ্নেওয়াজ ইসি সচিবালয়ে তার নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের বলেন, গত ১৯ এপ্রিল সিটি নির্বাচনের আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কমিশনের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঐ বৈঠকে তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, সিটি নির্বাচনে সার্বিক পরি¯ি’তি এখনো স্বাভাবিক রয়েছে। তারপরও নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কমিশন সেনাবাহিনী মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শাহ্নেওয়াজ বলেন, নির্বাচনে সেনাবাহিনী স্ট্রাইকং সোর্স হিসেবে ২৬ এপ্রিল থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত এ চারদিন নিরাপত্তা বিধানে নিয়োজিত থাকবে।বেগম খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে হামলার অভিযোগ সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রার্থী এবং তার সমর্থকদের নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলা উচিত।কারো প্রচারণায় বাঁধা দেওয়া যেমন আচরণবিধি লংঘন তেমনি বিশাল গাড়ির বহর নিয়ে প্রচারণায় নামাও আচরণবিধি লংঘন। কমিশন আশা করে সংশ্লিষ্ট সকলে এ বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল রাখবেন।এদিকে জাতিসংঘের নির্বাচন সহায়তা বিভাগের পরিচালক ডেইজ জেনিস এর নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সাথে তার কার্যালয়ে বিকেলে সাক্ষাৎ করেন।এছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ-এর নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনারের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। তবে ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে ভোট সামনে রেখে সোমবারও দ্বিধায় ছিল নির্বাচন কমিশন।
এর আগে কখনোই স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করেনি নির্বাচন কমিশন। চার বছর আগে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে সেনা মোতায়েনে সশস্ত্রবাহিনী বিভাগের কাছে চিঠি দিয়েও সাড়া পায়নি এ টি এম শামসুল হুদা নেতৃত্বাধীন তৎকালীন নির্বাচন কমিশন।তখন ইসির পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছিল, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রধানমন্ত্রী দেশের বাইরে থাকায় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সেনা মোতায়েন সম্ভব হয়নি।এবার নির্বাচনের আগে মঙ্গলবার ইন্দোনেশিয়া সফরে গেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি ফিরবেন ভোটের পাঁচ দিন আগে ২৩ এপ্রিল।