DoinikBarta_দৈনিকবার্তা 44633

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২১ এপ্রিল: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শুভ্র জ্যোতি ও সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ কনককে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবনের বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া আরও দুই শিক্ষার্থীকেও বহিস্কার করা হয়েছে। সোমবার রাতে বুয়েটের ডিসেপ্লেনারী কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে মারধরের অভিযোগে তাদের বহিষ্কার করে।এর মধ্যে দু’জনকে আজীবন এবং অপর দু’জনকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।বুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক খালেদা ইকরাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।আজীবন বহিষ্কৃত দুই শিক্ষার্থী হলেন- মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শেষবর্ষের শিক্ষার্থী শুভ্র জ্যোতি টিকাদার এবং মো. আবু সাঈদ কনক।গত ১২ই এপ্রিল সিভিল ইনঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলমের ওপর হামলার করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে নেতৃত্ব দেন বুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

বুয়েটের শিক্ষার্থীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ফেসবুক পেইজ ‘আড়ি পেতে শোনা’য় এক ছাত্র জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় কার্যকর নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দেয়। এতে ওই শিক্ষক মন্তব্য করেন। বর্তমান সরকারের সমলোচনাসহ হিন্দু ধর্মের ধর্মীয় শব্দ ব্যবহার করে অধ্যাপক জাহাঙ্গীর মন্তব্য করেন।যার প্রেক্ষিতে ছাত্রলীগ বিভাগীয় অফিসে গিয়ে তার ওপর হামলা করে এবং ক্যাফেটেরিয়ায় আটকে রাখে। পরে ভিসি তাকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় বুয়েট শিক্ষক সমিতির আহ্বানে ক্যাম্পাসে কর্মবিরতি পালন করছেন শিক্ষকরা।বুয়েট ভিসি অধ্যাপক ড. খালেদা ইকরাম জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করার কারণে তাদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হবে।এ ব্যাপারে বুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. হাসিব চৌধুরী জানান, গত ১৮ ও ১৯ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট কমিটির অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভায় দোষী চার ছাত্রের বিরুদ্ধে বহিষ্কারের এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সোমবার রাতে চিঠির মাধ্যমে বহিষ্কারের বিষয়টি চার ছাত্রকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ কনক বলেন, এটা খুবই অন্যায়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমরা এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করবো। আর প্রশাসনকে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য ৭ দিনের আল্টিমেটাম দেব।এর মধ্যে শুভ্র জ্যোতি টিকাদার বুয়েট ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির সভাপতি এবং আবু সাইদ কনক সাধারণ সম্পাদক। সোমবার (২০ এপ্রিল) রাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে চিঠির মাধ্যমে তাদেরকে বহিষ্কারাদেশ সম্পর্কে জানানো হয়েছে।তবে সাময়িক বহিষ্কৃত অপর দু’জনের নাম এখনো জানা যায়নি।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বুয়েটের জনসংযোগ দফতরের পরিচালক মো. শাহ আলম বলেন, আমার কাছে এখনো অফিসিয়ালি বহিষ্কারাদেশের কোনো তথ্য আসেনি।বহিষ্কার প্রসঙ্গে বুয়েট উপাচার্য বলেন, গত ১৮ ও ১৯ এপ্রিল সিন্ডিকেটের সভায় যে সিদ্ধান্ত হয়েছে সে অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।তিনি বলেন, আমরা ওই শিক্ষকের ফেসবুকে কমেন্টের ব্যাপারটিও মাথায় রেখেছি।ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটিও সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হবে। তবে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।গত ১১ এপ্রিল রাতে যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর নিয়ে ফেসবুকে বিরূপ মন্তব্য করেন বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম।এরই পরিপ্রেক্ষিতে পরদিন তার কাছে এ মন্তব্যের ব্যাখ্যা চাইতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে তার কক্ষে যান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে ক্যাফেটেরিয়ার সামনে আসলে কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে লাঞ্ছিত করে মর্মে অভিযোগ করেন ওই শিক্ষক।সিন্ডিকেট মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই চারজনকে বহিষ্কার করা হল।