দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২১ এপ্রিল: হজ ব্যবস্থাপনায় সমন্বয়হীনতার কারণে এবার ৩০ হাজার মুসল্লি হজে যেতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান। মঙ্গলবার সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন তিনি এ কথা বলেন। বাদ পড়া যাত্রীদের ধৈর্য্য ধরে আগামী বছরের জন্য অপেক্ষা করার অনুরোধ জানিয়েছেন ধর্মমন্ত্রী।সরকারি-বেসরকারি হিসেবে এবার ১ লাখ ১ হাজার ৭শ ৫৮ জন যাত্রী হজে যেতে পারবেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, েেসৗদি সরকারের দেয়া কোটা অনুযায়ি এরইমধ্যে তা পূরণ হয়েছে।তবে সরকারি-বেসরকারি এজেন্সির আশ্বাসে এর বাইরেও নিবন্ধন ছাড়া ৩০ হাজার যাত্রী অগ্রিম টাকা জমা দেয়ায় জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। এসব যাত্রী এবার আর নতুন করে নিবন্ধন করে যেতে পারবেনা বলে মতিউর রহমান।
২০১৬ সালে তাদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে হজে পাঠাতে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।নিবন্ধনের বাইরে থাকা ৩০ হাজার জন এবার হজে যেতে পারবে না বলে জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।মঙ্গলবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশের কোটা অনুযায়ী ১ লাখ ১ হাজার ৭৫৮ জনকে এবার হজ পালনে সৌদি আরব পাঠানো হবে।আগামী অগাস্টে হজ ফ্লাইট শুরুর সিদ্ধান্ত হওয়ার পর হজের সর্বশেষ প্রস্তুতি নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমান হজের নিয়ত করা ৩০ হাজার জনকে ধৈর্য ধরার অনুরোধ করেন।এই ৩০ হাজার জনের মধ্যে প্রায় ১০ হাজার জন টাকা জমা দিয়েছেন। কিন্তু কোটার কারণে তাদের পাঠানো যাচ্ছে না। বাকি ২০ হাজার জনের আবেদন বেসরকারি এজেন্সিগুলো নিয়ে রেখেছিল।ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ফয়জুর রহমান ফারুকী বলেন, এবার ১ লাখ ১১ হাজার ১২ জন হজে যেতে ব্যাংকে টাকা জমা দিয়েছেন। বাংলাদেশের হজযাত্রীর কোটা ১ লাখ ১ হাজার ৭৫৮ জন। অতিরিক্ত ৯ হাজার ২৫৪ জন হজে যেতে পারবেন না।
হজের কোটার চেয়ে আবেদনের সংখ্যা বেশি হওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম বলে দাবি করেন ধর্ম সচিব চৌধুরী মো. বাবুল হাসান।তিনি বলেন, হাবের (হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) নির্বাচন সামনে রেখে এজেন্সি মালিকদের দুটি পক্ষ জটিলতা সৃষ্টি করেছে। শুরুর দিকে এজেন্সিগুলো নিবন্ধন করেনি। সর্বনিম্ন হজযাত্রীর কোটা ৫০ জন হলেও ১৩৯টি এজেন্সি এ কোটা পূরণ করতে পারেনি।
২২ ফেব্র“য়ারি পর্যন্ত ৯১ হাজার ৯০৮ জন হজযাত্রী নিবন্ধন করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। কোটা অনুযায়ী সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০ হাজার এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৯১ হাজার ৭৫৮ জন হজ করতে যেতে পারবেন। কিন্তু সরকারি ব্যবস্থাপনার ৭ হাজার হজযাত্রী বেসরকারি হজযাত্রী দিয়ে পূর্ণ করা হচ্ছে।এক থেকে ৪৯ জন (সর্বনিম্ন কোটা পূরণ করতে না পারা) করে হজযাত্রী সংগ্রহ করা ১৩৯টি এজেন্সির ৩ হাজার ৪৩৮ জন হজযাত্রী রয়েছে বলে জানান সচিব।
নিবন্ধনের সংখ্যার চেয়ে কিভাবে বেশি সংখ্যকের ব্যাংকে জমা হল- সাংবাদিকদের প্রশ্নে মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হাসান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কোনো নিবন্ধন হওয়ার সাথে সাথে হজ নিবন্ধন ওয়েবসাইটে তা তাৎক্ষণিক দেখা যাওয়ার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি, সফটওয়ারটি ডেভেলপ করতে না পারায় এ সমস্যা হয়েছে। ধর্মমন্ত্রী বলেন, সরকারের ব্যবস্থাপনার উন্নতিতে আস্থা সৃষ্টি হওয়ায় এবার হজে যেতে নিয়তকারীর সংখ্যা বেড়েছে।চলতি বছর হজে যাওয়ার নিয়ত করে যেসব মুসলমান ভাই-বোন ও মুরব্বিরা হজে যেতে পারবেন না, তাদের আমি ধৈর্য ধরার অনুরোধ জানাচ্ছি।আগামী বছরের হজে এদের অগ্রাধিকার দিতে এজেন্সি মালিকদের প্রতিও অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে জানান ধর্মমন্ত্রী।চলতি বছর হজযাত্রীদের নিয়ে বাংলাদেশ থেকে প্রথম উড়োজাহাজটি উড়বে আগামী ১৬ অগাস্ট; হজ ফ্লাইট চলবে ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।আর আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ফিরতি ফ্লাইট শুরু হয়ে তা ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে।